জাতীয়

‘আড়াই হাজারের মধ্যে লাশ পেয়েছিলাম ১১২ জনের’

২৫ মার্চের কালরাতের বর্ণনা দিতে গিয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেছেন, ‘সেদিন আড়াই হাজার পুলিশ সদস্যের মধ্যে লাশ পেয়েছিলাম মাত্র ১১২ জনের। সেই স্মৃতি এখনও আমাদের নাড়া দেয়।’

Advertisement

শনিবার দুপুরে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘রক্তাক্ত ২৫ মার্চ গণহত্যার ইতিবৃত্ত’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। মুক্তিযুদ্ধে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে অবস্থানরত বাঙালি পুলিশ সদস্যদের দেশের জন্য আত্মত্যাগের কথা তুলে ধরেন তিনি।

আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, ‘সেদিন ভোর রাতে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে প্রবেশ করে পাকিস্তানি হায়েনারা নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে। ফজরের নামাজ শেষে যারা ঘরে ফিরছিলেন তাদেরকেও গুলি করেছে।’ পুলিশ সদস্যদের কয়েকজন হয়তো এখনও বেঁচে আছেন এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘বুড়িগঙ্গা নদীতেও অনেকের লাশ পাওয়া গিয়েছিল, যাদের গায়ে পুলিশের পোশাক ছিল।’

বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হয়েছিল উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে একত্রিত হয়ে সেদিন আমাদের পুলিশ বাহিনী গেরিলা যুদ্ধ শুরু করেছিল। এটি ছিল জনযুদ্ধ।’ থ্রি নট থ্রি রাইফেল দিয়ে যুদ্ধ করে পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা জীবন উৎসর্গ করেছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা স্বাধীনতার স্মৃতি আঁকড়ে ধরার জন্য রাজারবাগে ২০০৭ সাল থেকে মুক্তিযুদ্ধের প্রথম প্রহর পালন করি।’ রাজারবাগে একটি মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর তৈরি করা হয়েছে জানিয়ে শিক্ষার্থী ও মুক্তিযোদ্ধাদের ওই জাদুঘর পরিদর্শনের আহ্বান জানান তিনি।

Advertisement

জঙ্গিবাদ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘গতরাতেও বিমানবন্দর এলাকায় চেকপোস্টে দায়িত্বরত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তল্লাশি করতে চাইলে বোমা বহনকারী বোমা লুকাতে গিয়ে নিজের বোমায় নিজে নিহত হয়েছেন। এমন ঘটনা প্রতিনিয়ত হচ্ছে। এরা প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে স্বাধীনতাবিরোধী।’

এই অপশক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে উল্লেখ করে আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, ‘উন্নত সোনার বাংলা গড়তে হলে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমরা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা জনগণের নিরাপত্তা রক্ষায় বদ্ধপরিকর। যে জাতি রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছে, সে দেশে জঙ্গি সন্ত্রাসীদের স্থান হতে দেব না।’

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, সংসদ সদস্য শাজাহান কামাল প্রমুখ।

এমএম/এসআর/এমএস

Advertisement