খেলাধুলা

বাংলাদেশের শততম টেস্ট ঘিরে আইসিসির সন্দেহ

বাংলাদেশের গৌরবময় শততম টেস্ট ঘিরে সন্দেহের কালোমেঘ। কলম্বোর পি সারা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা টেস্ট সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ ঘিরে ফিক্সিংয়ের সন্দেহ করা হচ্ছে। এ নিয়ে শ্রীলঙ্কার এক ক্রিকেটারকে জিজ্ঞাসাবাদও করেছেন আইসিসির অ্যান্টিকরাপশন ইউনিটের (আকসু) কর্মকর্তারা। তবে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আকসুই জানিয়েছে, শ্রীলঙ্কান ওই ক্রিকেটারের কাছ থেকে এখনও সন্দেহজনক কিছু পাওয়া যায়নি। তবে আরও তদন্ত তারা চালিয়ে যাবে। শ্রীলঙ্কার গণমাধ্যম দ্য সানডে টাইমস জানিয়েছে এ খবর।

Advertisement

পি সারা ওভালে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওই ম্যাচটি ছিল বাংলাদেশের শততম টেস্ট। গৌরবময় এই টেস্টেই ৪ উইকেটে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়েছে টাইগাররা। এরপরই উঠল ফিক্সিংয়ের সন্দেহের বিষয়টি। দ্য সানডে টাইমস জানিয়েছে, সন্দেহের সূত্রপাত একটি ফোন কল থেকে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে লঙ্কান টেস্ট দলের এক ক্রিকেটারকে ফোন করেছিলেন এক ভক্ত। ওই ফোন কলেরই কিছু কথোপকথন সন্দেহজনক মনে হয়েছে আকসুর কাছে।

শ্রীলঙ্কার টেস্ট দলে থাকা ওই ক্রিকেটারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে থাকা ভক্তের ফোনালাপের বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে বলে স্বীকার করেছেন আইসিসি অ্যান্টি করাপশন অ্যান্ড সিকিউরিটি ইউনিটের (আকসু) শ্রীলঙ্কান কর্মকর্তা লক্ষ্মণ ডি সিলভা। তিনি দ্য সানডে টাইমসকে জানিয়েছেন, ‘হ্যাঁ, আমরা যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা একটি ফোন কলের ভিত্তিতে একজন ক্রিকেটারকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। অন্য একজন খেলোয়াড় বিষয়টা কর্তৃপক্ষ ও আইসিসি অ্যান্টি করাপশন কর্মকর্তাদের নজরে আনেন। জিজ্ঞাসাবাদের সময় সেই ক্রিকেটারও উপস্থিত ছিলেন। টেস্ট ম্যাচ শেষ হওয়ার পরপরই ওই ক্রিকেটারের জিজ্ঞাসাবাদ সম্পন্ন হয়।’

লক্ষ্মণ ডি সিলভা বিজ্ঞাসাবাদের ব্যাপারে জানান, ‘সেই জেরায় ওই ক্রিকেটারের কাছ থেকে সন্দেহজনক কিছু পাওয়া যায়নি। তবে আমরা বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছি। ফোনটি আসলে কে করেছিল, সেই ভক্তের পরিচয় জানার চেষ্টা করছি। সেখানে কোনো প্রকার আর্থিক লেনদেন বা আরও বড় কোনো ঘটনা ঘটেছে কিনা সেটাও আমরা খতিয়ে দেখছি।’

Advertisement

লক্ষ্মণ ডি সিলভা বলেন, ‘শ্রীলঙ্কান ক্রিকেটে এমন ঘটনা খুবই বিরল। এর আগে এমন কখনও ঘটেনি বললেই চলে। তবে আমরা জানি কিছু মানুষ বল বাই বল জুয়া খেলে- এমন কিছু লোককে সম্প্রতি স্টেডিয়াম থেকে বের করে দেয়া হয়েছিল। তবে তাদের সংখ্যা বাড়ছে।’ বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করার জন্যই এ বিষয়টা নিয়ে তদন্ত চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

তবে ডি সিলভা এই ঘটনায় একাধিক ক্রিকেটার জড়িত থাকতে পারার সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিয়েছেন। নির্দিষ্ট একজন ক্রিকেটারকে নিয়েই সন্দেহ দানা বেঁধে উঠেছে। তারা সেই ক্রিকেটারকেই কেবল জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। তবে কোনোভাবেই ডি সিলভা সেই ক্রিকেটারের নাম প্রকাশ করেননি।

লঙ্কান ক্রিকেটে ফিক্সিংয়ে সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারিটি হয়েছিল ২০১০ সালে। যখন শ্রীলঙ্কান অফস্পিনার সুরাজ রনদিভ একটি নির্দিষ্ট নো বল দিয়েছিলেন। ভারতীয় ওপেনার বিরেন্দর শেবাগকে সেঞ্চুরি বঞ্চিত করতেই ইচ্ছা করে সেই কাজটি করেছিলেন রনদিভ। বলটিতে ছক্কা হয়েছিল। তবে আম্পায়ার সেটাকে নো বল ডাকেন।

কলম্বো টেস্টে চার উইকেটে হারের পর শ্রীলঙ্কার ‘দ্য আইল্যান্ড’ পত্রিকা রীতিমতো লঙ্কান ক্রিকেটের মৃত্যুই ঘোষণা করে দিয়েছিল। এবার বোমা ফাটালো দ্য সানডে টাইমস। অথচ সেই ম্যাচে কখনওই খুব একটা এগিয়ে ছিল না লঙ্কানরা।

Advertisement

আইএইচএস/