পুলিশ কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী হত্যা মামলার হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স ও আপিলে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি শেষ হয়েছে।
Advertisement
রোববার হাইকোর্টের বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে রাষ্ট্রপক্ষ তাদের শুনানি শেষ করে। এর আগে আসামিপক্ষ তাদের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেছে।
তবে সোমবার রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তির পাল্টা জবাব পেশ করবে আসামিপক্ষ। আদালতে আজ রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জহিরুল হক জহির, সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আতিকুল হক সেলিম ও নিজামুল হক নিজাম। অন্যদিকে আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী আফজাল এইচ খান ও সুজিত চ্যাটার্জি।
পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জহিরুল হক সাংবাদিকদের জানান, ঐশীর মামলায় আসামি ও রাষ্ট্রপক্ষের শুনানি শেষ হয়েছে। তার মানসিক অবস্থা পরীক্ষার জন্য সোমবার আদালতে হাজির করা হবে। সেদিনই আদালত মামলায় রায়ের জন্য দিন নির্ধারণ করবেন।
Advertisement
তিনি আরও বলেন, অপরাধের গুরুত্ব বিবেচনায় তাকে দেয়া বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডের রায় আমরা বহাল রাখার আর্জি জানিয়েছি। তার মানসিক অবস্থা নিয়ে যে প্রশ্ন তোলা হয়েছে সে ব্যাপারে আমরা বলেছি, ঘটনার সময় ও তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করার সময় তার মানসিক অবস্থা ঠিক ছিল।
আসামিপক্ষের আইনজীবী আফজাল এইচ খান বলেন, আমরা রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্কের জবাব দেব। এরপর শুনানি শেষে আদালত রায়ের দিন নির্ধারণ করবেন।
এ মামলার আপিল শুনানিকালে ঐশীর আইনজীবী জানান, ঘটনার সময় ঐশী মানসিক বিকারগ্রস্ত ছিল। এর আগে করা একটি রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দেয়া প্রতিবেদনে ঐশীর মানসিক সমস্যার কথা উল্লেখ করে প্রতিবেদন দেয়া হয়। সে বিষয়টি ওইদিন আদালতের নজরে আনেন তার আইনজীবীরা। পরে আদালত মানসিক অবস্থা পর্যবেক্ষণে ঐশীকে ১০ এপ্রিল হাইকোর্টে হাজির করার নির্দেশ দেন।
এর আগে পুলিশ দম্পতি হত্যা মামলায় তাদের একমাত্র মেয়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ঐশী রহমানের মামলাটি ডেথ রেফারেন্স আকারে হাইকোর্টে আসে। একইসঙ্গে ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে ঐশী। পরে ১২ মার্চ এই মামলায় ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানি শুরু হয়।
Advertisement
২০১৩ সালের ১৬ আগস্ট রাজধানীর মালিবাগের চামেলীবাগে নিজ বাসা থেকে পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের (রাজনৈতিক শাখা) পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমানের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মা-বাবা খুন হওয়ার পর পালিয়ে যান ঐশী। এ ঘটনায় ২০১৩ সালের ১৭ আগস্ট নিহত মাহফুজুর রহমানের ছোট ভাই মো. মশিউর রহমান রুবেল পল্টন থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। একই বছরের ১৭ আগস্ট ঐশী রহমান রমনা থানায় আত্মসমর্পণ করেন। এরপর ২৪ আগস্ট আদালতে খুনের দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন ঐশী।
২০১৪ সালের ৯ মার্চ গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মো. আবুল খায়ের মাতুব্বর আসামিদের বিরুদ্ধে দুটি পৃর্থক অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন।
সুমি অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় কিশোর আইনে এবং ঐশীসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অরেকটি চার্জশিট দাখিল করেন। সুমির মামলার বিচার কার্যক্রম কিশোর আদালতে পরিচালনা হচ্ছে। ২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বর প্রধান আসামি ঐশী রহমানকে ডাবল মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। অপর দুই আসামি ঐশীর বন্ধু রনিকে দুই বছরের কারাদণ্ড ও জনিকে খালাস দেয়া হয়।
এফএইচ/জেএইচ/জেআইএম