‘এতদিন শুনে এসেছি ১৫ তারিখ থেকে সব সিটিং বন্ধ। এখন নতুন করে শুনছি ১৫ তারিখের পর থেকে বন্ধ। এটা বিভ্রান্তিকর। এ কারণেই বাসে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে।’ বেশ ক্ষোভের সঙ্গে কথাগুলো বলছিলেন উত্তরা থেকে গুলিস্তানগামী ১৩২ নম্বর (পুরাতন-৩) বাসের যাত্রী শাহনেওয়াজ খন্দকার।
Advertisement
এই রুটে নিয়মিত যাত্রী শাহনেওয়াজের রাগের কারণ-বাসের কন্ডাক্টরের সঙ্গে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় নিয়ে কথা কাটাকাটি।
একই বাসে উত্তরা থেকে কারওয়ান বাজার যাওয়ার জন্য ২৫ টাকা ভাড়া দিয়েছিলেন আরেক যাত্রী ফয়সাল আবদুল্লাহ। কিন্তু অন্য কাজ থাকায় তিনি শাহবাগে নামার সিদ্ধান্ত নেন। সে অনুযায়ী ভাড়া পরিশোধ করতে গেলে কারওয়ান বাজার থেকে শাহবাগ পর্যন্ত আরও ১০ টাকা দাবি করা হয় তার কাছে।
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে জাগো নিউজকে বলেন- ‘দূরত্ব হিসেব করে উত্তরা থেকে কারওয়ান বাজারের ভাড়া যদি ২০ টাকা হয়, তাহলে কারওয়ান বাজার থেকে শাহবাগের ভাড়া কিভাবে ১০ টাকা হয়? এভাবেই প্রতিদিন আমরা প্রতারিত হচ্ছি। আশা করেছিলাম আজ থেকে এই অত্যাচারের শেষ হবে। কিন্তু মানুষ ঠকানোর সেই খেলা আজও বন্ধ হলো না। সরকারের উচিত ছিল কঠোর নজরদারি করা।’
Advertisement
এদের মতো বিক্ষুব্ধ বাসের অন্যান্য যাত্রীরাও। যাত্রীদের অভিযোগ, শনিবার থেকে রাজধানীতে সবধরনের সিটিং সার্ভিস বন্ধ হওয়ার ঘোষণা শুনেছেন তারা। অথচ সেই ঘোষণার প্রতিফল নেই রাস্তায়। যথারীতি সিটিং সার্ভিসের নামে বাস চলছে। ভাড়াও নেয়া হচ্ছে আগের মতোই গলাকাটা।
এ নিয়ে প্রায় প্রতিটি বাসেই যাত্রীদের সঙ্গে এ ধরনের কথাকাটি চলছে কন্ডাক্টর ও হেলপারের সঙ্গে যাত্রীদের।
যাত্রীদের আরও অভিযোগ, সব বাস প্রায় প্রতিটি স্টপেজেই থামছে। কিন্তু নামে সিটিং হলে প্রতিটি বাসই আসলে আজই লোকাল হয়ে গেছে। কিন্তু ভাড়া আদায় হচ্ছে সিটিং সার্ভিসের হিসেবে। এ নিয়ে গাড়িটির যাত্রীরা তীব্র আপত্তি জানালে বেশ কয়েকবার বেপরোয়াভাবে গাড়িটি চালাতে থাকেন চালক।
১৩২ নম্বর বাসের কন্ডাক্টর মো. জুনায়েদ জাগো নিউজকে জানান, যাত্রীরা আসলে ভুল জানেন। ১৬ তারিখ থেকে গণপরিবহনের সিটিং সার্ভিস বন্ধ হওয়ার কথা। তবে এখনও পুরো নির্দেশনা সম্পর্কে তিনি জানেন না।
Advertisement
তবে যাত্রীদের কথা- নিয়ম থাকলেও না মানতে বাধ্য না করায়, আইন ভাঙার দৃষ্টান্তমূলক সাজা না হওয়ায় যাত্রীরা পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের হাতের পুতুলে পরিণত হয়েছেন।
পথে পথে যাত্রী হয়রানির এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ পরিবহন মালিক সমিতির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, রোববার থেকে বন্ধ হচ্ছে সিটিং সার্ভিস।
বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েতুল্লাহ জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, আজ বিকেলে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাদের মিটিং হবে। আগামীকাল থেকে সিটিং সার্ভিস বন্ধের সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।
গত ৪ এপ্রিল রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সিটিং সার্ভিস গণপরিবহন বন্ধের ঘোষণা দেয় ঢাকা পরিবহন মালিক সমিতি। ওইদিন সমিতির পক্ষ থেকে বিআরটিএ নির্ধারিত চার্ট অনুসরণ করে ভাড়া আদায়ের কথা বলা হয়।
জেপি/এসআর/এমএস