দেশজুড়ে

হাকালুকি হাওর মাছ আর ধান পচে একাকার

মৌলভীবাজারের হাকালুকি হাওরে পানিতে তলিয়ে যাওয়া ধান পচার ফলে কালচে আর ভারি হয়েছে পানি। এতে ব্যাপক হারে মরে ভেসে উঠছে মাছ। ধান আর মাছ পচা গন্ধে ভারি হয়ে উঠেছে বাতাস। এমন পরিস্থিতিতে হাওর পাড়ের মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।

Advertisement

দক্ষিণ হাকালুকি মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি সদস্যরা জানান, চৈত্র মাসের অকাল বন্যায় ২৫ সহস্রাধিক হেক্টর জমির বোরো ধানের পাশাপাশি হাকালুকি হাওরের ছোট বড় ২৩৭টি বিলও তলিয়ে যায়। তলিয়ে যাওয়া ধান পচন ধরে। এতে পানি দূষিত হয়ে ব্যাপক হারে মাছ মরে ভেসে উঠে।

হাওরের চকিয়া বিলে তিন বছরের জন্য ইজারা নেয়ায় ইজারাদার সেখানে ১৫ লাখ টাকার পোনা মাছ অবমুক্ত করেন। সমিতির পক্ষ থেকে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করা হয়। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদ সরেজমিন হাকালুকি হাওরের চকিয়া বিল পরিদর্শন করেন।

হাকালুকি হাওর তীরের ভাটেরা ইউনিয়নের কবির আহমদ, নোমন আহমদসহ বেড়কুড়ি ও দক্ষিণভাগ এলাকার মানুষ জানান, হাওর থেকে যখন বাতাস আসে তখন দুর্গন্ধে বমি আসে। মাছ আর ধান পচে একাকার। দুর্গন্ধে এলাকায় বাস করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

Advertisement

হাকালুকি হাওরে প্রচুর মরা মাছ ভেসে থাকতে দেখা যায়। ভেসে উঠা মরা মাছের মধ্যে ছিল পুঁটি, টেংরা, ভেদা, বাইলা, বোয়াল মাছ, বোয়াল মাছের পোনা, চান্দা, পাবদা এবং রুই জাতীয় মাছের ছোট পোনা।

কুলাউড়া উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্র জানায়, মাছ মরার কারণ হলো অকাল বন্যায় তলিয়ে যাওয়া আধাপাকা ধান ও ধান গাছ পচে পানির গুণাগুণ নষ্ট করেছে। ধান গাছে এবং ঘাস নিধনের বিষের দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব। হঠাৎ পানির পিএইচ কমে যাওয়া।

বর্তমান পিএইচ ৫ দশমিক ৮। অ্যামোনিয়ার পরিমাণ বৃদ্ধি এবং অক্সিজেন হ্রাস (৫পিপিএম)। এ অবস্থা করণীয় হলো- হাওরে সকল ধরনের ফিশিং বন্ধ করা (জেলেদের প্রণোদনা দিয়ে হলেও), পানির ট্রিটমেন্ট করা (যদিও তা অনেক ব্যয়বহুল ও কষ্টসাধ্য)।

কুলাউড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদ জানান, এটা এক ধরনের দুর্যোগ। হাকালুকি হাওরের মাছ মরা বন্ধে জন্য মাইকিং করা হচ্ছে। জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ওষুধ প্রয়োগের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

Advertisement

হাওর সংলগ্ন এলাকায় জনসচেতনতা ও মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়েছে। এ সমস্যা সমাধানে স্থানীয় লোকজনের সহায়তা একান্ত প্রয়োজন।

এআরএ/জেআইএম