কৃষি ও প্রকৃতি

যেভাবে চাষ করবেন জার্মান ঘাস

গবাদি পশু পালনের জন্য ঘাস গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। যার জন্য ঘাস চাষ করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। আর জার্মান ঘাস এক ধরনের স্থায়ী ঘাস। এর কাণ্ডের গিটে শিকড় থাকে এবং পারা ঘাসের মতো লাগানোর পর ঘাসের লতা পুরো জমিতে ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘাস গরুর খুব পছন্দ। দ্রুত বর্ধনশীল ও উচ্চ ফলনশীল এ ঘাস অাপনিও চাষ করতে পারেন।

Advertisement

প্রাপ্তিস্থানজার্মান ঘাস থেকে ভালো বীজ উৎপাদন হয় না। তাই কাটিং ও মোথা দ্বারা বংশ বিস্তার করতে হয়। জেলা বা উপজেলার প্রাণিসম্পদ অফিসে বিনামূল্যে কাটিং বা মোথা বিতরণ করা হয়। সেখান থেকে সংগ্রহ করে চাষ করতে পারেন।

জমি নির্বাচনজার্মান ঘাস নিচু ও জলাবদ্ধ জমিতে চাষ করা যায়। এমনকী জমানো পানিতে চাষ করা যায়। যে সব জমিতে সারা বছর পানি থাকে অথবা কিছুকাল ডুবে থাকে, সে সব জমিতে এ ঘাস চাষ করা যায়। এছাড়া খাল, বিল, মজা পুকুর, নদীর ধার, ডোবা, নালা এই ঘাস চাষের জন্য উপযুক্ত।

চারা তৈরিপরিপক্ক গাছের কমপক্ষে ৩টি গিট নিয়ে কাটিং করতে হয়। সমতল শুকনা জমিতে লাগালে কয়েকটা চাষ দিয়ে আগাছামুক্ত করে নিতে হবে। এরপর নির্দিষ্ট দূরত্বে কোদাল দিয়ে গর্ত করে চারা বা কাটিং রোপন করতে হবে। কাটিংগুলো কাত করে অর্থাৎ ৪৫-৬০ ডিগ্রি কোণে এমনভাবে লাগাতে হবে যেন কাটিংয়ের একটি গিট মাটির নিচে, একটি মাটির সমান এবং অপর গিট মাটির উপরে থাকে।

Advertisement

রোপণমার্চ থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এ ঘাস রোপণ করা হয়। রোপণের সময় সারি থেকে সারি গাছের দূরত্ব হবে ১-১.৫ ফুট।

সার প্রয়োগজার্মান ঘাস উর্বর জমিতে ভালো হয়। ভালো ফলনের জন্য জমিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে গোবর দিতে হবে এবং চারা লাগানোর ২-৩ সপ্তাহ পর একর প্রতি ৪০ কেজি ইউরিয়া ছিটিয়ে দিতে হবে। প্রতিবার ঘাস কাটার পর একর প্রতি ৩৫-৪০ কেজি ইউরিয়া সার উপরি প্রয়োগ করতে হবে।

ঘাস কাটারোপণের ৫০-৬০ দিন প্রথম কাটার উপযোগী এবং এরপর প্রতি ৪/৫ সপ্তাহ পর পর কাটা যায়। বাংলাদেশের আবহাওয়ায় এ ঘাস মার্চ থেকে অক্টোবর পর্যন্ত বাড়ে। শীতকালে এ ঘাস তেমন বাড়ে না। এ ঘাস বছরে প্রায় ৫ বার কাটা যায়। উর্বর জমিতে ও ভালো ব্যবস্থাপনায় বছরে একর প্রতি ৩০-৪৫ টন সবুজ ঘাস পাওয়া যায়।

এসইউ/পিআর

Advertisement