শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আগামীকাল শেষ হচ্ছে মাশরাফির একটি অধ্যায়। টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচটি জয় দিয়ে রাঙাতে পারলে এটা হবে ওর জন্য সেরা উপহার। এজন্য কাল সব টাইগারদের দল হিসেবে খেলতে হবে। দলের সবাইকে একাট্টা হয়ে খেলেই এ জয় ছিনিয়ে আনতে হবে। কারণ শ্রীলঙ্কা ওয়ানডে কিংবা টেস্ট যেমনই হোক টি-টোয়েন্টিতে তারা শক্তিশালী। তাই ওদের বিপক্ষে জয় পেতে হলে সব বিভাগে সবাইকে নিজেদের সেরাটা খেলতে হবে।
Advertisement
প্রথম ম্যাচে আমরা মোটেও নিজেদের মতো খেলতে পারিনি। প্রতিটি বিভাগেই দুর্বলতা ফুটে উঠেছে। তবে টি-টোয়েন্টি মূলত ব্যাটিংনির্ভর খেলা; তাই এ বিভাগে উন্নতি খুবই জরুরি। এজন্য তামিম ইকবালকে আলাদা দায়িত্ব নিতে হবে। ও একটা ভালো ইনিংস খেলতে পারলে কাজটা সহজ হয়ে যায়; পাশাপাশি পরের ব্যাটসম্যানদের আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায়। এছাড়া সাকিব ও মুশফিককে কাল ভালো ইনিংস খেলতে হবে। সাব্বিরের ওপরও আমরা নির্ভরশীল। কারণ ও আমাদের একমাত্র টি-টোয়েন্টি স্পেশালিস্ট। তবে সৌম্য সরকারও যথেষ্ট আগ্রাসী ব্যাটিং করতে পারে। তবে আমি চাইব দলের সবাই যেন কম-বেশি অবদান রাখে।
সবচেয়ে বড় ব্যাপার- জুটি গড়ে তোলা। আগের ম্যাচে আমরা সে অর্থে কোনো জুটি গড়তে পারিনি। শেষ দিকে মোসাদ্দেক ও মাহমুদউল্লাহ যে জুটি করেছিল তাতে আমাদের মান বেঁচেছে; তবে জয়ের জন্য যথেষ্ট ছিল না। একটা বড় জুটি কিংবা ছোট ছোট দুই-তিনটা জুটি গড়তে পারলে বড় সংগ্রহ করা সম্ভব। আর আমাদের লেজের দিকের ব্যাটসম্যানদেরও কিছু অবদান রাখা উচিত। তাহলে একটা বড় স্কোর হয়ে যায়। তবে আমাদের যে ব্যাটিং লাইন-আপ তাতে লেজের দিকের ব্যাটসম্যানদের মাঠে নামারও কারণ দেখি না।
বোলিংয়ে গতকাল আমরা অনেক ছন্নছাড়া ছিলাম। একমাত্র মাশরাফি ছাড়া আর কেউ ভালো করতে পারেনি। এমনকি একমাত্র মাশরাফিই নিজের বোলিং স্পেল শেষ করতে পেরেছে। বোলিং ঠিকঠাক না করতে পারলে যত বড় স্কোরই হোক ডিফেন্ড করা খুব কঠিন। মোস্তাফিজের কি হয়েছে আমি জানি না, তবে ওর ছন্দে ফেরা খুব জরুরি। ও আমাদের সেরা বোলার, ও নিজের মতো খেলতে পারলে একাই ম্যাচ বের করে নিয়ে আসতে পারে। আর যেহেতু শ্রীলঙ্কায় অনেক বাঁহাতি ব্যাটসম্যান তাই আমার মতে মিরাজকে খেলানো উচিত। আগের ম্যাচে মাহমুদউল্লাহ দুই ওভার বল করে মাত্র ৬ রান দিয়েছে। তাই মিরাজ ভালো করবে বলে আমার বিশ্বাস।
Advertisement
শুধু ব্যাটিং আর বোলিংই না আমাদের ফিল্ডিংয়েও নজর দিতে হবে। গতকাল পেরেরার ক্যাচটা তাসকিন মিস না করলে তখন কিন্তু শ্রীলঙ্কা চাপে পরে যেত। তাই একটা ক্যাচ শুধু একটা ক্যাচই না পুরো ম্যাচ ঘুরিয়ে দিতে পারে। হাফ চান্সকেও কাজে লাগাতে হবে। ভালো একটা দুইটা ক্যাচ ধরলে প্রতিপক্ষও চাপে থাকে। আমাদের ফিল্ডিংয়ে শরীরী ভাষা আরও উন্নত করতে হবে। যদিও রাতারাতি এটা সম্ভব না; তবে অবশ্যই কিছু উন্নতি করা সম্ভব।
সব মিলিয়ে যদি আমরা আগের ম্যাচের ভুলগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে ভুল শুধরে মাঠে নামতে পারি তাহলে জয় আমাদের আসবে। আগের ম্যাচে আমরা নিজেদের খোলসে ছিলাম। এবার তা থেকে বের হয়ে আসার পালা। কমপক্ষে মাশরাফির জন্য হলেও শেষ ম্যাচটা জিতুক বাংলাদেশ। কাল টাইগারদের সেরা খেলাটা উচিত। বাংলাদেশ ক্রিকেটকে দুহাত ভরে দিয়েছেন মাশরাফি। তাই টি-টোয়েন্টির শেষ ম্যাচে জয় তার প্রাপ্য। আর এ দায়িত্বটা নিতে হবে দলের সবাইকে।
আরটি/এনইউ/জেআইএম
Advertisement