দেশজুড়ে

পা ধরে মাফ চাওয়ার ঘটনায় ভাণ্ডারিয়ার শিক্ষক ও প্রশাসন মুখোমুখি

ভাণ্ডারিয়া সরকারি কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মোনতাজ উদ্দিনের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আশ্রাফুল ইসলামের পা ধরে ক্ষমা চাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভাণ্ডারিয়ার প্রশাসন ও শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছেন। বিসিএস সাধারণ  শিক্ষা সমিতি নেতৃবৃন্দ  ভাণ্ডারিয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ এবিএম ফারুকুজ্জামান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ মনির হোসেন হাওলাদার ও  সহকারী কমিশনার ভূমি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আশ্রাফুল ইসলামের অপসারণসহ শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। শিক্ষা ক্যাডারের দাবি শিক্ষককে লাঞ্ছিত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে  ব্যবস্থা না নিলে আগামী ২৬ এপ্রিলের পর সারা দেশের সরকারি কলেজে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেয়া হয়। অন্যথায় ১ মে বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণার হুমকি দেয়া হয়। এদিকে গত ১৭ এপ্রিল প্রশাসনের বিরুদ্ধে কলেজের সামনে সড়কে মানববন্ধন করা হয়। ২১এপ্রিল পরীক্ষাকেন্দ্রে শিক্ষক লাঞ্ছনার প্রতিবাদ জানিয়ে সরকারি কলেজ শিক্ষক মিলনায়তনে এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি প্রফেসর নাসরিন বেগম, সহ সভাপতি ফজলে রাব্বী, মহাসচিব আইকে সলিমউল­াহ খন্দকার, যুগ্ন মহাসচিব ড.মাসুদ রানা, বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. জিয়াউল হক, বিএম কলেজের অধ্যক্ষ ফজলুল হক, ভাণ্ডারিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান আতিকুল ইসলাম উজ্জল তালুকদার ও আওয়ামী লীগের উপজেলা সভাপতি মো. ফাইজুর রশিদ খসরু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। সমাবেশ শেষে কলেজের সামনে দ্বিতীয় দিনের মতো মানববন্ধন করা হয়। এতে ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের শিক্ষক নেতারাসহ স্থানীয় শিক্ষক, সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ এবং যুবলীগের উপজেলা নেতারা অংশ নেন। বুধবার স্থানীয় সরকার সমর্থক ও শিক্ষার্থীরা ইউএনও ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। পরীক্ষা কেন্দ্রে অপ্রীতিকর ঘটনার বিষয় তদন্ত করার জন্য পিরোজপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(রাজস্ব)মনিরুজ্জামান তালুকদারকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) একই ঘটনায় আরো একটি তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। এঘটনায় বরিশাল শিক্ষাবোর্ড আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।  এ ঘটনায় বাংলাদেশ কলেজ- বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, বরিশাল আঞ্চলিক কমিটি , বরিশাল জেলা কমিটি এবং বরিশাল মহানগর কমিটির নেতারা তীব্র নিন্দা, ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা অবিলম্বে সংশ্লিষ্ট ইউএনও ও ম্যাজিস্ট্রেটের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানান। উলে­খ্য, ৯ এপ্রিল ভাণ্ডারিয়া সরকারি কলেজ কেন্দ্রে এইচএসসি ইংরেজী প্রথমপত্র পরীক্ষা চলাকালে ২নং কক্ষে দুই পরীক্ষার্থী পাশাপাশি বসে উত্তরপত্রে লেখাকে কেন্দ্র করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আশ্রাফুল ইসলাম ও কক্ষপরিদর্শক সরকারি কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মোনতাজ উদ্দিনের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। এক পর্যায় মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে কক্ষপরিদর্শকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ নিলে আশ্রাফুল ইসলামের পা ধরে অধ্যাপক মোনতাজ উদ্দিনের মাফ চাওয়ার ঘটনাটি ঘটে।এসআরজে

Advertisement