সাবেক ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামির অন্যতম সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি জঙ্গি দেলোয়ার হোসেন রিপন রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইবেন।
Advertisement
বৃহস্পতিবার রিপন এ সিদ্ধান্তের কথা জানান বলে জানিয়েছেন সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মো. আবু সায়েম।
তিনি জানান, প্রাণভিক্ষার লিখিত আবেদন দেবেন রিপন, এজন্য সময় চেয়েছেন। কারাবিধি অনুযায়ী তাকে সময় দেয়া হচ্ছে। প্রাণভিক্ষার আবেদন পাওয়ার পর এটি রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হবে।
এর আগে গত বুধবার সকালে রিপনকে রিভিউ খারিজ করে হাইকোর্টের দেয়া মৃত্যুদণ্ডের চূড়ান্ত রায় পড়ে শোনানো হয়। তখন রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাইবেন কি না জানতে চাওয়া হলে রিপন জানান, তিনি আইনজীবী ও পরিবারের সঙ্গে কথা বলে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত জানাবেন।
Advertisement
মামলার অপর দুই আসামি জঙ্গি নেতা মুফতি আবদুল হান্নান ও জঙ্গি শরীফ শাহেদুল বিপুল গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে। তারা বুধবারই রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন পৌঁছানোর পর রাষ্ট্রপতি তাতে অসম্মতি জানালে এই তিন জঙ্গির ফাঁসি কার্যকরে আর কোনো বাধা থাকবে না। যেকোনো সময় তাদের ফাঁসি কার্যকর করতে পারবে কারা কর্তৃপক্ষ।
উল্লেখ্য, ২০০৪ সালের ২১ মে সিলেটের হজরত শাহজালালের (রহ.) মাজারে তৎকালীন ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা হয়। হামলায় আনোয়ার চৌধুরী, সিলেটের জেলা প্রশাসকসহ অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত এবং পুলিশের দুই কর্মকর্তাসহ তিনজন নিহত হন।
মামলার বিচার শেষে ২০০৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর বিচারিক আদালত পাঁচ আসামির মধ্যে মুফতি হান্নান, বিপুল ও রিপনকে মৃত্যুদণ্ড এবং মহিবুল্লাহ ও আবু জান্দালকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। নিয়ম অনুসারে মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন করতে প্রয়োজনীয় নথি হাইকোর্টে পাঠানো হয়। পাশাপাশি ২০০৯ সালে আসামিরা জেল আপিলও করেন।
Advertisement
প্রায় সাত বছর পর গত বছরের ৬ জানুয়ারি এ মামলায় হাইকোর্টে শুনানি শুরু হয়ে ৩ ফেব্রুয়ারি শেষ হয়। বিচারিক আদালতের দণ্ড বহাল রেখে ১১ ফেব্রুয়ারি রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট।
গত বছরের ২৮ এপ্রিল হাইকোর্টের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়। ১৪ জুন রায় হাতে পাওয়ার পর ১৪ জুলাই আপিল করেন দুই আসামি মুফতি হান্নান ও বিপুল। অপর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রিপন আপিল না করলেও আপিল বিভাগ তার জন্য রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী নিয়োগ করেন।
আপিলের শুনানি শেষে গত বছরের ৭ ডিসেম্বর আসামিদের আপিল খারিজ হয়ে যায়। গত ১৭ জানুয়ারি এ রায় প্রকাশের পর আসামিরা রিভিউ আবেদন করেন। গত রোববার (১৯ মার্চ) দেয়া রিভিউ খারিজের রায় মঙ্গলবার প্রকাশিত হয়।
ছামির মাহমুদ/আরএআর/জেআইএম