ভালো কাজের স্বীকৃতি হিসেবে সরকারি কর্মকর্তাদের ‘জনপ্রশাসন পদক ২০১৫’ শীর্ষক স্বর্ণপদক দেয়া হচ্ছে। এ লক্ষ্যে পদক প্রাপ্তদের নাম চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে প্রাথমিকভাবে মনোনীতদের তালিকা ৩০ এপ্রিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। এর আগে স্ব স্ব মন্ত্রণালয় তাদের তালিকা চূড়ান্ত করে ৩০ এপ্রিলের মধ্যে জাতীয় কমিটিতে উপস্থাপনের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে।কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে বিভিন্ন বিভাগ ও সংস্থাগুলোর তালিকা নিয়ে ২৯ এপ্রিল বুধবার দুপুর ২টায় একটি নীতিগত সভায় বসছে মন্ত্রণালয়টি। কৃষি সচিব মো. ইউনুসুর রহমান সভায় সভাপতিত্ব করবেন। কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. সারওয়ার মোর্শেদ চৌধুরী জানান, এই সভায় জনপ্রশাসন পদকের কারিগরি ও গবেষণার (বিজ্ঞান ভিত্তিক) ক্ষেত্রে ব্যক্তি শ্রেণিতে মনোনয়নের বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে। জানা গেছে, জাতীয় ও জেলা পর্যায়ে দুটি ক্ষেত্রে (সাধারণ ও কারিগরি) শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি, শ্রেষ্ঠ দল ও শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠানের শ্রেণিতে ১টি করে মোট ১২টি পুরস্কার দেওয়া হবে। এর আগে গত বছর সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পুরস্কার দিয়ে ভালো কাজে আরও উৎসাহিত করতে ‘জনপ্রশাসন পদক নীতিমালা ২০১৫’ চূড়ান্ত করা হয়।এ নীতিমালার আলোকে আগামী ২৩ জুন পুরস্কার ঘোষণা করা হবে। জনপ্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সৃজনশীল কার্যক্রমে উৎসাহিত করে কর্মস্পৃহা সৃষ্টি ও সরকারের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের লক্ষ্য আরও গতিশীল করতে জনপ্রশাসন পদক চালু করা হয়েছে। গত ২৮ জানুয়ারি পদক নীতিমালা চূড়ান্ত করে আদেশ জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। চলতি বছর পুরস্কার প্রদানের কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে সকল মন্ত্রণালয়ের সচিব, সিনিয়র সচিব ও ভারপ্রাপ্ত সচিবের কাছে ১২ ফেব্রুয়ারি একটি চিঠি পাঠানো হয়। এ ছাড়া একই দিন জেলা প্রশাসক ও জেলা বাছাই কমিটির সভাপতিদের কাছেও এ চিঠি পাঠানো হয়। পুরস্কার প্রদানের লক্ষ্যে ১৫ মার্চের মধ্যে মনোনয়ন আহ্বান করা হয়। জেলা বা অধিদফতর পর্যায়ের কমিটিতে মনোনয়ন পাঠানো হয় ২৫ মার্চের মধ্যে। এরপর ৫ এপ্রিল জেলা বা অধিদফতর পর্যায়ে মনোনয়ন চূড়ান্ত করা হয়। জেলা বা অধিদফতর থেকে ১২ এপ্রিলের মধ্যে মন্ত্রণালয়ে মনোনয়ন পাঠানো হয়। বর্তমানে মন্ত্রণালয় পর্যায়ে মনোনয়ন চূড়ান্তকরণের কাজ চলছে। স্ব স্ব মন্ত্রণালয় তাদের তালিকা চূড়ান্ত করে ৩০ এপ্রিলের মধ্যে জাতীয় কমিটিতে উপস্থাপনের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পাঠাবে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ১০ মের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে প্রাথমিকভাবে চূড়ান্ত করা তালিকা পাঠাবে। এরপর জাতীয় কমিটি ২১ মের মধ্যে মনোনয়ন চূড়ান্ত করবে। ৩০ মের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর মনোনয়ন অনুমোদনের পর ২৩ জুন তা ঘোষণা করা হবে।পদক নীতিমালা অনুযায়ী জনসেবায় তিন শ্রেণিতে এ পদক দেওয়া হবে- ব্যক্তিগত, দলগত ও প্রাতিষ্ঠানিক। ব্যক্তিগত পর্যায়ে পদক দেওয়া হবে একক উদ্যোগে জনকল্যাণকর কাজে উল্লেখযোগ্য অর্জনের জন্য। দলগত পর্যায়ে পদক দেওয়া হবে পদমর্যাদা নির্বিশেষে একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীর সমন্বিত ও দলীয় প্রচেষ্টায় জনকল্যাণমূলক কোনো গুরুত্বপূর্ণ অর্জনের জন্য।এছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে জনপ্রশাসনের কোনো সংস্থা, ব্যুরো, দফতর, পরিদফতর, অধিদফতর, প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীর জনকল্যাণমূলক কোনো গুরুত্বপূর্ণ অর্জনের জন্য এ পদক দেওয়া হবে। পুরস্কারের ক্ষেত্র হবে সাধারণ ও কারিগরি বিষয়ক। পদক নীতিমালায় পুরস্কারের প্রকৃতি ও পরিধির ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, জাতীয় পর্যায়ে সাধারণ ও কারিগরি দু`টি ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি, শ্রেষ্ঠ দল ও শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠানের শ্রেণিতে ১টি করে মোট ৬টি পুরস্কার দেওয়া হবে। একইভাবে জেলা পর্যায়েও ৬টি পুরস্কার দেওয়া হবে। জাতীয় পর্যায়ে পদকপ্রাপ্তরা নামের সঙ্গে পিএএ (পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অ্যাওয়ার্ড) লিখতে পারবেন।এছাড়া পুরস্কার হিসেবে ১৮ ক্যারেট মানের এক ভরি ওজনের স্বর্ণপদক, সার্টিফিকেট এবং নগদ অর্থ দেওয়া হবে। ব্যক্তি পর্যায়ের ক্ষেত্রে স্বর্ণপদক, সার্টিফিকেট এবং জনপ্রতি এক লাখ টাকা দেওয়া হবে। দলগত অবদানের জন্য স্বর্ণপদক, সার্টিফিকেট ও নগদ সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকা দেওয়া হবে। প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে শুধু পদক ও সার্টিফিকেট দেওয়া হবে। জেলা পর্যায়ের পুরস্কারের ক্ষেত্রে ব্যক্তি পর্যায়ে সার্টিফিকেট ও ৫০ হাজার টাকা, দলগতভাবে সার্টিফিকেট ও সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা দেওয়া হবে। নীতিমালা অনুযায়ী মাঠ পর্যায়ে জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে একটি বাছাই কমিটি রয়েছে। অধিদফতর বা সংস্থা পর্যায়ে একটি বাছাই কমিটি থাকবে। মন্ত্রণালয় ও বিভাগ পর্যায়েও থাকবে বাছাই কমিটি। চূড়ান্ত পর্যায়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে রয়েছে একটি জাতীয় কমিটি।বিএ/আরআইপি
Advertisement