শিক্ষা

জাতীয়করণের অপেক্ষায় ৪২ বিদ্যালয়

সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্তে জাতীয়করণ হচ্ছে দেশের ৪২ মাধ্যমিক বিদ্যালয়। প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন দিলেই জাতীয়করণের সরকারি নির্দেশনা (জিও) জারি করবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

Advertisement

সূত্র জানায়, বিভিন্ন সময়ে ১১৬ মাধ্যমিক স্কুল জাতীয়করণে সম্মতি দেন প্রধানমন্ত্রী। জাতীয়করণের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানগুলোতে নিয়োগ কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।

জানা গেছে, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) কর্মকর্তারা সরেজমিনে স্কুলগুলোর স্থাবর, অস্থাবর সম্পদ, শিক্ষক-কর্মচারীদের ব্যক্তিগত তথ্যসহ প্রতিষ্ঠানের সব তথ্য সংগ্রহ করে প্রতিবেদন তৈরি করেন। গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মাউশি ৪৮টি স্কুলের পরিদর্শন প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়। এর মধ্যে ৪২টি স্কুল জাতীয়করণ করতে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য যাবতীয় কাগজপত্র প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এখন প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন দিলেই জাতীয়করণের নির্দেশনা জারি করবে মন্ত্রণালয়।

জাতীয়করণের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মতি পাওয়া স্কুলগুলো হলো- সুনামগঞ্জ জেলার জামালগঞ্জ উপজেলার জামালগঞ্জ মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, ধর্মপাশা উপজেলার বাদশাহগঞ্জ পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়, ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার চরভদ্রাসন পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার সেনহাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার ফুলছড়ি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, পলাশবাড়ি উপজেলার পলাশবাড়ি এস এস মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, খাগড়াছড়ির মহালছড়ি উপজেলার মহালছড়ি উচ্চ বিদ্যালয়, পানছড়ি উপজেলার পানছড়ি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, লক্ষ্মীছড়ি উপজেলার  লক্ষ্মীছড়ি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, মাটিরাংগা উপজেলার মাটিরাংগা মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার নাকিপুর এইচএসসি পাইলট মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কালিগঞ্জ উপজেলার কালিগঞ্জ পাইলট মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়, রাঙ্গামাটির কাউখালী উপজেলার পোয়াপাড়া মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, বিলাইছড়ি উপজেলার বিলাইছড়ি উচ্চ বিদ্যালয়, নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার বারহাট্টা সিকেপি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, পূর্বধলা উপজেলার পূর্বধলা জে এম পাইলট মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলমাকান্দা উপজেলার কলমাকান্দা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলার বড়গাছী উচ্চ বিদ্যালয়, নাচোল উপজেলার নাচোল খ ম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, চাঁদপুরের মতলব উত্তরের ছেংগারচর মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, মতলব দক্ষিণের মতলব জে বি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, কক্সবাজারের রামু উপজেলার রামু খিজারী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার হাটহাজারী পার্বতী উচ্চ বিদ্যালয়, মীরসরাই উপজেলার মীরসরাই মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, বাঁশখালী উপজেলার বাঁশখালী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার আতাতুর্ক মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, সোনগাজী উপজেলার সোনগাজী মো. ছাবের পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, ছাগলনাইয়া উপজেলার ছাগলনাইয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, ফুলগাজী উপজেলার ফুলগাজী পাইলট হাই স্কুল, কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার দেবিদ্বার রেয়াজ উদ্দিন পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার বেগনাই বেঘুরী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বগুড়ার নন্দিগ্রাম উপজেলার নন্দিগ্রাম মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, কুড়িগ্রামের রাজিবপুর উপজেলার রাজিবপুর মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, লালমনিরহাটের হাতিবান্ধা উপজেলার হাতিবান্ধা এস এস মডেল হাইস্কুল, পঞ্জগড়ের অটোয়ারী উপজেলার অটোয়ারী পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার তুলশীরাম মডেল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার নবাবগঞ্জ বহুমুখী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, যশোরের অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়া শংকরপাশা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার মোগরাপাড়া এইচ জি জি এস স্মৃতি বিদ্যায়তন।

Advertisement

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, স্কুল জাতীয়করণে অর্থছাড়ের জন্য মন্ত্রণালয় থেকে বারবার তাগিদ দেয়া হয়। যেক’টি স্কুলের প্রতিবেদন তৈরি হয়েছে এর তালিকা পাঠাতে বলে। প্রথম ধাপে মন্ত্রণালয়ে জমা হওয়া ৪৮টি স্কুলের পরিদর্শন প্রতিবেদন পাঠানো হয়। তবে অর্থ মন্ত্রণালয় এর মধ্যে ৪২টি স্কুল জাতীয়করণে অর্থছাড়ের সম্মতি দিয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট চূড়ান্ত করা হয়েছে। ফলে এ অর্থবছর স্কুল জাতীয়করণে অর্থবরাদ্দ দেয়ার বা সমন্বয়ের কোনো সুযোগ নেই। বিষয়টি ইতোমধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে। তবে ৪২টি স্কুল জাতীয়করণে অর্থছাড়ের সম্মতি দেয়া হয়েছে। যার ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৩৩ কোটি টাকা।

এ ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী স্কুল-কলেজ জাতীয়করণ কার্যক্রম চলছে। অর্থ মন্ত্রণালয় বিষয়গুলোতে অনুমোদন দেয়ার পর ধাপে ধাপে বাকি কাজ শেষ করা হবে।

প্রসঙ্গত, যেসব উপজেলায় কোনো সরকারি স্কুল-কলেজ নেই সেসব উপজেলায় একটি করে স্কুল ও কলেজ জাতীয়করণের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ১৭টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং ৩৯টি কলেজ জাতীয়করণ করা হয়েছে।

Advertisement

এমএইচএম/এএইচ/এমএআর/আরআইপি