বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের জন্য গ্রুপ ক্যাপটেন (অব.) শামসুল আলম, বীর উত্তম, পি.এস.সিকে স্বাধীনতা পুরস্কার ২০১৭ প্রদান করা হয়। তাঁকে নিয়ে আজকের আয়োজন-
Advertisement
শামসুল আলম ১৯৪৭ সালের ৯ জুলাই পটুয়াখালী জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকার সিদ্ধেশ্বরী উচ্চবিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক এবং ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হন। ১৯৬৪ সালে পাকিস্তান বিমান বাহিনীতে যোগদান করে ১৯৬৭ সালে সাফল্যের সঙ্গে কমিশনপ্রাপ্ত হন। পরে যুক্তরাজ্যের রয়েল এয়ার ফোর্স স্টাফ কলেজ থেকে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেন।
শামসুল আলম পেশাজীবনে পাকিস্তান বিমান বাহিনীর যুদ্ধবিমান, বোমারু বিমান এবং ট্রান্সপোর্ট বিমানের পাইলট ছিলেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য একাত্তরের ৩ জুন করাচি থেকে পালিয়ে ঢাকা বিমানবন্দরে নামার সঙ্গে সঙ্গে পাক-সামরিক বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হন। ফলে তার ওপর অমানবিক নির্যাতন করা হয়। আগস্ট মাসে পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ সামরিক প্রয়োজনে তাঁকে কারামুক্ত করে পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করে। এ অবস্থায় তিনি সুকৌশলে পালিয়ে ভারত চলে যান। সেখানে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন।
শামসুল আলম বাংলাদেশের প্রথম বিমান ইউনিট ‘কিলো ফ্লাইট’ গঠনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধে অনেক সফল অপারেশন পরিচালনা করে শত্রুপক্ষের বিভিন্ন মিলিটারি টার্গেট ধ্বংস করেন। একাত্তরের ৪ ডিসেম্বর মধ্যরাতে দুর্যোগ ও ঝুঁকিপূর্ণ আবহাওয়ায় কো-পাইলট আকরাম আহমেদকে সঙ্গে নিয়ে একটি পুরাতন অটার বিমান চালিয়ে চট্টগ্রামের জ্বালানি তেল শোধনাগারের ফুয়েল ডাম্প সম্পূর্ণ ধ্বংস করেন। ফলে পাক-বাহিনীর সব এভিয়েশন-জ্বালানির সরবরাহ ব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে যায়।
Advertisement
স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে তিনি বিমান বাহিনী গঠন এবং বাহিনীর প্রথম ট্রান্সপোর্ট স্কোয়াড্রন ও ট্রেনিং একাডেমি স্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
মুক্তিযুদ্ধে সম্মুখসমরে অংশগ্রহণ এবং সামরিক অভিযানে বিশেষ অবদানের জন্য তাঁকে ‘বীর উত্তম’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়।
এসইউ/জেআইএম
Advertisement