সিরিয়ার সম্ভাব্য রাসায়নিক হামলায় ১১ শিশুসহ কমপক্ষে ৫৮ জন নিহত হওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসতে যাচ্ছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। খবর বিবিসির।
Advertisement
মঙ্গলবার সিরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ইদলিব প্রদেশে রাসায়নিক গ্যাস হামলার পর বিশ্বজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। হামলার জন্য সিরিয়ার সরকারকে দায়ী করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য বিশ্ব শক্তি। তবে কোনো রকম রাসায়নিক ব্যবহারের কথা অস্বীকার করেছে দামেস্কের কর্মকর্তারা।
হামলার কারণে বেলিজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসের একটি সম্ভাব্য সম্মেলন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ওই সম্মেলনে সিরিয়ায় ত্রাণ সহায়তা সরবরাহের উদ্যোগে ৭০টি দেশের আলোচনার কথা রয়েছে। সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীরা সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের কারণে আটকা পড়া হাজার হাজার বেসামরিক নাগরিকের জন্য মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করতে চান।
ছয় বছর পেরিয়ে গেলেও সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের কোনো রাজনৈতিক সমাধানের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।
Advertisement
জাতিসংঘে জানিয়েছে, প্রায় ৫০ লাখ সিরীয় দেশটি থেকে পালিয়ে অন্যান্য দেশে আশ্রয় নিয়েছে। ৬০ লাখেরও বেশি নাগরিক উদ্বাস্তু হয়েছেন। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, গৃহযুদ্ধে দেশটিতে এ পর্যন্ত আড়াই লাখেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।
বিষয়টি নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠক ডেকেছে ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য। বৈঠকটি বুধবার অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
জাতিসংঘে নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূত ম্যাথিউ রাইক্রফট এই হামলাকে সিরিয়ার শান্তির জন্য অত্যন্ত খারাপ খবর হিসেবে বর্ণনা করেছেন। নিউ ইয়র্কে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, এই হামলার ঘটনা একটি যুদ্ধাপরাধ।
যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক পর্যবেক্ষক সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস হামলাটিতে ৫৮ জন নিহত ও ৩শ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে। ওই হামলায় ১১ শিশু নিহত হয়েছে বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি।
Advertisement
ঘটনাস্থল থেকে ধারণ করা ভিডিও ফুটেজে বেসামরিক নাগরিকদের মুখ দিয়ে ফেনা বের হতে দেখা গেছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, আহতদের চিকিৎসায় নিয়োজিত চিকিৎসাকেন্দ্রগুলোতে বিমান হামলা চালানো হয়েছে।
হামলায় কী ধরনের রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়েছে তা নিশ্চিত না হওয়া গেলেও সিরীয় সরকার বিরোধীদের দাবি, হামলায় রাসায়নিক গ্যাস ব্যবহার করা হয়েছে।
এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই জঘণ্য কাজের জন্য সিরীয় সরকারের প্রতি নিন্দা জানিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন নির্দয়, নির্লজ্জ এ বর্বরতার জন্য সিরীয় সরকারকে দায়ী করছেন।
সিরিয়া বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ দূত স্টেফান ডি মিসতুরা বলেছেন, এটি একটি ভয়াবহ হামলা এবং এই হামলার জন্য দায়ীদের পরিষ্কারভাবে শনাক্ত করে তাদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।
কেএ/টিটিএন/পিআর