দেশজুড়ে

ডিজিটাল যুগেও পাঠশালার পাঠদান!

পাঠশালার পাঠদানের কথা আমরা প্রায় ভুলতেই বসেছি। বর্তমান ডিজিটাল যুগে ডিজিটাল পদ্ধতিতে পাঠদান করা হচ্ছে। পাঠশালার পাঠদান চোখে না পড়লেও বরিশালের আগৈলঝাড়ার প্রত্যন্ত অঞ্চলে একটি পাঠশালায় পাঠদান করা হচ্ছে। আর এ পাঠশালায় পাঠদান করাচ্ছেন রমণীকান্ত বেপারী (৫৫)।রমণীকান্ত উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের রাংতা গ্রামের রাখাল রায়ের ছেলে। সংসারে অভাব অনটন থাকলেও সমাজের অসহায় শিশুদের শিক্ষাদানের লক্ষ্যে  ৮ বছর আগে প্রতিষ্ঠা করেন একটি পাঠশালা। আর এ পাঠশালাতেই গত ৮ বছর ধরে শিক্ষাদান করে আসছেন তিনি। রমণীকান্ত উচ্চশিক্ষিত না হয়েও সমাজের দরিদ্র ও অসহায় শিশুদের মাঝে জ্ঞানের আলো ছড়াচ্ছেন। পাঠশালায় বর্তমান প্রজন্মের ৩ থেকে ৭ বছর বয়সের ৪৫ জন শিশুকে পাঠদান দেয়া হচ্ছে। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে ১টা পর্যন্ত এখানে হাতেখড়ি থেকে প্রথম শ্রেণী পর্যন্ত শিশুদের পড়ানো হয়। পাঠশালা প্রতিষ্ঠার পর থেকে এলাকার শিশুদের শিক্ষাদানে নিরলস পরিশ্রমের ফসল হিসেবে পাঠশালাটি আজ এলাকাবাসীর স্বপ্ন পূরণে সার্থক হয়েছে। এলাকার দরিদ্র, অসহায়, নিরক্ষর, অর্ধশিক্ষিত অভিভাবকদের অনুরোধে তাদের ছেলে- মেয়ে যাদের স্কুলে ভর্তির বয়স এখনও হয়ে ওঠেনি তাদেরই রমণীকান্তর পাঠশালায় লেখাপড়া করানো হয়। পাঠশালাটিতে শিশুদের বছরে দু’বার পরীক্ষা নেয়া হয়। শিক্ষক রমণীকান্ত বেপারী জানান, তিনি স্বল্পশিক্ষিত হলেও শিক্ষার প্রসার বিস্তারে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।ক্লাশ শুরুর পূর্বে জাতীয় সংগীতও পরিবেশন করা হয় এই পাঠশালায়। শিশুদের অভিভাবকরা ন্যুনতম সম্মানী হিসেবে তাকে সামান্য কিছু টাকা দেন। এলাকার ছাত্র-ছাত্রী ও তার অভিভাবকদের কাছে রমণীকান্ত বেপারী একটি প্রিয় মুখ। পাঠশালার মাধ্যমে তার পরিচিতি রাংতা গ্রামসহ আশপাশের দু’চার গ্রামের মানুষের কাছে নিবেদিত মুখ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। রমণীকান্ত বেপারীর প্রত্যাশা পাঠশালায় শিক্ষাদানের মাধ্যমে মৃত্যুর পরেও যেন মানুষ তাকে মনে রাখে।এসএস/এমএস

Advertisement