বিশেষ প্রতিবেদন

গাছ ভেঙে পড়ে মৃত্যুর ভয়ে আতঙ্কিত নগরবাসী

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে শনিবার সকালে মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে এসে বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে প্রাণে বেঁচে গেছেন এক অভিভাবক। ওই সময় বৃষ্টি ও ঝড়ো বাতাস বইছিল। যখনই ওই অভিভাবক প্রধান ফটক দিয়ে প্রবেশ করতে যাবেন ঠিক তখনই একটি গাছ ভেঙে সমাজকল্যাণ গবেষণা ইনস্টিটিউট লেখা নিয়ন সাইন বোর্ডের উপর পড়ে দুমড়ে মুচড়ে যায়। এ সময় বিদ্যুতের তার ছিড়ে গেলে গোটা এলাকা বিদ্যুৎ সংযোগ বিছিন্ন হয়ে যায়। অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান ওই অভিভাবক।

Advertisement

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হল-সংলগ্ন চায়ের দোকানদার আবুল মিয়া জানান, ‘সামান্য ঝড়-বৃষ্টিতে যেইভাবে গাছটা ভাইঙা পড়ছে, সমাজকল্যাণের সাইন বোর্ডের উপর না পইড়া সরাসরি ওই লোকের উপর পড়লে কিচ্ছা খতম অইয়া যাইতো।’

দুপুর দেড়টার দিকে বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মচারীদের ভেঙেপড়া গাছটা করাত দিয়ে কেটে সরিয়ে বিদ্যুতের পুনঃসংযোগ দিতে দেখা যায়।

রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক সংলগ্ন ও পার্কের গাছ-গাছালি নগরবাসীর কাছে নতুন আতঙ্ক হয়ে দেখা দিয়েছে। সরেজমিনে শহীদ সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, রমনা ও নগরীর বিভিন্ন সড়ক ঘুরে ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, সামান্য ঝড় ও বৃষ্টিতে অনেক গাছ-গাছালি ভেঙে পড়ছে।

Advertisement

তারা বলেন, বিভিন্ন সড়ক ও পার্কে মোট কতগুলো গাছ নড়বড়ে হয়ে গেছে তার কোনো সঠিক পরিসংখ্যান বা জরিপ নেই। ফলে সামান্য ঝড়-বৃষ্টিতে গোটা গাছ কিংবা গাছের ডাল ভেঙে পড়ছে।

গত দুই বছরে রাজধানীতে পরপর গাছের চাপায় দুজন নিহত হন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বছরের ৭ মার্চ ধানমন্ডির ৪ নম্বর সড়কে ফুটপাতের ওপর বিশাল আকৃতির একটি কৃষ্ণচূড়া গাছ শিকড় থেকে উপড়ে পড়লে নিহত হন চিত্রশিল্পী ও চলচ্চিত্র নির্মাতা খালিদ মাহমুদ মিঠু।

গত ১৯ মার্চ সংসদ ভবন এলাকায় একটি কৃষ্ণচূড়া গাছ পথচলতি যানবাহনের ওপর ভেঙে পড়ে। একজন মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হন এবং আহত হন একজন সিএনজিচালক।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) নেতারা বলছেন, মানুষের অত্যাচারে গাছ গোড়া থেকেই নষ্ট হচ্ছে। প্রায় ৯০ শতাংশ গাছে বিলবোর্ড ও পেরেক লাগানো। এছাড়া প্রাকৃতিক দুর্যোগ তো আছেই।

Advertisement

এমইউ/বিএ/আরআইপি