বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ শহিদ এন এম নাজমুল আহসানকে স্বাধীনতা পুরস্কার (মরণোত্তর) ২০১৭ প্রদান করা হয়। তাঁকে নিয়ে আজকের আয়োজন-
Advertisement
এন এম নাজমুল আহসান ১৯৪৯ সালে শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি তারাগঞ্জ পাইলট উচ্চবিদ্যালয় থেকে ১৯৬৫ সালে কৃতিত্বের সঙ্গে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এরপর ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি প্রকৌশল ও কারিগরি অনুষদে ভর্তি হন। ছাত্রাবস্থাতেই তিনি সৃষ্টিশীল সাহিত্যকর্ম, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড ও ক্রীড়াঙ্গনে সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন। তিনি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবা চ্যাম্পিয়ন। তিনি বেশকিছু ছোটগল্প ও কবিতা লিখে গেছেন।
ষাটের দশকের শেষ পর্বে বাঙালির স্বাধিকার আদায়ের আন্দোলনে নাজমুল আহসান সম্পৃক্ত হন। ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন নিবেদিত প্রাণ এই দেশপ্রেমিক। বিশ্ববিদ্যালয়ের পঞ্চম বর্ষে অধ্যয়নরত অবস্থায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন।
মুক্তিযুদ্ধের সময় এন এম নাজমুল আহসান ছিলেন ১১ নম্বর সেক্টরের ১ নম্বর কোম্পানির কোম্পানি কমান্ডার। একাত্তরের ৬ জুলাই নালিতাবাড়ী, ঝিনাইগাতী, শ্রীবর্দী ও বকশীগঞ্জ সীমান্ত এলাকায় অগ্রসরমান পাক-বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে তাঁর নেতৃত্বে গুরুত্বপূর্ণ কাটাখালী ব্রিজ ধ্বংস করা হয়। এই সফল অপারেশনের পরে পাক-সেনাদের সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে মাত্র ২২ বছর বয়সে এই সাহসী বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহাদত বরণ করেন।
Advertisement
এন এম নাজমুল আহসানের মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদান এবং মহিমান্বিত আত্মত্যাগের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি হলের নামকরণ এবং নালিতাবাড়ী থানা সদরে ‘নাজমুল স্মৃতি মহাবিদ্যালয়’ নামে একটি ডিগ্রি কলেজ স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া তাঁর স্মৃতির স্মরণে ‘শহীদ মুক্তিযোদ্ধা নাজমুল আহসান স্মারক গ্রন্থ’ এবং ‘জল জোছনায় নাজমুল’ শীর্ষক দু’টি বই প্রকাশিত হয়।
এসইউ/এমএস