অর্থনীতি

কমেছে কৃষিঋণ বিতরণ

দীর্ঘদিন ঊর্ধ্বমুখী থাকলেও গেল মাসে কমে গেছে কৃষিঋণ বিতরণ। চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসে দেশের ব্যাংকগুলো ৯০৪ কোটি ৫৩ লাখ টাকার কৃষিঋণ বিতরণ করেছে। যা গত অর্থবছরের জুলাই মাসে ছিল ৯৮১ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। সে হিসাবে জুলাই মাসে কৃষিঋণ বিতরণ কমেছে ৭৭ কোটি ৪২ লাখ টাকা।  কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে দেখা যায়, জুলাই মাসে বিদেশী খাতের ৬টি ও বেসরকারি খাতের ৪টি ব্যাংক কৃষি খাতে কোন ঋণ বিতরণ করেনি। দেশের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ত্বরান্বিত করতে যে নতুন ব্যাংকগুলোর অনুমোদন দেয়া হয়েছিল তার মধ্যে ৪টি ও বেসরকারি খাতের একটি ব্যাংক কোন ঋণ বিতরণ করেনি। ব্যাংকগুলো হল, ব্যাংক আল-ফালাহ, সিটি ব্যাংক এনএ, কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলন, হাবিব ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া, ফারমার্স ব্যাংক, মধুমতি ব্যাংক, এনআরবি ব্যাংক, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক ও প্রাইম ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, চলতি অর্থবছরের জন্য ১৫,৫৫০ কোটি টাকা কৃষিঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ব্যাংকগুলো। যা গত অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৬.৫৪% বেশি। এবারের নীতিমালায় কৃষি ও পল্লী ঋণের ক্রমবর্ধমান চাহিদা বিবেচনায় চলতি অর্থবছরে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর জন্য ৯,১৪০ কোটি এবং বেসরকারি ও বিদেশি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর জন্য ৬,৪১০ কোটি টাকা কৃষি ও পল্লীঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, জুলাই শেষে রাষ্ট্রীয় ও বিশেষায়িত খাতের ব্যাংকগুলো একত্রে এ খাতে বিতরণ করেছে ৩৩০ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ৪২৫ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। এ সময় সবচেয়ে কম ঋণ বিতরণ করেছে রাষ্ট্রীয় খাতের রূপালী ব্যাংক। যার পরিমাণ মাত্র ১৫ লাখ টাকা। এদিকে বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো ঋণ দিয়েছে ৪৮৮ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ৫৩৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা। অন্যদিকে বিদেশি খাতের ব্যাংকগুলো কৃষি খাতে ঋণ বিতরণ করেছে ৮৫ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ২২ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে জুলাই শেষে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মোট ঋণ বিতরণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯০৪ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কৃষি ও আর্থিক সেবাভুক্তি বিভাগের মহাব্যবস্থাপক প্রভাষ চন্দ্র মল্লিক বলেন, শস্যপঞ্জিকা অনুযায়ী ব্যাংকগুলো যেন ঋণ বিতরণ করে, সে ব্যাপারে কঠোর তদারকি করা হচ্ছে। এর পাশাপাশি ঋণ দিয়ে যেন ব্যাংকগুলো হাত গুটিয়ে বসে না থাকে সে ব্যাপারেও লক্ষ্য রাখা হচ্ছে। এর ফলে বিদায়ী অর্থবছরে বিগত যে কোন সময়ের চেয়ে কৃষিঋণ বিতরণ ও আদায় প্রক্রিয়া বেড়েছে বলে তিনি দাবি করেন। বলেন, চলতি বছর থেকে কৃষিঋণকে ব্যাংকের ক্যামেলস রেটিংয়ে যুক্ত করায় আগামীতে ব্যাংকগুলো আরও বেশি সক্রিয় হবে। নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, কৃষিখাতে বিনিয়োগ বাড়ানোর লক্ষ্যে বেসরকারি ও বিদেশী ব্যাংকগুলোকে মোট ঋণের আড়াই শতাংশ এবং নতুন ৯টি ব্যাংকের মোট ঋণের ৫% কৃষিখাতে বিতরণের জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

Advertisement