জমে উঠেছে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন (কুসিক) নির্বাচনের প্রচারণা। নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু ধানের শীষ নিয়ে এবং নৌকা প্রতীক নিয়ে আঞ্জুম সুলতানা সীমা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট চাইছেন।
Advertisement
দুজনের মধ্যে প্রতিযোগিতা এখন এতটাই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ যে একজন নগরীর উত্তরে গেলে আরেকজন যাচ্ছেন দক্ষিণে। মেয়র প্রার্থীদের মতো সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলররা পিছিয়ে নেই প্রচারণায়। ভোটারদের নানা প্রতিশ্রুতি, উন্নয়নের ফিরিস্তি এবং বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের কথাও বলছেন তারা।
তবে অভিযোগ উঠেছে ক্ষমতাসীন দলের হওয়ায় প্রচারণায় বাড়তি সুবিধা দেয়া হচ্ছে সীমাকে। তবে এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন তিনি। বুধ ও বৃহস্পতিবার সরেজমিন ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
নির্বাচন উপলক্ষে বিএনপির একাধিক জাতীয় নেতা এখন কুমিল্লায় অবস্থান করছেন। তবে নির্বাচনী বিধি-নিষেধ থাকায় আওয়ামী লীগের প্রচারণায় কোনো এমপি-মন্ত্রী যোগ দিতে না পারলেও দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক নেতাদের নিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন আঞ্জুম সুলতানা সীমা।
Advertisement
নির্বাচনী বিধি অনুযায়ী আলোকসজ্জা নিষিদ্ধ থাকলেও এলাকার বজ্রপুর, মোঘলটুলি, শোকতলা এলাকায় বড় বড় নৌকা স্থাপন করে আলোকসজ্জা করা হয়েছে। এছাড়া সীমার আবাসিক এলাকায় বিএনপির প্রার্থীর পক্ষে কেউ প্রচারণা চালাতে পারছেন না। বুধবার ধানের শীষের মাইকিং করতে দুজন সিএনজি ড্রাইভারকে বেধড়ক পেটানোর খবর পাওয়া গেছে।
বিএনপির প্রার্থীর প্রধান নির্বাচনী সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট কাইমুল হক রিংকু জাগো নিউজকে জানান, নৌকার শতাধিক আলোকসজ্জা সংবলিত নির্বাচনী অফিস থাকলেও হলফনামা অনুযায়ী ধানের শীষের নির্বাচনী অফিস করতে দেয়া হচ্ছে না। এছাড়া অনেক জায়গায় নৌকার ওপর আলোকসজ্জা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ভোটগ্রহণ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে কমিশনের চেষ্টা থাকলেও জনবল সংকট ও মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাবের কারণে সেটা করতে পারছেন না।
এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আঞ্জুম সুলতানা সীমা জাগো নিউজকে বলেন, এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। আমরা কোনো বাড়তি সুবিধা পাচ্ছি না।
Advertisement
জানতে চাইলে ঢাকা থেকে যাওয়া বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী জাগো নিউজকে বলেন, সরকার যে কোনোভাবে ক্ষমতায় থাকতে চাচ্ছে। তাই কুসিক নির্বাচনেও তাদের প্রভাব প্রতিপত্তি প্রকট আকার ধারণ করেছে। কিন্তু জনগণ ভোট দিতে পারলে ধানের শীষের বিজয় সুনিশ্চিত।
যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক অপু উকিলও বলেন, নারী ভোটাররা বেশি সাড়া দিচ্ছেন। কারণ ক্ষমতাসীন প্রার্থীকে ভোট দিলে এলাকার উন্নয়ন হবে।
এদিকে কুসিক নির্বাচনকে ঘিরে পুরো এলাকায় বিরাজ করছে সাজ সাজ রব। প্রার্থীদের নানা পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুন শোভা পাচ্ছে এলাকাজুড়ে। তবে সুষ্ঠু ভোটগ্রহণ নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন সাধারণ ভোটাররা।
স্থানীয় বজ্রপুরের বাসিন্দা কৌশিক আলম জানান, আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পরিবার নিয়ে কুমিল্লায় ভীতি রয়েছে। এজন্য প্রার্থীর ভাইকে নির্বাচনী প্রচারণায় না নামানোর জন্য কেন্দ্র বলেছে। কিন্তু তিনিও প্রচারণা চলাচ্ছেন। এজন্য ভোটারদের মধ্যে ভীতির সঞ্চার হয়েছে।
কাপ্তানবাজার এলাকার গৃহবধূ নাজমা সুলতানা জানান, কোনো ক্ষমতার কাছে আমরা হার মানতে চাই না। সবাই যেন নির্ভয়ে ভোটকেন্দ্রে যেতে পারেন সে পরিবেশ সৃষ্টির জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে দাবি জানাই।
প্রসঙ্গত, ৩০ মার্চ কুসিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সিটিতে মোট ভোটার ২ লাখ ৭ হাজার ৩৮৪। সাধারণ ওয়ার্ড ২৭টি, সংরক্ষিত ওয়ার্ড ৯টি।
এইচএস/এএইচ/জেআইএম