রাজধানীর মগবাজার হয়ে মিরপুরগামী স্বাধীন পরিবহন রামপুরায় থামতেই গাড়িতে উঠলেন চেকার। তিন-চারজন যাত্রী তখনও দাঁড়ানো অবস্থায় ছিল। তিনি যাত্রীদের মাথা গুণলেন। সংখ্যা লিখলেন। যাত্রায় ২-১ মিনিট বিলম্ব হচ্ছিল। আর এতেই চেঁচিয়ে উঠলেন এক যাত্রী।
Advertisement
একই অবস্থা চোখে পড়ল সদরঘাট থেকে গাজীপুরগামী সুপ্রভাত বাসে। ৪০ জন যাত্রী বসে আর দাঁড়িয়ে অন্তত ১৫ জন। যথারীতি কন্ডাক্টর ভাড়া চাইছেন ১০ টাকা করে।
রোববার সকাল থেকে এমন দৃশ্য দেখা গেছে রাজধানীর বিভিন্ন রুটের বাসে। বাসগুলো সব সকাল থেকে লোকাল হিসেবে চলাচল করলেও ভাড়া আদায় করা হচ্ছে সিটিং সার্ভিসের মতোই। এ নিয়ে বাগবিতণ্ডা বাধছে যাত্রীর সঙ্গে চালক ও হেলপারের।
এর আগে গত ৪ এপ্রিল গণপরিবহনের ‘নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলা’ ঠেকাতে রাজধানীতে সিটিং সার্ভিস বন্ধের ঘোষণা দেন সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েতুল্লাহ। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৫ এপ্রিল থেকে রাজধানীতে সিটিং সার্ভিস, গেটলক, বিরতিহীন কিংবা স্পেশাল সার্ভিস নামে কোনো গণপরিবহন চলছে না। তবে ভাড়া নেয়া হচ্ছে সিটিং সার্ভিসের মতোই। সব বাসে বিআরটিএ নির্ধারিত তালিকা অনুযায়ী ভাড়া আদায়ের কথা থাকলেও তাও মানা হচ্ছে না।
Advertisement
শেখ নাজমুল আলম নামে এক কাপড় ব্যবসায়ী জাগো নিউজকে বলেন, এ সিদ্ধান্ত আমাদের জন্য আরও খারাপ হলো। আগে বেশি টাকা দিয়ে দ্রুত গন্তব্যে যেতে পারতাম। আর এখন বেশি টাকা দিয়েও গন্তব্যে পৌঁছাতে দেরি হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, আগে সকাল বেলা সদরঘাট থেকে খিলক্ষেত যেতে দেড় ঘণ্টা সময় লাগত। আজ আড়াই ঘণ্টা লেগেছে। গেট পর্যন্ত যাত্রী না ভরলে বাস দাঁড়িয়ে থাকছে। জবাবদিহি করার কেউ নেই।
সাইফুল ইসলাম নামে আরেক যাত্রী বলেন, সিটিং বন্ধ হলেও নৈরাজ্য বন্ধ হয়নি। মালিক সমিতির লোকজন লোক দেখানো অভিযান করলেও বাস্তবতা অনেকটাই ভিন্ন। সিটিং হোক আর লোকাল হোক আমরা ভালো সার্ভিস চাই।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েতুল্লাহ জাগো নিউজকে বলেন, সিটিং সার্ভিস বন্ধ হয়েছে। তবে ভাড়া কমানোর কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। ভাড়ার চার্ট অনুযায়ী ভাড়া নেয়া হবে। আমরা মনিটরিং শুরু করেছি। কেউ এ সিদ্ধান্ত না মানলে পদক্ষেপ নেয়া হবে।
Advertisement
এ বিষয়ে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, সরকারি চার্ট না মেনে সিটিংয়ের ভাড়া আদায়ের বিষয়ে সরকার এবং মালিকপক্ষের পদক্ষেপ নেয়া জরুরি।
এআর/এসআর/জেএইচ/পিআর