রাজধানীর হাজারীবাগের ট্যানারিগুলোর গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নের অভিযান শুরু করেছে পরিবেশ অধিদফতর।
Advertisement
আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী শনিবার সকাল ১০টা থেকে এ কার্যক্রম শুরু হয়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সংযোগ বিচ্ছিন্নের কার্যক্রম চলছিল।
পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) রাইসুল আলম মণ্ডল জানান, রোববার দুপুরের মধ্যে কারখানাগুলোর সব সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে।
আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী গত বৃহস্পতিবারের মধ্যেই গ্যাস-বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার কথা ছিল। কিন্তু লোকবল সংকটের কারণ দেখিয়ে পরিবেশ অধিদফতর দু’দিন পর শনিবার সকাল থেকে সংযোগ বিচ্ছিন্নের অভিযান শুরু করে।
Advertisement
এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদফতরের ডিজি রাইসুল আলম মণ্ডল জাগো নিউজকে বলেন, আমাদের লোকবল সংকট রয়েছে। তাই বৃহস্পতিবার সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ কার্যক্রম চালানো সম্ভব হয়নি।
সরেজমিন দেখা গেছে, পরিবেশ অধিদফতরের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত সংযোগ বিচ্ছিন্ন কার্যক্রমে গ্যাস-বিদ্যুৎ লাইন কাটার পাশাপাশি মিটারও কারখানাগুলো থেকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এসব মালামাল জমা রাখা হবে ডেমরা-সারুলিয়ায়।
গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন কার্যক্রমে অংশ নেয়া কর্মীরা জানান, হাজারীবাগে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষের চারটি টিম কাজ করছে। প্রতিটি টিম ১৫টি কারখানার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করবে। সে হিসেবে আজ ৬০টি কারখানার গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে।
২ মার্চ হাজারীবাগের ১৫৪টি ট্যানারি কারখানার বকেয়া বাবদ ৩০ কোটি ৮৫ লাখ টাকা জরিমানা দুই সপ্তাহের মধ্যে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেয়ার নির্দেশ দেন হাইকোর্টের বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাসের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ। পরে এ আদেশ স্থগিত চেয়ে বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন ও ফিনিশড লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন আদালতে আবেদন করেন।
Advertisement
৬ মার্চ সব ট্যানারি অবিলম্বে বন্ধের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে কারখানাগুলোর বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানি বিচ্ছিন্ন করাসহ সব সুযোগ-সুবিধা বন্ধ করে দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। ১২ মার্চ কারখানাগুলো অবিলম্বে বন্ধে হাইকোর্টের নির্দেশ বহাল রাখেন আপিল বিভাগ।
৩০ মার্চ হাজারীবাগে থাকা ট্যানারিগুলোর সব কার্যক্রম ৬ এপ্রিলের মধ্যে বন্ধ করা হলে জরিমানা মওকুফের বিষয়ে বিবেচনার কথা জানান সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। আগামী ৯ এপ্রিল এ সংক্রান্ত পরবর্তী শুনানি গ্রহণের কথাও জানান আদালত।
আদালতের ওই নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে ধানমন্ডির রয়েল বুফে রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলন করে ট্যানারি মালিকরা জানান, ৬ এপ্রিল থেকে সব ট্যানারি বন্ধ করে দেবেন তারা। তবে ৬ এপ্রিলের মধ্যে সাভারে গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানি সংযোগ দেয়ার দাবিও করেন তারা।
কিন্তু আদালতের নির্দেশনা ও মালিকদের প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও ৬ এপ্রিল ট্যানারিগুলোর কোনো সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়নি। বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক দেখা দিলে ওই দিন দুপুরে পরিবেশ অধিদফতর জানায়, শনিবার থেকে সংযোগ বিচ্ছিন্ন অভিযান শুরু হবে।
এমএএস/এসআই/এসআর/এমএআর/এমএস