১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ঝাঁপিয়ে পড়েছিলো নিরস্ত্র বাঙালির ওপর। চালিয়েছিলো গণহত্যা। সেই রাতে অকাতরে জীবন দিয়েছে বাংলার অগণিত বাবা-মা-ভাই-বোন, আত্মীয়-স্বজন। সেই হত্যাযজ্ঞের শহীদদের স্মরণে জাগো নিউজের বিশেষ আয়োজন। শহীদদের স্মৃতির উদ্দেশে সমকালীন তিন তরুণের কবিতা নিবেদন করা হলো-
Advertisement
পতাকাআহমেদ শিপলু
পতাকা হাতে দৌড়চ্ছ তুমিউল্লাস করছো তুমিহে তরুণ!টিশার্টের বুকে লাল সবুজ এঁকেমিছিলে হেঁটে যাওয়া যুবকসবুজজমিনে লালপেড়ে শাড়ি পরিহিতা চঞ্চল যুবতিতুমি কি দেখো ওই সবুজেওই লাল বৃত্তের ভেতরহাজার বছর সংগ্রামের ইতিহাস!রক্তাক্ত স্বাধীন বাংলাদেশ।দেখতে কি পাও?
গাঢ় সবুজের মাঝে রক্তিম বৃত্তকখনো টগবগে লাল সূর্যকখনো তাজা তরুণের রক্তের ছোপ!ধর্ষিতার কাতর চিৎকার!এখানেই রয়েছে বায়ান্নোএকাত্তরমার্চ এর কালরাত!বিজয়ের ডিসেম্বর!রক্তে রাঙানো ফেব্রুয়ারি!তাকালেই দেখা যায় বিশাল গণমিছিলের ঢেউকারফিউ ভেদ করে আছড়ে পড়েছে রাজপথে।
Advertisement
ওই লাল বৃত্তের দিকে তাকালেই দেখা যায়--উত্তাল উনসত্তর!আগরতলা ষড়যন্ত্র!মাওলানা ভাসানি,বঙ্গবন্ধু!তর্জনী উঁচানো সাত-ই মার্চ!এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম!এবারের সংগ্রাম আমদের স্বাধীনতার সংগ্রাম!ওই সবুজের মাঝেই রয়েছে মুজিব নগরতাজউদ্দীনআর ত্রিশ লাখ শহিদের বুকে গজিয়ে ওঠাঘাসের ঠিকানা।
বাঙালির মুক্তি আর মুক্তচিন্তার ঠিকানা ছিলোযেই লালসবুজের খামে!দীর্ঘ প্রতীক্ষিত বিজয়ের সনদ ছিলোযেই রক্তাক্ত চিঠিতে।অশুভ পঁচাত্তর!পঙ্কিল আগস্ট!কেড়ে নিয়েছিলো সেই খাম!ছিড়ে ফেলেছিলো সেই চিঠি!প্রতারক বুলেটে ঝাঁঝরা হয়েছিলোশান্তির ডাকপিয়ন!
পতাকা হাতে দৌড়চ্ছ তুমিউল্লাস করছো তুমি, হে তরুণ!টিশার্টের বুকে লাল সবুজ এঁকেমিছিলে হেঁটে যাওয়া যুবকসবুজ শাড়িতে লাল পাড় পরিহিতা চঞ্চল যুবতিতুমি কি দেখো ওই সবুজেওই লাল বৃত্তের ভেতরহাজার বছর সংগ্রামের ইতিহাস!রক্তাক্ত স্বাধীন বাংলাদেশ।দেখতে কি পাও?
****
Advertisement
তীর্থ সানাউল্লাহ সাগর
মা ডাকছেন। বেলা কি হয়ে গেলো শেষে! পুঁইয়ের নাক থেকে রোদ হাসে, তখনো লতায় আমার ঘুম।
মা আসেন। জলের রোগ রেখে বলে চলেন, ব্যয়ের খাতায় উঠেছে যেসব দিন। দোয়েলের ঠোঁটে কলুই আসে, আমার মগজে বিরবির করে ভূতের সোড়গোল।
মা, মা হাসেন। লেবুর ঘামে দুনিয়া বুঁদ, শর্তের ডালে ডালে শোধবার ডাকে। মুখ নাই আর, আমিও নাই ছুটিবারের ভোটে।
কোথায় শবজোট, কোন কাঁধে সহ্যের কফিন। কোনো ন্যাপকিনে আমি নেই। মাও নেই কোনো ফুলভ্রমে!
****
বিজয়ী সূর্যমিজানুর রহমান মিথুন
পলাশীর প্রান্তরে ডোবা সূর্য-অবশেষে শৃঙ্খলবন্দি হয় আবার।
কাঁদে বাংলা সিরাজের শোকেতিমিরে কাটে বহুকাল-কখনো দস্যু, কখনো হায়েনা,দালাল- বেনিয়া আরো কত রূপ।
যে যার মতো স্বার্থের বিষাক্ত নখরাঘাতে বিদীর্ণ করেছে বাংলা।আগুনে জ্বালিয়ে করেছে ছারখার,তারপর এলো মর্টার, এলো গ্রেনেড,সাঁজোয়া যান আরো কত কী!
চেয়েছিলো ছো মেরে নিয়ে যেতে অবশেষে পারেনি, উঠলো সূর্য-২৬ মার্চ মুক্তি পেলো বন্দিসূর্য,বিজয়ী সূর্য উঠলো ডিসেম্বরে।
এসইউ/এমএস