দেশজুড়ে

জগদ্দল পাথরসম কষ্ট সইছেন স্বজনরা

দিন-মাস গড়িয়ে দুই বছরে পা রাখছে সাভারের রানা প্লাজা ট্রাজেডি। কিন্তু, এখনো কান্না থামেনি স্বজনহারা পরিবারগুলোর। রানা প্লাজা ধসে নিহত কুষ্টিয়ার দশ শ্রমিক পরিবার অর্থ কষ্টে দুর্বিষহ জীবন-যাপন করছেন। ভবন ধসের দুই বছর অতিক্রান্ত হলেও এখনও স্বাভাবিক হতে পারেননি জেলার নিখোঁজ আর নিহতদের পরিবার ও স্বজনরা।বর্তমানে তাদের দিন কাটছে অভাব-অনটন আর হতাশায়। অভিশপ্ত রানা প্লাজা ট্রাজেডির গেল দু’বছরে সব হারানো এসব হতদরিদ্র শ্রমিক পরিবারের একবারের জন্যও খোঁজ নেয়নি কেউ।সূত্র জানায়, রানা প্লাজা ধসে কুষ্টিয়ার ১০ জন শ্রমিক নিহত হন। এরমধ্যে কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার গোপ গ্রামের সেকেন আলীর মেয়ে নাজমা খাতুন, একই উপজেলার সন্তোষপুর গ্রামের ফরিদ আলীর মেয়ে জোসনা খাতুন, কুমারখালি উপজেলার কয়া ইউনিয়নের আলমের মেয়ে শহিদা বেগম, একই উপজেলার জগ্ননাথপুর ইউনিয়নের হোগলা গ্রামের শ্যামল চন্দ্র ঘোষের ছেলে দীপঙ্কর ঘোষ, দৌলতপুর উপজেলার মহিষকুণ্ডি ইউনিয়নের তরিঘোলা বিশ্ববাট গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে আমিরুল ইসলাম, একই উপজেলার হরিণগাছি গ্রামের নওয়াব আলীর ছেলে জাহাঙ্গীর আলম, খোকসা উপজেলার আমবাড়িয়া ইউনিয়নের তাহেরপুর গ্রামের আনসার আলীর ছেলে মাসুদ রানা, কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হরিপুর গ্রামের এক নারী শ্রমিক ও কুমারখালির দূর্গাপুর এলাকার এক যুবক নিহত হন।রানা প্লাজা ট্রাজেডির দুই বছর অতিবাহিত হলেও কুষ্টিয়ার নিহত দশ শ্রমিকের পরিবারে আহাজারি এখনো থামেনি। রানা প্লাজায় নিহত কয়েক পরিবারের সদস্যরা জানান, একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে তারা আজ দিশেহারা। গত দুই বছরে সরকারি-বেসরকারি কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে তেমন কোনো  সহায়তাও পাওয়া যায়নি।রানা প্লাজা ধসে নিহত দীপঙ্করের মা গীতা রাণী ঘোষ জাগো নিউজকে বলেন, দুই সন্তানের মধ্যে দীপঙ্করই ছিল একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। দীপঙ্করের মৃত্যুর পর দিশেহারা হয়ে পড়েছে পুরো পরিবার। এসব পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম প্রিয় মানুষগুলোকে হারিয়ে কেউই এখন আর ভালো নেই।শাহিদার মা জানান, উপার্জনক্ষম মেয়েকে হারিয়ে এখন সংসার চালাতে নূন আনতে পান্তা ফুরােয়। অভিশপ্ত রানা প্লাজার ধসে মার স্নেহ বঞ্চিত শাহিদার মেয়ের দুই চোখ খুঁজে ফিরে প্রিয় মাকে। ভাঙা সংসার আর অবুঝ শিশুর সঙ্গে শোকের পাথর নিয়ে দিন কাটছে শাহিদার মার।এখনও অনেক পরিবারের কাছে পৌঁছেনি তাদের ক্ষতিপূরণের টাকা। আর নিখোঁজ শ্রমিকদের পরিবারের দাবি ক্ষতিপূরণের টাকা নয়, অন্তত সন্তানের লাশটা যেন সরকার ফিরিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করেন।এমজেড/এমএএস/আরআইপি

Advertisement