জাতীয়

ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত

‘আপনেই কন, ঢোল, তবলা আর ডুুমুর না বাজলে কি নববর্ষ মনে হয়। আইজ ব্যবসায় লাভ তো দূরের কথা, পুঁজি লইয়া বাড়ি ফিরতে পারুম কি না হেই চিন্তায় অস্থির আছি।’

Advertisement

শুক্রবার সকাল আটটায় নীলক্ষেত মোড়ে দাঁড়িয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে রমিজ মিয়া নামের এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এ প্রতিবেদকের কাছে এ কথাগুলো বলছিলেন।

রমিজ মিয়া জানান, কামরাঙ্গীরচরের বাসা থেকে কাকডাকা ভোরে এসে ভেতরে প্রবেশের জন্য পুলিশের কাছে অনুরোধ জানাতে থাকেন। কিন্তু পুলিশ সাফ জানিয়ে দিয়েছে কোনো মালামাল নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না।

তবুও একেবারে আশা ছেড়ে দেননি, দুপুরের পর হয়তো ভেতরে ঢুকতে দেবে এই আশায় আপাতত বাইরে দাঁড়িয়ে ঢোল, তবলা ও ডুুমুর বিক্রির চেষ্টা করছেন বলে জানালেন।

Advertisement

পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে রমিজ মিয়ার মতো অসংখ্য ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, রমনা ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশ করে  (ডাব, তরমুজ, পেপে, লেবুর সরবত, আইসক্রিম, ঝুড়ি, হাত পাখা, গামছা, ফুলের রিং) খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী বিক্রি করতে চাইলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়নি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা কিছুক্ষণ পরপর পুলিশ সদস্যদের কাছে গিয়ে ভেতরে ঢুকতে দেয়ার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছেন। কিন্তু পুলিশ  তাদের ঢুকতে দিচ্ছে না।

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার বশিরপুর গ্রামের মনির হোসেন মতিঝিল এলাকায় ডাস্টার বিক্রি করেন। আজ পহেলা বৈশাখে বিক্রির জন্য নরসিংদীর বাবুরহাট থেকে ২০০ পিস গামছা কিনে এনেছেন। মাথায় গামছা বেধে ও কাঁধে গামছা রেখে গামছা গামছা বলে ডাকাডাকি করছিলেন। প্রতি পিস গামছা ৬০ টাকা দাম চাইলেও ৪০ টাকা পেলেই বিক্রি করছিলেন।

এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে মনির হোসেন বলেন, পহেলা বৈশাখে হাজার হাজার মানুষ বেড়াতে আসে। অনেকে গরমে মুখ মুছতে কেউবা শখ করে গামছা কিনেন। গত বছর সকালে দুই ঘণ্টায় ৫০টার মতো বিক্রি করলেও আজ ক্যাম্পাসে ঢুকতে না দেয়ায় মাত্র চারপিস বিক্রি করতে পেরেছি। ভেতরে ঢুকতে না দিলে সারাদিনে ২০০ পিস গামছা বিক্রি হবে কি না তা নিয়ে তিনি সন্দিহান।

Advertisement

এক লেবুর সরবত বিক্রেতা জানান, আজ ভালো বিক্রি ও লাভের আশায় বেশি করে লেবু আর বরফ কিনে আনেন। তিনি জানান, পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে বরফের দাম বেড়ে গেছে। যে বরফের পাটা ৪০টাকায় কিনতেন সেটির দাম ৮০ টাকা হয়ে গেছে। পহেলা বৈশাখে মানুষ ক্যাম্পাসে হেটে ক্লান্ত হয়ে শরবত খায়। কিন্তু আজ ভেতরে ঢুকতে না দেয়ায় তাদেরও বিক্রি কমবে, ক্রেতারাও কষ্ট করবে।

এমএউ/জেডএ/এমএস