আইন-আদালত

উপঢৌকনে দুর্নীতি : এরশাদের আপিল শুনানি বৃহস্পতিবার

উপহার সামগ্রীর অর্থ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা না দেয়ার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় বিচারিক আদালতের সাজার বিরুদ্ধে সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ও সরকারের পক্ষে করা পৃথক দুটিসহ মোট তিনটি মামলার আপিলের শুনানির জন্য বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট।

Advertisement

বুধবার হাইকোর্টের বিচারপতি রুহুল কুদ্দুস ও বিচারতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ দিন ঠিক করে বলেন, মামলাটি শুনানির জন্য আগামীকাল কজলিস্টে থাকবে।

এর আগে গত ১৭ মার্চ ওই বেঞ্চ নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহা। গত ২৩ মার্চ নির্ধারিত দিনে রায় ঘোষণা না করে হাইকোর্টের বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুসের একক বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে এরশাদের পক্ষে অ্যাডভোকেট শেখ সিরাজুল ইসলাম এবং রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নজিবুর রহমান।

এ আদেশ দেয়ার আগে মামলার নথিপত্র দেখে আদালত বলেন, এরশাদের আপিল ছাড়াও সরকারের পক্ষ থেকে করা আরও দুটি আপিল বিচারাধীন। ওই দুটি আপিলে সরকার এরশাদের সাজা বৃদ্ধির আবেদন জানিয়েছে।

Advertisement

এ অবস্থায় নিম্ন আদালতের সাজার রায় বাতিলের জন্য এরশাদ যে আবেদন করেছেন সেটির ওপর রায় ঘোষণা করলে তা যুক্তিসঙ্গত হবে না। অতএব ন্যায়বিচারের স্বার্থে তিনটি আপিলের ওপর একসঙ্গে শুনানি করে রায় দেয়াটা হবে যুক্তিযুক্ত। এ বিবেচনায় তিনটি আপিলের ওপর প্রয়োজনীয় আদেশের জন্য নথি প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠানো হলো। এর আগে গত ৯ মার্চ এ বিষয়ে রায় ঘোষণার জন্য ২৩ মার্চ দিন ধার্য করেছিলেন হাইকোর্ট।

২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর দীর্ঘ ২৪ বছর পর দুর্নীতি মামলায় সাজার বিরুদ্ধে এরশাদের আপিল শুনানি শুরু হয়। পরে সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদের সাজার বিরুদ্ধে আপিল শুনানি শুরু করতে উদ্যোগ নেয় দুর্নীতি দমন কমিশন। এর আগে ২০১২ সালের ২৬ জুন সাজার রায়ের বিরুদ্ধে এরশাদের আপিলে পক্ষভুক্ত হয় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আপিলে পক্ষভুক্ত হতে দুদকের করা এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ওইদিন বিচারপতি খোন্দকার মুসা খালেদ ও বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের বেঞ্চ দুদকের আবেদন মঞ্জুর করেন।

প্রসঙ্গত, ১৯৮৩ সালের ১১ ডিসেম্বর থেকে ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি থাকাকালে বিভিন্ন উপহারসামগ্রী রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা না দেয়ার অভিযোগ রয়েছে এরশাদের বিরুদ্ধে। এ অভিযোগে ১৯৯১ সালের ৮ জানুয়ারি তৎকালীন দুর্নীতি দমন ব্যুরোর উপপরিচালক সালেহ উদ্দিন আহমেদ সেনানিবাস থানায় মামলাটি করেন।

মামলায় এক কোটি ৯০ লাখ ৮১ হাজার ৫৬৫ টাকা আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ আনা হয়। ওই মামলায় ১৯৯২ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের রায়ে এরশাদের তিন বছরের সাজা হয়। একই সঙ্গে ওই অর্থ ও একটি টয়োটা ল্যান্ডক্রুজার গাড়ি বাজেয়াপ্ত করারও নির্দেশ দেয়া হয়। এই রায়ের বিরুদ্ধে এরশাদ ১৯৯২ সালে হাইকোর্টে আপিল করেন। আদালত আপিল গ্রহণ করে রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত করেন ও নিম্ন আদালতের নথি তলব করেন।

Advertisement

এফএইচ/ওআর/পিআর