নড়াইলে নতুন ধানের ম ম গন্ধে মাতোয়ারা কৃষক। মাঠের পর মাঠ পেরিয়ে, গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে এ সুবাস ছড়িয়ে পড়েছে। আর এ সোনালি ধানের শিষে দুলছে হাজারও স্বপ্ন। স্বপ্নে বিভোর কৃষক-কৃষাণীরা মেতে উঠেছেন ধান উৎসবে।কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪-১৫ মৌসুমে ৪০ হাজার ৭২২ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করার কথা থাকলেও আবাদ করা হয়েছে ৪১ হাজার ৭৩০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে হাইব্রিড ১৫ হাজার ৭২০ হেক্টর, উচ্চ ফলনশীল (উফশী) ২৫ হাজার ৯৫০ হেক্টর ও স্থানীয় ৬০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। গত মৌসুমে (২০১৩-১৪) আবাদ হয়েছিল ৪১ হাজার ৫০৫ হেক্টর জমিতে। গত মৌসুমের চেয়ে চলতি মৌসুমে বোরোর আবাদ যেমন বেড়েছে, তেমনি ফলনও ভালো হয়েছে।বৃদ্ধ আবুল খায়ের জানান, এ বছর ফলন ভালো হয়েছে। তিন শতক জমিতে দেড় থেকে দুই মণ করে ধান ঘরে তুলতে পারবেন বলে আশা করছেন তিনি।নাঈম হাসান টিটো জানান, বর্তমানে প্রতি মণ ধান ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। সেক্ষেত্রে প্রতিমণ ধান ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা দরে বিক্রি হলে কৃষকেরা বেঁচে থাকবেন।আমাদা গ্রামের এনায়েত বলেন, আমাদের বাজারে ধানের দাম অনেক কম। এড়েন্দা হাটে মণ প্রতি ৫৫০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এক্ষেত্রে সরকারি নজরদারি প্রয়োজন।কুচিয়াবাড়ি গ্রামের তরিকুল ইসলাম জানান, এ বছর মাঝে-মধ্যে বৃষ্টি হওয়ায় বোরো ধানের ফলন খুব ভালো হয়েছে। আবহাওয়া ভালো থাকলে কৃষকেরা ভালোভাবে ফসল ঘরে তুলতে পারবেন।সদরের চারিখাদা গ্রামের সাজেদা বলেন, ধানমাড়াইয়ের জন্য উঠানবাড়ি এবং ধান সংরক্ষণের জন্য গোলাসহ বিভিন্ন উপকরণ প্রস্তুত করেছি।এদিকে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, জেলার বিভিন্ন মাঠে বোরো ধানকাটা শুরু হয়েছে। তবে শ্রমিক সংকট ও উচ্চমূল্যের কারণে ধানকাটা এবং ফসল ঘরে তোলা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন কৃষকেরা। বিভিন্ন হাটে জন প্রতি ৪০০ টাকা হারে শ্রমমূল্য বিক্রি হয়েছে।কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর নড়াইলের উপ-পরিচালক শেখ আমিনুল হক বলেন, এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে বোরোর আবাদ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলনও ভালো হয়েছে। ইতোমধ্যে ব্রি-২৮ ধান কাটা শুরু হয়েছে। প্রতি হেক্টরে ৩ দশমিক ৮ মেট্রিক চাল উৎপাদন হচ্ছে।এসএস/এমএএস/আরআই
Advertisement