আন্তর্জাতিক

ভারতে হিন্দুত্ববাদের পুনর্জাগরণ ঘটছে?

সম্প্রতি ওড়িশা গিয়েছিলেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। সেখানে পৌঁছেই তিনি চলে যান পুরির  বিখ্যাত জগন্নাথ মন্দিরে। পূজা শেষে মমতা বলেন, তিনিই প্রকৃত হিন্দু, আর বিজেপি হিন্দু ধর্মের জন্য ‘লজ্জা-অভিশাপ।’ কারণ তারা ধর্মকে কাজে লাগিয়ে মানুষে মানুষে বিভেদ তৈরি করছে। বিবিসি বাংলা।

Advertisement

বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনটিতে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, হঠাৎ কেন জগন্নাথের মন্দিরে গিয়ে গলা উঁচিয়ে নিজের হিন্দু পরিচয় দিতে উদ্যোগী হলেন মমতা যখন কি না রাজনীতির জন্য মন্দির দর্শনের তেমন কোনো রেকর্ড তার নেই। 

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মত, পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক মানচিত্রে জায়গা করে নিতে উদগ্রীব দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

এর কারণ হিসেবে প্রতিবেদনটিতে বলা হচ্ছে, মূলত উত্তর প্রদেশে অভাবনীয় নির্বাচনী সাফল্যই পশ্চিমবঙ্গের ব্যাপারেও আশাবাদী করছে বিজেপিকে।

Advertisement

তবে কলকাতায় রাজনীতির শিক্ষক এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষক বিমল শঙ্কর বিষয়টিকে একটু ভিন্ন মাত্রায় দেখছেন। বিবিসিকে বাংলাকে তিনি বলেছেন, ‘মমতা ব্যানার্জি এখনও বাংলায় অত্যন্ত জনপ্রিয়। পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে এখনও হিন্দুত্ববাদের প্রভাব সামান্যই। তবে সন্দেহ নেই তার কাঁধে নিঃশ্বাস ফেলার চেষ্টা করছে বিজেপি। কেউ স্বীকার করুক আর না করুক, ভারতে হিন্দুত্ববাদের একটা পুনর্জাগরণ ঘটছে। উত্তর প্রদেশের নির্বাচনে তা স্পষ্ট হয়ে গেছে। সেখানকার মুসলমানদের কাছে ভোট না চেয়েও বিজেপির বিপুল বিজয় হয়েছে।’

এদিকে মমতা ব্যানার্জি গতকাল যখন জগন্নাথের মন্দিরে পূজা দিচ্ছিলেন তখন তার শহর কলকাতায় বিজেপির শিক্ষামন্ত্রী স্মৃতি ইরানি এক সভায় মমতা ব্যানার্জিকে উদ্দেশ করে প্রশ্ন রাখেন- তিন তালাক ইস্যুতে তিনি চুপ কেন?

আগামী সপ্তাহে কলকাতা যাবেন বিজেপির প্রভাবশালী প্রেসিডেন্ট অমিত শাহ। তখনও এ ধরনের কথা শোনা যাবে বলে ইঙ্গিত রয়েছে গণমাধ্যমে।

প্রশ্ন হলো- হিন্দুত্ববাদের রাজনীতি পশ্চিমবঙ্গে কতটা কাজ করবে? 

Advertisement

বিমল শঙ্করের মত, পশ্চিমবঙ্গে হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির প্রভাব এখনও তেমন নেই তবে পশ্চিমবঙ্গের ৭৫ শতাংশ হিন্দু সেই তত্ত্বে আজ না হলেও একসময় প্রভাবিত হতেই পারে।

পূর্ব মেদিনীপুরে লোকসভার একটি উপনির্বাচনে বিজেপির আশাতীত ফল তারই নমুনা হতে পারে।

অধ্যাপক বিমল বলেন, ভারতের হিন্দুরা বিজেপিকেই হিন্দুত্ববাদের প্রতিনিধি হিসেবে স্বীকার করে নিয়েছেন। সেই জায়গা নেয়া অন্য কোনো দলের জন্য তেমন সুবিধা হবে না।

এনএফ/এমএস