ফিচার

জনপ্রশাসন : প্রফেসর মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান

জনপ্রশাসন ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ প্রফেসর মোহাম্মদ আসাদুজ্জামানকে স্বাধীনতা পুরস্কার ২০১৭ প্রদান করা হয়। তাঁকে নিয়ে আজকের আয়োজন-

Advertisement

মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান ১৯৩৭ সালের ১ জানুয়ারি মাদারীপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ইউনাইটেড ইসলামিয়া হাইস্কুল মাদারীপুর থেকে মাধ্যমিক, সরকারি নাজিমউদ্দিন কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।

১৯৫৮ সালে আসাদুজ্জামানের কর্মজীবন শুরু হয় ময়মনসিংহের নাসিরাবাদ কলেজে অধ্যাপনার মধ্য দিয়ে। তিনি দীর্ঘদিন বরিশাল বিএম কলেজে অধ্যাপনা করেন। ১৯৭৩ সালে রংপুর কারমাইকেল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে বাংলা বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি মাদারীপুর সরকারি নাজিমউদ্দিন কলেজ, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ, নরসিংদী সরকারি কলেজ এবং টাঙ্গাইলের করটিয়া সাদৎ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে সুদীর্ঘ সময় দায়িত্ব পালন করেন। জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমির (নায়েম) পরিচালক হিসেবে কর্মরত থেকে ১৯৯৩ সালে অবসর গ্রহণ করেন।

প্রফেসর মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান একজন সফল শিক্ষাবিদ, জনপ্রিয় প্রাবন্ধিক, লেখক এবং অনুবাদক। তাঁর দু’টি গ্রন্থ ‘প্রশাসন কাঠামো ও সিস্টেমে রূপান্তর : প্রেক্ষিত বাংলাদেশ’, ‘ঔপনিবেশিক প্রশাসন কাঠামো : প্রেক্ষিত বাংলাদেশ’ এবং কিছুসংখ্যক প্রবন্ধ দেশে প্রশাসনিক সংস্কারের ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রেখেছে। বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত তাঁর অনূদিত গ্রন্থ ‘কোম্পানি আমলের ঢাকা’ এবং ‘বাংলার সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ইতিহাস (প্রথম ও দ্বিতীয় খণ্ড)’ পাঠকমহলে বিশেষভাবে সমাদৃত হয়। প্রশাসনিক সংস্কার বিষয়ে তাঁর বেশ কয়েকটি প্রস্তাব বিভিন্ন সময়ে সরকার কর্তৃক অনেকাংশে গৃহীত হয়েছে। তারমধ্যে নাগরিক কার্ড প্রবর্তন, ইউনিয়ন পরিষদে তথ্য-সেবাকেন্দ্র স্থাপন এবং উপজেলাভিত্তিক ট্রেনিং ইনস্টিটিউট স্থাপনের প্রস্তাব বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

Advertisement

আসাদুজ্জামান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি ছিলেন অত্যন্ত শ্রদ্ধাশীল। জাতির পিতার স্মৃতির ওপর তাঁর লেখা নিবন্ধ ‘বঙ্গবন্ধুকে ঘিরে কিছু স্মৃতি কিছু কথা’ সব মহলে প্রশংসিত হয়। দেশ ও মানুষের কল্যাণে তিনি নিজেকে সবসময় ব্যাপৃত রেখেছেন। শিক্ষা বিস্তারে প্রফেসর আসাদুজ্জামান নিজ উদ্যোগে মাদারীপুরে এইচএন গার্লস স্কুল এবং সাহেবরামপুর কবি নজরুল ইসলাম ডিগ্রি কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন।

শিক্ষা ও জনগণের ক্ষমতায়ন বিষয়ে সৃজনশীল লেখার জন্য প্রফেসর আসাদুজ্জামান ২০০৮ সালে ‘শেরে বাংলা জাতীয় পুরস্কার’-এ ভূষিত হন।

এসইউ/পিআর

Advertisement