খুলনা প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের (পিটিআই) ইন্সট্রাক্টর মো. মাহাবুব মোস্তফা আঙ্গুরকে (৩৬) গুলি করে হত্যাচেষ্টার সঙ্গে পিটিআই’র সুপারসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা জড়িত রয়েছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণ মিলেছে।
Advertisement
ঘটনার পর শুক্রবার রাতেই পিটিআই সুপারসহ দুই জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের কাছ থেকে আরও তথ্য আদায়ের জন্য তাদের রিমান্ডের আবেদন করবেন তদন্ত কর্মকর্তা মিলন কুমার মৈত্র।
খুলনা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, শুক্রবার দুপুর সোয়া ২টার দিকে জুম্মার নামাজ পড়ে বাসায় ফেরার পথে নগরীর পিটিআই মোড়ের সুলতানা হামিদ আলী স্কুলের বিপরীতের গলির মধ্যে গুলি করে পিটিআই’র ইন্সট্রাক্টর মো. মাহাবুব মোস্তফা আঙ্গুরকে হত্যার চেষ্টা করে। এ ঘটনায় আহত মাহাবুব মোস্তফা আঙ্গুর বাদী হয়ে তিনজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতদের নামে সদর রাতেই থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার আসামিরা হলেন- খুলনা প্রাইমারি টিচার্স ইনস্টিটিউটের (পিটিআই) সুপারিন্টেন্ডেন্ট আব্দুস সালাম শিকদার, উপ-পরিচালক একেএম গোলাম মোস্তফা ও কম্পিউটার সাইন্সের ইন্সট্রাক্টর প্রভাষ কুমার বিশ্বাস।
Advertisement
ওসি আরও জানান, রাতেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে খুলনা পিটিআই’র সুপারিন্টেন্ডেন্ট আব্দুস সালাম শিকদার ও নৈশ প্রহরী শহিদুল ইসলামকে গ্রেফতার করেছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা এই হত্যাচেষ্টার সঙ্গে জড়িত বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাদের কাছ থেকে আরও তথ্য বের করার জন্য রিমান্ডের আবেদন করা হবে বলেও জানান তিনি।
সূত্র জানা গেছে, খুলনা প্রাইমারি টিচার্স ইনস্টিটিউটের (পিটিআই) সুপারিন্টেন্ডেন্ট আব্দুস সালাম শিকদার, উপ-পরিচালক একেএম গোলাম মোস্তফা ও কম্পিউটার সাইন্সের ইন্সট্রাক্টর প্রভাষ কুমার বিশ্বাসসহ অন্যান্যরা পিটিআইকে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেছেন। তারা প্রশিক্ষণার্থীদের খাদ্য ভাতা চুরি, প্রশিক্ষণের অর্থ চুরি, প্রশিক্ষণার্থীদের কাছ থেকে ভয়ভীতি দেখিয়ে অর্থ আদায় করে আত্মসাতসহ নানা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন। এসব দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরোধিতা করে আসছেন মাহাবুব মোস্তফা আঙ্গুর। সে কারণেই তাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়।
শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে মো. মাহাবুব মোস্তফা আঙ্গুর হেঁটে নগরীর পিটিআই মোড়স্থ বাসায় ফিরছিলেন। তিনি বাসার সামনে আসামাত্র একটি লাল রঙের মোটরসাইকেল যোগে দুজন হেলমেট পরিহিত সন্ত্রাসী তাকে লক্ষ্য করে পেছন থেকে গুলি করে। গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনি রাস্তায় পড়ে যান। গুলির শব্দে পাশে থাকা লোকজন ছুটে আসতে লাগলে সন্ত্রাসীরা মোটরসাইকেল চালিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এদিকে, খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য মিজানুর রহমান মিজান খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গুলিবিদ্ধ পিটিআই কর্মকর্তাকে দেখতে যান।
Advertisement
আলমগীর হান্নান/আরএআর/এমএস