জাতীয় এয়ারগান চ্যাম্পিয়নশিপ শেষ করে খুলনা গিয়েছিলেন শাকিল আহমেদ। প্রথম জাতীয় ক্রীড়া দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বৃহস্পতিবার কাকডাকা ভোরে ঢাকায় পৌঁছে সরাসরি বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে উপস্থিত হন গত এসএ গেমসে স্বর্ণজয়ী এ শ্যূটার। পল্টন ময়দানে নবনির্মিত রোলার স্কেটিং কমপ্লেক্সের সামনে তার আগেই উপস্থিত হন একই গেমসে স্বর্ণজয়ী অন্য দুই ক্রীড়াবিদ সাঁতারু মাহফুজা খাতুন শিলা ও ভারোত্তোলক মাবিয়া আক্তার সীমান্ত। দেশের প্রথম জাতীয় ক্রীড়া দিবসের সকালে হাজার হাজার মানুষের মধ্যে বিশেষ আকর্ষণ ছিলেন এ তিন ক্রীড়াবিদ।
Advertisement
বাংলাদেশের খেলাধুলায় আজ (বৃহস্পতিবার) যোগ হলো নতুন এক অধ্যায়। দেশের অনেক দিবসের ভীড়ে নতুন নাম ‘জাতীয় ক্রীড়া দিবস’। প্রতিবছর ৬ এপ্রিল আসবে খেলাধুলায় নতুন উৎসাহ-উদ্দীপণা নিয়ে। তবে ২০১৭ সালের এ দিনটা লেখা থাকবে বিশেষভাবে। প্রথম ক্রীড়া দিবস বলে যার অনুভূতি অন্যরকম। এ বিশেষ দিনে বিশেষ উপহার পেলেন শিলা, শাকিল, মাবিয়া। তাদের উপস্থিতি বাড়িয়ে দিয়েছিল দিবসের মহিমা। সোনায় মোড়ানো এ তিন ক্রীড়াবিদের হাতে তুলে দেয়া হলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ উপহার-ফ্লাট ভাড়ার অর্থের চেক।
এসএ গেমসে স্বর্ণ জয়ের পর এ তিন ক্রীড়াবিদকে ফ্লাট উপহার দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। তাদের জন্য ফ্লাট নির্মাণ চলছে উত্তরায়। স্বপ্নের সেই ফ্লাটে উঠতে মাবিয়া-শিলা-শাকিলদের অপেক্ষায় থাকতে হবে আরো কিছু দিন। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের পুরোনো বাসায় রাখেননি। তার নির্দেশে ফ্লাট নির্মান না হওয়া পর্যন্ত এ তিন ক্রীড়াবিদকে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ উঠিয়েছে অন্য নতুন ফ্লাটে। যার ভাড়া বহন করবে সরকার। সেই ফ্লাটের তিন মাসের ভাড়ার টাকাটাই প্রথম জাতীয় ক্রীড়া দিবেস হাতে পেলেন তারা।
সকালে জাতীয় পতাকা, অলিম্পিক পতাকা এবং জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পতাকা উত্তোলণ এবং বেলুন ও কবতুর উড়িয়ে দিনের সূচনা করেছেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ড. বীরেন শিকদার। এ মঞ্চেই তিন ক্রীড়াবিদের হাতে প্রতিমন্ত্রী তুলে দেন অর্থের চেক। এসএ গেমসে স্বর্ণ জয়ের পর অনেক পুরস্কার ও সংবর্ধনাই পেয়েছেন শিলা, শাকিল ও মাবিয়া। তবে বৃহস্পতিবার পাওয়া এ উপহারকে তারা স্বীকৃতি দিলেন সবচেয়ে প্রেরণাময়ী হিসেবে।
Advertisement
‘আমি প্রথমেই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে। তার ঘোষণা অনুযায়ীই আজ আমরা এ উপহার পেলাম। একজন ক্রীড়াবিদের কাছে এর চেয়ে বড় পাওয়া আর কি হতে পারে। এ উপহার আমাদের আগামীতে দেশের জন্য সম্মান বয়ে আনার অনুপ্রেরণা দেবে। খেলাধুলায় আগ্রহ বাড়বে নতুনদেরও’-চেক গ্রহণের পর সঁতারু মাহফুজা খাতুন শিলা।
মাবিয়া আক্তার সীমান্ত উচ্ছ্বাসিত হয়ে বলছিলেন,‘দেশের প্রথম ক্রীড়া দিবস। এমন একটি দিনে আমরা হাতে পেলাম প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা দেয়া উপহার। আগামীতে প্রতি বছর এ দিবস পালন হবে। হয়তো অনেকে অনেক পুরস্কারও পাবেন। কিন্তু আমরা তিনজন প্রথম ক্রীড়া দিবসে পুরস্কার পেলাম, যা আর কেউ পাবেন না। সামনে ইসলামী সলিডারিটি গেমস। আশা করি সেখানে ভালো করবো। ভালো করলে নিশ্চয়ই আবার এমন সম্মান পাবো।’
‘খুলনা থেকে নাইট কোচে রওনা দিয়ে খুব ভোরে ঢাকায় পৌঁছেছি। এমন একটি দিনে আমরা উপহার পেলাম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই গভীরভাবে। তার এই প্রেরণামূলক উপহার আগামীতে আমাকে আরো ভালো ফলাফল করতে সহায়তা করবে। প্রথম ক্রীড়া দিবসে বিশেষ পুরস্কার পেলাম। এটা আজীবন মনে থাকবে। এটা কেবল আমাদেরই নয়, আগামী প্রজন্মের ক্রীড়াবিদদের জন্য প্রেরণা হয়ে থাকবে’-বলেছেন শাকিল আহমেদ।
আরআই/এমআর/আরআইপি
Advertisement