রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলা বন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুই ইউনিয়ন পরিষদের সামাজিক বনায়নের ঝরে পড়া গাছ স`মিলে বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। জানা গেছে, স্থানীয় বন সংরক্ষণ কমিটির সভাপতির সঙ্গে যোগসাজশ করে প্রকাশ্য নিলাম ছাড়াই তিনি স`মিলে গাছ ও গাছের ডালপালা বিক্রি করে দিয়েছেন। ফলে দাবি থাকলেও গাছ বিক্রির টাকা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সংশ্লিষ্ট দুটি ইউনিয়ন পরিষদ।সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সামাজিক বনায়ন কর্মসূচির আওতায় ২০১১ সালে উপজেলার জামাদান্নি থেকে হাবাসপুর এবং হাবাসপুর থেকে কানাইডাঙা পর্যন্ত তিন কিলোমিটার রাস্তায় বিভিন্ন প্রজাতির গাছ লাগায় বন বিভাগ। দুটি কমিটির মাধ্যমে স্থানীয় ২৩ জন উপকারভোগী নিয়ে গাছগুলো লাগানো হয়। জামাদান্নি থেকে হাবাসপুর পর্যন্ত এলাকাটি মাটিকাটা ইউনিয়নের ভেতরে। আর হাবাসপুর থেকে কানাইডাঙা পর্যন্ত এলাকাটি হলো গোদাগাড়ী সদর ইউনিয়ন। এলাকাবাসী জানান, গত ৪ এপ্রিলের ঝড়ে তিন কিলোমিটার রাস্তার অন্তত শতাধিক গাছ উপড়ে যায়। নিয়ম অনুযায়ী, ঝরে পড়া এসব গাছ প্রকাশ্য নিলামের মাধ্যমে বিক্রি করার কথা। গাছ বিক্রির টাকার ৬০ ভাগ পাবে স্থানীয় বন সংরক্ষণ (উপকারভোগী) কমিটি, ২০ ভাগ স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ ও ২০ ভাগ পাবে বনবিভাগ। কিন্তু এলাকাবাসীরা বলছেন, নিলাম ছাড়াই গাছগুলো বিক্রি করা হচ্ছে স`মিলে। অথচ এ বিষয়ে কিছুই জানেন না সদর ও মাটিকাটা ইউনিয়ন পরিষদের দুই চেয়ারম্যান।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বৃহস্পতি ও শনিবার উপজেলার বাইপাস মোড় এলাকার রফিকুল ইসলামের স`মিল ও সিএন্ডবি এলাকার শফিকুল ইসলামের সমিলে এসব গাছ বিক্রি করা হয়েছে। জানতে চাইলে এর সত্যতাও স্বীকার করেছেন স`মিল মালিক রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, সরকারি রাস্তার গাছ হওয়ায় তিনি সেগুলো কিনতে ইতস্তত করছিলেন। কিন্তু গাছ বিক্রি করতে আসা শ্রমিকরা জানান, স্থানীয় বন কর্মকর্তাই গাছগুলো বিক্রি করছেন। এ কারণে তিনি জ্বালানি কাঠের দামে প্রায় ৯০ মণ গাছের গুল কিনেছেন।গোদাগাড়ী সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাসিদুল গণি জানান, ঝরে পড়া গাছ বিক্রির বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। তিনি বলেন, রাস্তার ধারের সামাজিক বনায়নের গাছে ইউনিয়ন পরিষদের দাবি আছে। এদিকে গাছ বিক্রির বিষয়টি মাটিকাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলামও জানেন না বলে গণমাধ্যমকর্মীদের জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি উপজেলা বন কর্মকর্তা মঈন উদ্দীন। উপকারভোগী কমিটির সভাপতির সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।জানতে চাইলে বন সংরক্ষণ কমিটির সভাপতি আবদুস সাত্তার জাগোনিউজকে বলেন, গাছ নয়, গাছ কাটা শ্রমিকদের মজুরি দেয়ার জন্য গাছের ডালপালা বিক্রি করা হচ্ছে। এ জন্য উপজেলা বন কর্মকর্তার সঙ্গে পরামর্শও করা হয়েছে। তিনি দাবি করেন, সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানদের বিষয়টি জানানো হয়নি ঠিকই, তবে সময়মতো তাদের পাওনা বুঝিয়ে দেয়া হবে।এমজেড/বিএ/আরআইপি
Advertisement