বিশেষ প্রতিবেদন

আবার চালু হবে সিটিং সার্ভিস!

‘কয়টা দিন অপেক্ষা করেন, আবার চালু হবে এই সিটিং সার্ভিস।’ অনেকটা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে কথা বলছিলেন উত্তরা থেকে গুলিস্তানগামী ১৩২ নম্বর বাসের একজন কন্ডাক্টর।

Advertisement

কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘রাস্তা দেখে আন্দাজ করতে পারছেন না? গাড়ি কম নামাইছে মালিকরা। বিকেলে অফিস ছুটির পরে বুঝবেন অবস্থা। বাড়ি ফেরার গাড়ি পাবেন না। নারী যাত্রীদের কষ্ট হবে সবচেয়ে বেশি। এসব দেখে আবারও সিটিং সার্ভিস চালু করতে বাধ্য হবে সরকার।’

কিন্তু সিটিং বন্ধে মালিকরাই তো রাজি হয়েছে- তাহলে কেন গাড়ি কম নামালেন তারা? এক যাত্রীর এমন প্রশ্নের জবাবে আরও উৎসাহী কন্ডাক্টর বলেন, ‘রাজি কি এমনি হয়, সরকারে করাইছে। আবার মালিকরাই কায়দা করে সরকারকে সিটিংয়ে রাজি করাবে।’

এসব কথা বলার ফাঁকে যাত্রীদের সঙ্গে ভাড়া নিয়েও ঝামেলা করছিলেন তিনি। যাত্রীদের অভিযোগ, বাধ্য হয়ে সিটিং বন্ধ করলেও ইচ্ছেমতো ভাড়া আদায় করা হচ্ছে বাসগুলোতে।

Advertisement

উত্তরার আজমপুর থেকে শাহবাগ যেতে আনোয়ারুল হক নামে এক যাত্রীর কাছে ভাড়া দাবি করা হয় ২৫ টাকা। অথচ লোকালে এই ভাড়া হওয়ার কথা ১৮ টাকা, দাবি আনোয়ারুলের। এ নিয়ে বাসের মধ্যেই তুমুল ঝগড়া হয় তাদের।

শুধু আনোয়ারুল নন, বাসটির প্রায় সব যাত্রীর সঙ্গেই ভাড়া নিয়ে তর্কাতর্কি করেন ওই কন্ডাক্টর।

এদিকে সিটিং হিসেবে চলাকালে বাসগুলোর জানালায় রোদ থেকে বাঁচতে পর্দা এমনকি ভেতরে ফ্যানের ব্যবস্থা থাকলেও লোকাল হিসেবে চালানোর সময় সেগুলোর ব্যবহার করা হচ্ছে না। যাত্রীদের অনুরোধ সত্ত্বেও ফ্যান চালাতে রাজি নন চালকরা।

শাহবাগে দাঁড়িয়ে এই অভিযোগ করেন কল্যাণপুর থেকে আসা নুসরাত হায়দার। তিনি বলেন, ‘ফ্যান ছাড়তে বলা হলে চালকের জবাব ছিল- লোকাল বাসে আবার ফ্যান কিসের। কাল থেকে সব ফ্যান নষ্ট হয়ে গেছে।’

Advertisement

এমন অবস্থায় বাসের যাত্রীরা সিটিংয়ের পক্ষে-বিপক্ষে মতামত দিতে থাকেন। অনেকের মতে, ‘সিটিং সার্ভিস ভালো ছিল। কারণ, তখন দ্রুততার সঙ্গে গন্তব্যে পৌঁছানোসহ ধাক্কাধাক্কি করে বাসে ওঠা লাগতো না।’

এ বিষয়ে সুমাইয়া ইসলাম নামে এক যাত্রী জাগো নিউজকে বলেন, সিটিং চলাকালে বাসে উঠতে কষ্ট হতো ঠিকই, কিন্তু একবার উঠতে পারলেই সিট পাওয়া নিশ্চিত ছিল। তাছাড়া ধাক্কাও খাওয়া লাগতো না। সিটিং বন্ধ না করে আরও বেশি বাস চালু করলেই ভালো হতো। সরকার প্রাইভেটকার বাড়াতে দিলেও বাস বাড়াচ্ছে না। এটা দুঃখজনক।

তবে তার মতের বিরোধিতা করে অর্ণব নামে এক যাত্রী বলেন, ‘ঢাকা শহরে মানুষ ও বাসের সংখ্যা বিবেচনা করলে কোনোভাবেই সিটিং সার্ভিসের পক্ষে মত দেয়া যায় না। লোকাল বাসেও শান্তিমত চলাফেরা করা যায়, যদি চালকরা একটু আন্তরিক হয়।’

জেপি/জেডএ/বিএ/জেআইএম