দরপতনের বৃত্তে আটকা পড়েছে দেশের শেয়ারবাজার। গত ৫ এপ্রিল (বুধবার) থেকে দরপতনের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রয়েছে চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার (১৬ এপ্রিল) পর্যন্তও। এ নিয়ে দেশের উভয় শেয়ারবাজার ডিএসই ও সিএসইতে টানা আট কার্যদিবস দরপতন হলো।
Advertisement
এদিকে শেয়ারবাজারে টানা এ দরপতন ঘটলেও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এতে ভয়ের কিছু নেই। প্রায় তিন মাস টানা মূল্য সূচক বাড়ার কারণে এ দরপতন হচ্ছে। শিগগিরই দরপতনের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসবে শেয়ারবাজার।
বাজার পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, রোববার ডিএসইতে লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের মূল্য কমেছে। লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ১৯৬টির বা ৬০ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম আগের দিনের তুলনায় কমেছে।
অন্যদিকে দাম বেড়েছে ৯০টির বা ২৮ শতাংশের এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৪০টির বা ১২ শতাংশের দাম।
Advertisement
এছাড়া অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম কমায় ডিএসইতে মূল্য সূচকের বড় পতন হয়েছে। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৫৩ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৫৯২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৭২৪ কোটি ৪২ লাখ টাকা।
তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, চলতি বছরের শুরু থেকেই শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখায় দেয়। জানুয়ারি মাসে শুরু হওয়া ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা মার্চ মাসেও অব্যাহত থাকে। ফলে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স অনেকটা ধারাবাহিকভাবে বেড়ে মার্চ শেষে অর্থাৎ তিন মাসে প্রায় ৬৮৩ পয়েন্ট বেড়ে যায়। তবে চলতি মাসে আবার টানা দরপতন দেখা দেয়ায় শেষ আট কার্যদিবসে ডিএসইএক্স সূচকটির ১৮৫ পয়েন্ট পতন হয়েছে।
টানা দরপতনের বিষয়টি নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) খতিয়ে দেখা উচিত বলে মনে করছেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও অর্থনীতিবিদ এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম। তার মতে, এমন দরপতনকে স্বাভাবিক বলা যায় না।
তবে বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী টানা এ দরপতনকে স্বাভাবিক মনে করছেন। তার মতে, টানা তিন মাস দাম বাড়ার কারণে এখন টানা দরপতন দেখা দিয়েছে। কিছু দিনের মধ্যেই এ অবস্থার উন্নতি হবে।
Advertisement
ডিএসইর পরিচালক রকিবুর রহমানের মতে, শেয়ারবাজারে যে টানা দরপতন দেখা দিয়েছে তা অস্বাভাবিক। বর্তমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে এমন টানা দরপতনের কোনো যুক্তিসঙ্গত কারণ নেই।
রোববার টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে লংকাবাংলা ফিন্যান্সের শেয়ার। এদিন কোম্পানির ৪৬ কোটি ৬৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেনে দ্বিতীয় স্থানে থাকা সিটি ব্যাংকের ৩০ কোটি ৮৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ২৪ কোটি ৩৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ইভিন্স টেক্সটাইল।
দেশের অন্য শেয়ারবাজার সিএসইতে সিএসসিএক্স সূচক ৯২ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৫০১ পয়েন্টে। বাজারটিতে ৪৭ কোটি ২০ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। লেনদেন হওয়া ২৩৭টি ইস্যুর মধ্যে দাম বেড়েছে ৬৮টির, কমেছে ১৪০টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৯টির দাম।
এমএএস/আরএস/আরআইপি