বিশেষ প্রতিবেদন

নিয়ম না মেনে বেশি ভাড়া নিচ্ছে ‘সিটিং’ বাসগুলো

রাজধানীতে গণপরিবহনে ‘সিটিং সার্ভিস’ রোববার থেকে বন্ধ ঘোষণা করা হলেও তা মানছেন না অধিকাংশ পরিবহন শ্রমিক। আগে সিটিং সার্ভিস হিসেবে চলা বাসগুলো নতুন নিয়মের তোয়াক্কা না করে আগের মতোই ভাড়া আদায় করছে যাত্রীদের কাছ থেকে।

Advertisement

রোববার সকাল ৮টা থেকে বেলা পৌনে ১১টা পর্যন্ত সাভার থেকে ছেড়ে আসা এবং চিড়িয়াখানা ও মিরপুর-১২ থেকে ছেড়ে আসা বিভিন্ন বাসে সরেজমিন ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

আগের মতো সিটিং সার্ভিস হিসেবে ভাড়া আদায় নিয়ে বাসে বাসে যাত্রীদের সঙ্গে চালক ও হেলপারকে বাক-বিতণ্ডা করতে দেখা গেছে।

মালিক সমিতির ঘোষণা অনুযায়ী, রোববার থেকে সিটিং সার্ভিস বন্ধ করে লোকাল হিসেবে চলাচল করার কথা বাসগুলোর। নিয়ম অনুযায়ী বাস প্রতিটি স্টপেজে দাঁড়াবে এবং লোকাল হিসেবে ভাড়া নেবে। এদিন থেকে ঢাকায় কোনো বাস সিটিং সার্ভিস হিসেবে চলবে না এবং সে অনুযায়ী ভাড়াও আদায় করা যাবে না। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) দেয়া ভাড়ার চার্ট অনুযায়ী তা আদায় করতে হবে। কিন্তু কোনো পরিবহনই এ নিয়ম মানছে না।

Advertisement

সকাল সাড়ে ৮টায় রাজধানীর কল্যাণপুরে দেখা যায়- ওয়েলকাম, লাব্বাইক, স্বজন, ইন্টারসিটি, নিউভিশন, তানজিল, মিরপুর মিশন, বসুমতি, পরিস্থান, এভারেস্ট, দিশারী, বিকল্প, আশীর্বাদসহ অধিকাংশ বাসই নিয়মের তোয়াক্কা না করে সিটিং সার্ভিস হিসেবে আগের মতো চলাচল করছে। লোকাল হিসেবে যাত্রী তুললেও ভাড়া আদায় করা হচ্ছে সিটিং সার্ভিসের।

এদিকে, রোববার থেকে সব বাস লোকাল হিসেবে চলাচলের বিষয়টি জানেন না অনেক যাত্রী। অনেকে জানলেও বাসের ভেতর কোনো ভাড়ার তালিকা না থাকায় আগের মতোই ভাড়া মেটাতে বাধ্য হচ্ছেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ভূঁইয়া পরিবহনের হেলপার অমিত জানান, আমাদের বাস সিটিং হিসেবেই চলছে। মালিকপক্ষ আমাদের কোনো নিদের্শনা দেয়নি। মালিকপক্ষ নতুন করে কোনো নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত আগের নিয়মেই ভাড়া আদায় করা হবে।

সাভার থেকে ছেড়ে আসা ওয়েলকাম পরিবহনের যাত্রী স্কুলশিক্ষক আবু সাঈদ জাগো নিউজকে বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নতুন যে নিয়ম করেছে তা মানা হচ্ছে না। তাদের নজরদারি ও অভিযান না থাকায় নিয়মের তোয়াক্কা না করে আমাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।

Advertisement

তিনি বলেন, সাভার থেকে বাসে উঠেছি, যাব যাত্রাবাড়ি। নির্ধারিত ভাড়া ৫০ টাকা। কিন্তু নেয়া হয়েছে ৭০ টাকা। আমাদের দু’জনের কাছ থেকে ২০ করে ৪০ টাকা বেশি নেয়া হয়েছে।

আবুল হোসেন নামে খামারবাড়ির প্রাণিসম্পদ বিভাগের এক কর্মকর্তা জাগো নিউজকে বলেন, বিআরটিএ ভাড়ার চার্ট অনুযায়ী সাভার থেকে ফার্মগেটের ভাড়া ৩৩ টাকা। কিন্তু আমার কাছ থেকে নিল ৪০ টাকা।

মিরপুর-১২ থেকে ছেড়ে আসা খাজাবাবা পরিবহন ফার্মগেট এলাকায় দাঁড়ানোর পর হেলপারের সঙ্গে তর্ক করতে দেখা যায় যাত্রীদের। শুভ নামে এক যাত্রী জানান, মিরপুর-১০ থেকে ফার্মগেটের ভাড়া ১১ টাকা। কিন্তু নিয়েছে ২০ টাকা।

যাত্রীদের সামনে খাজাবাবা পরিবহনের হেলপার আবুল বাশার বলেন, ভাড়া কেউ সিটিং দিচ্ছে, কেউ লোকাল দিচ্ছে। আমরা কাউকে কিছু বলিনি। যে যা দিয়েছে, তাই নিয়েছি।

তার কথার পরপরই নতুন করে যাত্রীদের সঙ্গে বাক-বিতণ্ডা শুরু হয়। অতিরিক্ত ভাড়া প্রদানকারীরা হেলপারের কাছ থেকে বাড়তি টাকা ফেরত নেন।

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় শিকড়, ল্যামস, বিহঙ্গ, এভারেস্ট ও নিউভিশনসহ সব বাসের চিত্রই একই রকম দেখা গেছে।

জেইউ/এসআর/এমএআর/বিএ/পিআর