দেশের বিভিন্ন জেলায় পর্যটন কেন্দ্রে দর্শনার্থী আকর্ষণে মূল বাধা যাতায়াত ব্যবস্থা। এজন্য আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও পর্যটনপ্রেমীরা ওই স্থানগুলোতে যেতে পারছেন না। এমন অনেক স্থান আছে যেখানে যেতে যাতায়াত উপযোগী কোনো রাস্তাই নেই।
Advertisement
সম্প্রতি বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের আওতায় ২০ জেলার প্রায় ৩৫টি স্পটকে পর্যটক আকর্ষণীয় করে তোলার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ উদ্যোগ সফল করতে ওইসব জেলার ভাঙাচোরা রাস্তা সংস্কার জরুরি বলে মনে করছে মন্ত্রণালয়।
পুঠিয়া মন্দির
এজন্য সুনির্দিষ্ট ওইসব এলাকার নাম উল্লেখ করে রাস্তা সংস্কারের জন্য সড়ক ও জনপথ অধিদফতর (সওজ), স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডকে চিঠি দিয়েছে পর্যটন মন্ত্রণালয়।
Advertisement
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, এসব রাস্তা সংস্কারে নতুন করে প্রকল্প গ্রহণের প্রয়োজন নেই। কারণ এলাকাভিত্তিক সড়ক উন্নয়নে জেলাভিত্তিক এলজিইডির জন্য ১৫টি, সওজের জন্য চারটি এবং পাউবোর জন্য একটি প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত আছে। প্রকল্পগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন হলে পর্যটন এলাকাগুলোয় সহজে যাতায়াত করা যাবে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের ছোট সোনা মসজিদ
এ প্রসঙ্গে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন জাগো নিউজকে বলেন, আমরা পর্যটন খাতকে এগিয়ে নিতে বদ্ধপরিকর। কিন্তু কিছু সমস্যার কারণে এগোনো যাচ্ছে না। এর মধ্যে অবকাঠামোগত সমস্যা অন্যতম। এজন্য আমরা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোতে চিঠি দিয়েছি, যেন পর্যটন স্পটে যাতায়াতের রাস্তা দ্রুত সংস্কারে উদ্যোগ নেয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, দেশের পর্যটন খাত থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ আয় করা সম্ভব। বিশ্বের অনেক দেশ এখন পর্যটন খাত দিয়েই এগিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া দেশে প্রচুর মানুষ এখন ভ্রমণপিপাসু। কিন্তু যাতায়াত ও অবকাঠামোগত সমস্যার কারণে তারা বিদেশ পাড়ি দিচ্ছেন। এ অবস্থায় সড়কগুলো দ্রুত সংস্কার হলে আমরা স্পটগুলো উন্নয়নে পদক্ষেপ নেব।
Advertisement
সিলেটের রাতারগুল
মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, ঢাকার ধামরাইয়ে পর্যটন আকর্ষণে রয়েছে কাঁসা, মৃৎশিল্প ও মাধব মন্দির। ঢাকা-আরিচা সহাসড়কের ধামরাই অংশে ঢুলিভিটা থেকে মাধব মন্দির পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার রাস্তা এলজিইডির অধীনে সংস্কার করতে হবে।
পর্যটন আকর্ষণে অন্যতম কেন্দ্রবিন্দুতে আছে রাজশাহীর পুঠিয়া রাজবাড়ী, মন্দির ও বাঘা মসজিদ। এসব স্থানে চলাচলের সুবিধাজনক রাস্তা নেই। চাঁপাইনবাবগঞ্জের ছোট সোনামসজিদ, তোহাখানা, দাফেলউল বালাদীঘি ও শাহ নেয়ামত উল্যাহ (রহ.) মাজার, দারসবাড়ী মসজিদ ও মাদরাসা বিখ্যাত। এসব স্থানের কিছু জায়গায় রাস্তা নেই আবার অনেক স্থানে রাস্তা প্রশস্ত করতে হবে।
গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধ
সিলেটের লালাখাল, বাইক্কা বিল, মাধবপুর লেক, টাগুয়ার হাওরের রাস্তার অধিকাংশই চলাচলের অনুপযোগী। সংস্কার দরকার পটুয়াখালীতে মিস্ত্রিপাড়ার রাখাইন বৌদ্ধ মূর্তি, গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধে যাওয়ার রাস্তাটিও। মেরামত করতে হবে যশোরের কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের বাড়ি।
এছাড়া সংস্কার করতে হবে শেরপুর, ঠাকুরগাঁও, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নাটোর, মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ, গোপালগঞ্জ ও সিরাজগঞ্জ এলাকার অনেক রাস্তা। চলাচল উপযোগী করতে হবে কক্সবাজারের হোটেল শৈবালসংলগ্ন এলাকা। সিলেটের রাতারগুল, বিছনাকান্দি, ভোলাগঞ্জ, জাফলং, তামাবিলের সড়কটিও যান চলাচলের অনুপযোগী। জাফলং জিরোপয়েন্ট, মায়াবী ঝর্ণা, খাসিয়াপল্লী, জাফলং চা বাগানের সড়ক সংস্কার করতে অভিমত দিয়েছে পর্যটন কর্পোরেশন।
যশোরে কবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের বাড়ি
পাশাপাশি রংপুর আর কে রোড, পটুয়াখালীর গঙ্গামতির চর, লেম্বুর চর ও শুঁটকিপল্লী এলাকার অনেক রাস্তা দ্রুত পর্যটকবান্ধব করতে তাগিদ দিয়েছে পর্যটন কর্পোরেশন।
এমএ/এমএআর/পিআর