সিলেটের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি এলাকায় ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করেছে প্রশাসন। একই সঙ্গে সিলেট-ফেঞ্চুগঞ্জ সড়কেও যান চলাচল শুরু হয়েছে। শিববাড়ি এলাকায় বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ দেয়া হয়েছে। তবে এখনো স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক কাটেনি। আতিয়া মহল ঘিরে এখনো উদ্বিগ্ন এলাকার মানুষ।
Advertisement
আতিয়া মহলে নিহত চার জঙ্গির মধ্যে দুইজনের মরদেহ এখনো পড়ে আছে ভবনের ভেতরে। মরদেহগুলো ময়নাতদন্ত করতে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর জন্য ঢাকা থেকে বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল আসার অপেক্ষায় রয়েছে পুলিশ।
শুক্রবার রাত ৮টা পর্যন্ত সেনা কমান্ডোদের অপরেশন ‘টোয়াইলাইট’ শেষ হওয়ার ৭৪ ঘণ্টা পার হলেও মরদেহ দুটি এখনো পড়ে আছে আতিয়া মহলে।
এই ৭৪ ঘণ্টার মধ্যে মরদেহ দুটি উদ্ধার করতে পারেনি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। পুলিশ বলছে, পুলিশের বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল ঢাকা থেকে এসে ভবনটিকে ঝুঁকিমুক্ত করার পরপরই মরদেহগুলো উদ্ধার করা হবে।
Advertisement
সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (গণমাধ্যম) জেদান আল মুসা শুক্রবার রাতে জাগো নিউজকে জানান, মরদেহগুলোর শরীরে ‘সুইসাইডাল’ ভেস্ট ছিল। সেগুলো নিষ্ক্রিয় করা হলেও আশপাশে আরও অনেক বিস্ফোরক থাকতে পারে। তাই মরদেহগুলো স্থানান্তর ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় আমরা ঢাকার বোমা বিশেষজ্ঞদের অপেক্ষা করছি। আশা করছি, শনিবার পুলিশের বোমা নিষ্কিয়কারী দল ঢাকা থেকে আসার পর মরদেহগুলো উদ্ধার করা সম্ভব হবে।
অপরদিকে, আতিয়া মহল থেকে উদ্ধার হওয়া ২৮ পরিবারের লোকজন বাসায় ফিরতে চাচ্ছেন। পুলিশ তাদেরকে নিরাপদ স্থানে থাকার পরামর্শ দিয়েছে। এখনই তারা বাড়ি ফিরতে পারবেন না বলে জানানো হয়েছে।
এদিকে, গত ২৫ মার্চ রাতে অপারেশন ‘টোয়াইলাইট’ চলাকালে আতিয়া মহলের পাশে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় সাতজন নিহত ও ৪৬ জন আহত হওয়ার কোনো রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। তারা বলছেন, নিহতদের পরিবার ও আহতদের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। ঘটনাস্থলের ভিডিও সংগ্রহ করার চেষ্টা চলছে। খুব শিগগিরই বোমা বিস্ফোরণের রহস্য বেরিয়ে আসবে বলে পুলিশ আশাবাদী।
গত শুক্রবার থেকে আতিয়া মহলে অভিযান শুরু করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। পর দিন তাদের সঙ্গে যোগ দেন সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডোরা। টানা পাঁচ দিনের অভিযান শেষে গত মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলন করে অভিযান সমাপ্তের ঘোষণা দেয় সেনাবাহিনী।
Advertisement
অভিযানে আতিয়া মহলের ভেতরে থাকা এক নারী ও তিন পুরুষ জঙ্গি নিহত হয়। নিহত তিন পুরুষ জঙ্গির মধ্যে জেএমবির শীর্ষ সন্ত্রাসী মাঈনুল ইসলাম ওরফে মুসা রয়েছেন বলে ধারণা করছে কাউন্টার টেররিজম ইউনিট ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।
ছামির মাহমুদ/আরএআর/পিআর