আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী আগামী ৬ এপ্রিল বৃহস্পতিবার থেকে রাজধানীর হাজারীবাগে থাকা সব ট্যানারি বন্ধ করে দেবেন মালিকরা। একইসঙ্গে ৬ এপ্রিলের মধ্যে সাভারে গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানি সংযোগ দেয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।
Advertisement
রোববার ধানমন্ডির রয়েল বুফে রেস্টুরেন্টে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তারা।
সংবাদ সম্মেলনে ট্যানারি মালিকদের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহীন আহমেদ বলেন, কারখানা দ্রুত স্থানান্তরের জন্য কাজ করছি। সাভারের ট্যানারি স্থানান্তরে সব কাজ শেষ করতে আরও প্রায় এক বছর সময় লাগবে।
এসময় তিনি বেশকিছু দাবি উপস্থাপন করেন। দাবিগুলো হলো- বিসিকের অব্যবস্থাপনার বিচারবিভাগীয় তদন্ত করতে হবে, হাজারীবাগের জমিতে ডিজাইন প্লান পাসের উপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে হবে, যারা চামড়া শিল্পনগরীতে প্লট পাননি তাদের প্লট দিতে হবে, অবিলম্বে সাভারের শিল্পনগরীতে গ্যাস, বিদ্যুৎসহ সব সংযোগ নিশ্চিত করতে হবে।
Advertisement
এছাড়া বিসিকের পক্ষ হতে চামড়া শিল্পনগরীতে অসম্পূর্ণ সুযোগসুবিধা ও স্থাপনার বিষয়ে প্রকৃত তথ্য সবার সামনে উপস্থাপন ও তা দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে। উদ্যোক্তারা যাতে ঋণ সুবিধা পেতে পারেন সে উদ্দেশ্যে শিল্পনগরীর প্লটের মালিকানা দলিল রেজিস্ট্রেশন দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে।
শাহিন আহমেদ বলেন, হাজারীবাগের চামড়া শিল্পের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেলে প্রায় ৫০ লাখ লোক বেকার হবে। আমরা আদালতের রায় মেনে নিচ্ছি।
এসময় তিনি আগামী ৫ এপ্রিল পর্যন্ত সব কর্মসূচি বন্ধ ঘোষণা করেন। একইসঙ্গে আগামী ৮ এপ্রিল এ শিল্প সংশ্লিষ্ট সবার অংশগ্রহণে হাজারীবাগে জনসভা করা হবে বলে জানান তিনি।
এর আগে ৩০ মার্চ হাজারীবাগে থাকা ট্যানারিগুলোর সব কার্যক্রম ৬ এপ্রিলের মধ্যে বন্ধ করা হলে জরিমানা মওকুফ করার বিষয়ে বিবেচনার কথা জানান সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। এ সময় আগামী ৯ এপ্রিল এ সংক্রান্ত পরবর্তী শুনানি গ্রহণের কথাও জানান আদালত।
Advertisement
ওই আদেশ অনুসারে রোববার সংবাদ সম্মেলন করে হাজারীবাগের ট্যানারিগুলোর কার্যক্রম বন্ধের সিদ্ধান্ত জানান ট্যানারি মালিকরা।
গত ২ মার্চ ১৫৪ ট্যানারির বকেয়া বাবদ ৩০ কোটি ৮৫ লাখ টাকা জরিমানা দুই সপ্তাহের মধ্যে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন হাই কোর্টের বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাসের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ। পরে এই আদেশ স্থগিত চেয়ে বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন ও ফিনিশড লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন আদালতে আবেদন করেন।
গত ১২ মার্চ হাজারীবাগে থাকা সব ট্যানারি কারখানা অবিলম্বে বন্ধে হাইকোর্টের নির্দেশ বহাল রাখেন আপিল বিভাগ। এর আগে ৬ মার্চ হাজারীবাগের সব ট্যানারি কারখানা অবিলম্বে বন্ধের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে কারখানাগুলোর বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানি বিচ্ছিন্ন করাসহ সব সুযোগ-সুবিধা বন্ধ করে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত।
এসআই/এসআর/জেডএ/এমএস