অক্লান্ত পরিশ্রম আর বক্স অফিস সাফল্য দিয়ে গত ১০ বছর ধরে যিনি ঢালিউড সাম্রাজ্যের সিংহাসনে বসে আছেন তিনি শাকিব খান। তাকে ভালোবেসে কেউ কেউ ঢালিউড কিং বলে ডাকেন।
Advertisement
আজ তার জন্মদিন। ১৯৮৩ সালের ২৮ মার্চে তিনি ঢাকার নারায়ণগঞ্জ জন্মগ্রহণ করেন। দেশ সেরা এ নায়কের জন্মদিনে জাগো নিউজের পক্ষ থেকে রইলো শুভেচ্ছা।
তবে এবারের জন্মদিনে শাকিবকে কাছে পাচ্ছেন না তার কাছের মানুষেরা। শাকিবও নিশ্চয়ই মন খারাপি নিয়ে শুটিং করছেন কলকাতায়। ভেঙ্কটেশ ফিল্মসের প্রযোজনায় একটি ছবির শুটিং নিয়ে সেখানে ব্যস্ত আছেন তিনি। তাই ইচ্ছে থাকলেও নিজের প্রিয় মানুষদের সাথে জন্মদিনের কেক কাটতে পারছেন না শাকিব।
তবে কলকাতাতেই ঘরোয়া পরিসরে জন্মদিনের প্রথম প্রহরে শাকিব কেক কেটেছেন বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত সহকারি মনির। আজ সারা দিনভর শুটিংয়েই সময় দেবেন এই নায়ক। নাম ঠিক না হওয়া কলকাতার ওই ছবিটিতে শাকিবের নায়িকা হিসেবে আছেন কলকাতার নুসরাত ও শায়ন্তিকার বিপরীতে একটি ছবিতে।
Advertisement
চিত্রনায়ক শাকিবের ক্যারিয়ার ঘেঁটে দেখা যায়, দেড় দশকেরও বেশি সময় ধরে অভিনয় করে চললেও কিং খান হিসেবে শাকিবের উত্থানটা ২০০৮ সালের দিকে। তারপর থেকে ঢাকাই ছবির শীর্ষ নায়ক তিনি। বলা হয়ে থাকে তিনিই ইন্ডাস্ট্রি! তাকে ঘিরেই এখানে টাকা লগ্নি হয়; ব্যবসার বীজ বোনেন প্রযোজক-হল মালিকরা। অনেক নতুন মুখ আসে আবার হারিয়েও যাচ্ছে। কিন্তু শাকিব বহাল তবিয়তে রাজার আসনে বসে আছেন বাংলা ছবির নায়কদের রাজত্বে।
এই যে চলচ্চিত্রের মন্দার বাজার তবুও তিনি আশা জাগাতে পারেন। এটাই শাকিবের সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব। হয়তো অনেক সমালোচনা আছে- অভিনয়ের, গল্পের, চরিত্র বাছাইয়ের, তবু তিনি হাল ধরে আছেন ইন্ডাস্ট্রির। সমসাময়িক প্রায় সব প্রবীন-নবীন নির্মাতার সাথেই কাজ করেছেন তিনি। নায়ক হয়েছেন মৌসুমী-শাবনূর থেকে শুরু করে আজকের নবাগতা কয়েকজন নায়িকার সঙ্গেও। দুইবারের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জয়ী শাকিবের আরো এক পরিচয় হলো তিনি চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতির মতো গুরু দায়িত্ব পালন করছেন।
শাকিব খানের প্রকৃত নাম মাসুদ রানা। তার বাবা ছিলেন একজন সরকারী চাকুরীজীবি। মা গৃহিণী। তারা এক ভাই ও এক বোন। শাকিব খানের ইচ্ছে ছিল ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার হবার। মনের অজান্তেই অভিনয়ের প্রতি ঝোঁক চলে আসে তার। এরপর দর্শকের ভালবাসা, বিনোদনের প্রতি নিজের ভালোলাগা, সবকিছু মিলিয়েই এখন তিনি বেশ আনন্দের সঙ্গে অভিনয় চালিয়ে যাচ্ছেন।
আবুল খায়ের বুলবুলের পরিচালনায় শাকিবের প্রথম ছবি ‘সবাইতো সুখী হতে চায়’। ছবিটির শুটিং চলাকালীনই শাকিব খানের সুনাম ছড়িয়ে পড়ে ঢালিউডের পরিচালক-প্রযোজকদের মাঝে। এটা ১৯৯৯ সালের কথা। সিনেমা হলে শাকিব খানের মুক্তিপ্রাপ্ত প্রথম ছবি সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত ‘অনন্ত ভালোবাসা’। ১৯৯৯ সালের ২৮ মে ‘অনন্ত ভালোবাসা’ ছবিটি মুক্তি পায়। এ ছবিতে তার বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনয় শিল্পী মৌসুমীর ছোট বোন ইরিন। কিন্তু এ ছবিটি শাকিবকে নায়ক হিসেবে খ্যাতি এনে দিতে না পারলেও পরবর্তীতে বিভিন্ন ব্যবসা সফল সিনেমার কারণে তিনি দ্রুত সবচেয়ে সফল এবং জনপ্রিয় নায়ক হয়ে উঠেন।
Advertisement
অভিনয়ের স্বীকৃতি হিসেবে ২০১২ সালে ‘ভালোবাসলেই ঘর বাঁধা যায় না’ ও ২০১৪ সালে ‘খোদার পরে মা’ এর জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন শাকিব খান।
এদিকে, শাকিবের অভিনীত যৌথ প্রযোজনার ছবি নবাব আগামী ঈদে মুক্তি পাবে। এছাড়া বৈশাখে তার অহংকার নামের একটি ছবি মুক্তি পাওয়ার কথা রয়েছে।
তবে সম্প্রতি দেশের প্রযোজক ও পরিচালকদের পাশ কাটিয়ে কলকাতার ছবি করাকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন বলে শাকিবের সমালোচনায় মত্ত ঢাকাই ইন্ডাস্ট্রি। কেউ কেউ অবশ্য এটিকে দেখছেন শাকিবের একটি যুদ্ধ হিসেবেই। শাকিব নিজ দেশের চলচ্চিত্রকে বিদেশের বাজারে ব্র্যান্ডিং করছেন। এনই/এলএ