প্রবাস

কুয়েতে বাংলাদেশি শ্রমিকদের হয়রানির অভিযোগ

কুয়েতে নানা ধরনের অনিয়মের শিকার হচ্ছেন বাংলাদেশি শ্রমিকরা। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ৭-৮ লাখ টাকায় ভিসা বিক্রি করে নতুন শ্রমিক নিয়োগ দিয়ে পুরাতনদের ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাচ্ছে। এছাড়া দেশটির প্রচলিত শ্রম আইনের বাইরে নিজস্ব নতুন নতুন আইন তৈরি করে তা প্রয়োগ করা হচ্ছে।

Advertisement

গত রোববার কুয়েতের জিলিব আল সুয়েখের হাসাবিয়া এলাকায় ‘ওয়েল আল নসীব’ ও ‘ফজর আল খালিজ’ নামে দুটি কোম্পানির প্রায় ১৫ হাজার শ্রমিক বিভিন্ন হয়রানির শিকার হয়ে কর্মবিরতি ঘোষণা করেন।

শ্রমিকদের অভিযোগ, কোম্পানি পরিচালনাকারীরা বাংলাদেশি দালালদের সহায়তায় ৭-৮ লাখ টাকায় নতুন ভিসা বিক্রি করে। অথচ পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, নেপাল, শ্রীলংকার শ্রমিকরা কুয়েতে আসে মাত্র এক থেকে দেড় লাখ টাকা খরচ করে। কোম্পানিতে কর্তব্যরত পুরাতন শ্রমিকদের ওপর নতুন নতুন আইন জারি করে তা পালনে বাধ্য করা হচ্ছে। যেগুলো দেশটির শ্রম আইনে কোথাও উল্লেখ নেই।

তারা জানান, বাংলাদেশি শ্রমিকরা ৭-৮ লাখ টাকা দিয়ে ভিসা কিনে দৈনিক ৮ ঘণ্টা কাজ করে মাসে পান মাত্র ৬০ দিনার (বাংলাদেশি ১৫-১৬ হাজার টাকা)। অথচ প্রতি বছর আকামা নবায়ন করতেই লাগে ২৫০ দিনার।

Advertisement

তারা আরও অভিযোগ করেন, জরুরি প্রয়োজনে দেশে আসার জন্য ছুটি চাইলে দিতে হয় ২০০ দিনার। কর্মস্থলে ফেরার পর সেই টাকা কাউকে ফেরত দেয়া হয় আবার কাউকে দেয়া হয় না। এছাড়া ফিরে আসার পর টাকা দিলে কাজ মিলে, না দিলে রুমে বসে থাকতে হয়।

শ্রমিকরা আরও জানান, প্রতি দুই বছর পর তাদের দুই মাসের ছুটি দেয়া হয়। এর অতিরিক্ত ছুটি কাটালে ৪০০ দিনার জরিমানা গুণতে হয়। বিভিন্ন ছুটির কারণে কুয়েতে স্কুল, মাদরাসাগুলো কয়েক মাস বন্ধ থাকে। তখন বাংলাদেশি শ্রমিকদের বেতন দেয় না কোম্পানি দুটি। কিন্তু উজারা (বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান) ১২ মাসের বেতন দেয় কোম্পানিগুলোকে।

বাংলাদেশিরা জানান, কুয়েতের শ্রম আইন অনুযায়ী নিয়োগদাতা কোম্পানি বিদেশিদের থাকার ব্যবস্থা করবে। কিন্তু থাকার জন্য কোম্পানিকে টাকা দিতে হয়। এত কম বেতনে চাকরি করে তাদের (কুয়েতিদের) টাকা দিয়ে অবশিষ্ট আর কিছুই থাকে না।

‘বাকি টাকা দিয়ে নিজে খাব, নাকি পরিবারের জন্য দেশে টাকা পাঠাব’- প্রশ্ন রাখেন বাংলাদেশি শ্রমিকরা।

Advertisement

এ বিষয়ে কুয়েত সিটিতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রম কাউন্সিলর আব্দুল লতিফ খাঁন জানান, ওয়েল আল নসীব ও ফজর আল খালিজে শ্রমিকদের কর্মবিরতির খবর শুনেছি। আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। শ্রমিকদের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে।

এমএমজেড/এমএআর/আরআইপি