দেশজুড়ে

শালবন বিহার কেন্দ্রে এজেন্ট নেই বিএনপির

কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন (কুসিক) নির্বাচনে বিএনপি মেয়র প্রার্থীর এজেন্ট ছাড়াই শালবন বিহার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। এছাড়া ওই কেন্দ্রে বিএনপির কোনো ভোটারদের প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। নির্বাচন কমিশনের তালিকা অনুযায়ী এই কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ।

Advertisement

বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে কুসিক নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।

সকাল সাড়ে ৮টায় কুমিল্লা সিটির সদর দক্ষিণের কেন্দ্র সরেজমিনে দেখা গেছে, সেখানে পুরুষ ও নারী ভোটারদের উপস্থিতি সন্তোষজনক হলেও সবাই নৌকার সমর্থক। সেখানে বিএনপির মেয়র প্রার্থীর পক্ষে কোনো ভোটার দেখা যায়নি। এছাড়াও কেন্দ্রের গাবতলীর বেলতলী রোডে ছাত্রলীগ পরিচয় দেয়া কয়েকজন যুবককে রাস্তা আটকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। তারা ভোটারদের কেন্দ্রে যেতে বাধা দিচ্ছিল।

আর ভোটকেন্দ্রে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বলে দিচ্ছেন, ‘আপনারা সবাই নৌকা, ঠেলাগাড়ি ও চশমা মার্কায় ভোট দেবেন’।

Advertisement

সেখানে দায়িত্বরত প্রিজাইডিং কর্মকর্তা মো. লোকমান হোসেন সরকার জাগো নিউজকে বলেন, শালবন বিহার প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে বিএনপির কোনো এজেন্ট নেই। তারা এজেন্টের জন্য আবেদনই করেননি। এছাড়া তিনি দাবি করেন, সকাল থেকেই সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে ভোটগ্রহণ চলছে।

সেখানে সাংবাদিকদের সামনেই ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের মিস্টি কুমড়া প্রতীকের কাউন্সিলর প্রার্থী মো. ফজল খানকে ধমক দেন দায়িত্বরত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। দায়িত্বরত একজন পুলিশ উপ-পরিদর্শক ওই প্রার্থীকে বলেন, এখান থেকে চলে যান, নতুবা আপনাকে আটকে ফেলা হবে।

পরে জাগো নিউজকে ফজল খান বলেন, আমাদের উপর খুব হয়রানি যাচ্ছে। কেন্দ্রে আমাদের ঢুকতে দিচ্ছে না। আমাদের সমর্থকরা কেন্দ্রে ঢুকতে পারছে না।

সেখানে ভোট দিতে আসা বাবুল মিয়া জানান, তিনি জাতীয় পরিচয়পত্র দেখানোর পরও প্রথমে ভোট দিতে দেয়নি। পরে জোরাজুরি করার পর ভোট দেন।

Advertisement

প্রতিকূল পরিবেশে ভোট দেয়া শেষে তাসলিমা বেগম বলেন, কোনো রকমে ভোট দিতে পেরেছি। এখন কেন্দ্র থেকে দূরে এসে দাঁড়িয়েছি ছেলের জন্য। মনে হচ্ছে এ কেন্দ্রে গণ্ডগোল হবে। ছেলের জন্য তাই দুশ্চিন্তা করছি।

পরে খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ ও বিজিবির টহল বেড়ে যায়। সকাল সাড়ে নয়টা দিকে পুলিশের ধাওয়ার পর ভোটাররা অনেকেই কেন্দ্র ছেড়ে যেতে শুরু করেন। ভোটকেন্দ্রমুখী ভোটাররাও কেন্দ্রের বেশ দূরে আতঙ্কিত চোখে দাঁড়িয়ে থাকেন। এসময় ভোটারদের উদ্দেশে হ্যান্ড মাইকে পুলিশ সদস্যরা বলতে থাকেন ‘ভোটাররা ভোটার স্লিপ সংগ্রহ করে কেন্দ্রের দিকে আসেন, কোনো ভয় নাই।

এ সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের আঞ্জুম সুলতানা সীমা, বিএনপির মনিরুল হক সাক্কু, জেএসডি’র শিরিন আক্তার ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মামুনূর রশীদ প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন। সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে দুই শতাধিক প্রার্থী রয়েছেন।

এ সিটিতে সাধারণ ওয়ার্ড সংখ্যা ২৭টি, সংরক্ষিত ওয়ার্ড ৯টি, ভোটকেন্দ্র ১০৩টি এবং ৬২৮টি ভোট কক্ষে একজন মেয়র, ৯ জন সংরক্ষিত কাউন্সিলর ও ২৭ জন সাধারণ কাউন্সিলর নির্বাচনে ভোট দিচ্ছেন নগরের ২ লাখ ৭ হাজার ৫৬৬ জন বাসিন্দা। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ২ হাজার ৪৪৭ জন এবং নারী ভোটার ১ লাখ ৫ হাজার ১১৯ জন।

এইচএস/এআরএস/পিআর