শুক্রবার সকাল আনুমানিক সাড়ে ৮টা। আজিমপুর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে আজিমপুর বাসস্ট্যান্ডগামী রাস্তায় জটলা। বাংলা নববর্ষের প্রথম দিনে পরিবার-পরিজন নিয়ে কেউ রিকশায়, কেউ মোটরসাইকেল আবার কেউবা হেটে ঘুরতে যাচ্ছিলেন। প্রায় সবার পরিধানে বর্ণিল পাঞ্জাবি, সালোয়ার-কামিজ কিংবা শাড়ি।
Advertisement
দক্ষিণ পাশের ফুটপাতে দেয়াল ঘেষে বসেছিলেন রহিমা, শেলী, নাজমা ও সাবেরাসহ কয়েকজন নারী। ওদের সামনে কেউ দাঁড়ালেই সবাই একযোগে জানতে চাইছিল ‘কী স্যার, কাম আছে? কই যাইতে হইবো?’ ওরা সবাই দিনমজুর। না সূচক জবাব পেতেই ওদের মন খারাপ করে মাথা নিচু করে রাখতে দেখা যায়। কেউবা আবার বসা থেকে উঠে রাস্তার সামনে গিয়ে দাঁড়ায়।
প্রতিদিন সকালেই ওরা নির্মাণাধীন ভবনে কাজে যাওয়ার জন্য এভাবেই অপেক্ষা করে। অন্যদিন এ সময়ের মধ্যে ওরা কাজে চলে যায়। কিন্তু পহেলা বৈশাখের দিনে ওদের কপাল মন্দ। অন্যদিন সকালে ওদের কাজে নিয়ে যাওয়ার জন্য রীতিমতো ভিড় লেগে যায়। অথচ আজ অনেকেই তখনও পর্যন্ত কাজে যেতে পারেনি।
শেলী নামের এক দিনমজুর জানান, পহেলা বৈশাখে মানুষ যখন খুশী মনে ঘুরতে বাইর হয় তখন আমরা কাম না পাওয়ার চিন্তায় অস্থির। সকালে সাত বছর বয়সী মাইয়াডা পার্কে ঘুরতে যাইবো বইল্যা বায়না ধরলেও কাজে যাওয়ার জন্য বিকেলে নিয়ে যাবেন বলে মিথ্যা সান্ত্বনা দিয়ে এসেছেন। সন্ধ্যার পর রিকশাচালক স্বামীকে নিয়ে ঘুরতে বের হবেন তিনি।
Advertisement
নাজমা নামের আরেক দিনমজুর বলেন, ‘পহেলা বৈশাখ অনেকের লাইগ্যা খুশীর দিন অইলেও আমাগো লাইগ্যা খুশীর দিন না। বরং এ দিন নির্মাণাধীন ঘরবাড়িতে কামকাজ বন্ধ থাকে। বছরের প্রথম দিনটা খারাপ গেলে সারাবছরই খারাপ যাইব।’
এমইউ/জেডএ/এমএস