টেস্ট সিরিজের পর এবার ওয়ানডে সিরিজ। এবারও লক্ষ্য লঙ্কা জয়। টেস্টে সিরিজ ড্র করেছি, তবে এবার সিরিজ জিততে চাই। জয়টা আমাদের প্রাপ্যই বলতে হবে। কারণ এ সিরিজে পরিষ্কাভাবে আমরা এগিয়ে। সাম্প্রতিক সময়ে ওয়ানডে আমরা ভালো খেলছি। শক্তির দিক থেকে শুধু না; অভিজ্ঞতার দিক থেকেও এগিয়ে। আমাদের দলে পাঁচ/ছয় জন অভিজ্ঞ খেলোয়াড় আছে, আর যারা তরুণ তারাও পরীক্ষিত। তাই এবার ওদের বিপক্ষে আমরাই ফেভারিট। তবে আমাদের সিরিজ নিয়ে এখনই ভাবা উচিত না। ম্যাচ বাই ম্যাচ খেলা উচিত। কারণ সিরিজ নিয়ে ভাবলে আমরা চাপে পড়ে যাবো।
Advertisement
ডাম্বুলার উইকেট সাধারণত ব্যাটিং উইকেটই হয়ে থাকে। কালও হয়তো তাই হবে। আমার মনে হয় না স্পিন নির্ভর উইকেট ওরা করবে। বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইন-আপ বেশ ভালো ও অভিজ্ঞ। তারা স্পিনটা খুব ভালোই খেলে। সেক্ষেত্রে ওরা যদি টার্নিং উইকেট বানায় তাহলে হবে এটা ওদের জন্য আত্মঘাতীই। কারণ স্পিনে আমাদের বোলাররাও কম যায় না। সাকিব ওয়ানডেতে অনেক কার্যকরী। আর মিরাজ একাদশে এসেছে। ও কিন্তু ওয়ানডে ম্যাচে ভালো খেলেই দলে জায়গা পেয়েছে। এছাড়া সানজামুল ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিত পারফরমার। প্রস্তুতি ম্যাচে ভালোই খেলেছে। আর মাহমুদউল্লাহ ও মোসাদ্দেকের বল কার্যকরী হয়ে উঠতে পারে।
আমাদের তিন পেসার নিয়েই মাঠে নামা উচিত। আমার মনে হয় টিম ম্যানেজমেন্ট এমনটাই করবেন। সেক্ষেত্রে মাশরাফি ও মোস্তাফিজের সঙ্গে তাসকিনকে দেখার সম্ভবনাই বেশি। তবে রুবেলও আসতে পারে। আমার মতে, তাসকিনকেই প্রথম ম্যাচে সুযোগ দেওয়া উচিত। ওর গতিটা কার্যকরী হতে পারে। যথারীতি পেস বোলিংয়ে নেতৃত্ব থাকবে মোস্তাফিজের হাতেই। ও একটা ভালো স্পেল করলেই ম্যাচ অনেক ঘুরে যাবে। কলম্বো টেস্টেই আমরা দেখেছি। আশার কথা ভালো ছন্দে আছেন কাটার মাস্টার। আর টেস্টের চেয়ে ওয়ানডেতে তার কাটার অনেক বেশি কাজ করে। তাই ওর বোলিং দেখার জন্য আমি অধীর অপেক্ষায় আছি।
জিততে হলে অবশ্যই আমাদের ব্যাটসম্যানদের দায়িত্ব নিয়ে খেলতে হবে। বড় ইনিংস খেলতে হবে। যে যখন উইকেটে সেট হবে তাকেই ম্যাচ শেষ করে আসতে হবে। আমাদের ব্যাটসম্যানরা আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করতে পছন্দ করে। ওয়ানডেতে তাই সে সুযোগটা ভালো ভাবেই পাচ্ছেন। দলের খেলোয়াড়রা ফর্মেও আছে। সৌম্য, তামিম, সাকিব ও মুশফিক টেস্টে ভালো ব্যাটিং করেছে। মোসাদ্দেক শেষ টেস্ট ও প্রস্তুতি ম্যাচে দারুণ ব্যাট করেছে। সবচেয়ে বড় সুখবর- প্রস্তুতি ম্যাচে দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। চাপে থেকে এমন ইনিংস নিঃসন্দেহে দারুণ। আশা করি কালও এমন ইনিংস খেলবে। সাব্বিরও টেস্টে ভালো ব্যাট করেছে, ওয়ানডেতে আরও সাবলীল হবে বলেই আমার বিশ্বাস।
Advertisement
কলম্বো টেস্টে আমাদের ফিল্ডিংটা ভালো হয়েছিল। এবারও ফিল্ডিংটা এমন দেখতে চাই। কারণ একটা দুইটা হাফ চান্স লুফে নিতে পারলে পুরো ম্যাচই বদলে যায়। তেমনি একটা দুইটা মিস ম্যাচ থেকে ছিটকে দেয়। কলম্বোতে আমরা মিস কম করেছি বলেই টেস্ট জিততে পেরেছি। এর আগে গলে অনেক ক্যাচ মিস করায় আমাদের হারতে হয়েছিল। ফিল্ডিং মিস না হলে গলেও হয়তো অন্যরকম ফলাফল দেখা যেত। তাই ফিল্ডিংয়ের উপর বাড়তি নজর অবশ্যই দিতে হবে।
সব মিলিয়ে আমার বিশ্বাস জয় কাল আমাদেরই হবে। এখন মাঠে নিজেদের কাজটা করতে হবে মাশরাফিদের। শ্রীলঙ্কার আগের সেই দল আর নেই। তাই আত্মবিশ্বাসের সঙ্গেই খেলতে হবে। তবে অবশ্যই ওদের সমীহ করতে হবে। কারণ তারা ঘরের মাঠে খেলছে। আর কে না জানে ঘরের মাঠ সবসময়ই লঙ্কানদের দুর্গ। নিজেদের সেরাটা দিতে পারলে জয় পাওয়া তেমন কঠিন হবে না বাংলাদেশের। এখন শুধু অপেক্ষা পরিকল্পনার সঠিক বাস্তবায়ন।
আরটি/এনইউ/পিআর
Advertisement