খেলাধুলা

২ রানে হেরে গেল বাংলাদেশ

জয়ের জন্য শেষ ওভারে প্রয়োজন ১৩ রান। উইকেটে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। সঙ্গে মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। ৬৩ বলে ৬৩ রান করা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের হাতেই নির্ভর করছিল ম্যাচের ভাগ্য। হোক না প্রস্তুতি ম্যাচ। তবুও ৩৫৫ রানের পিছু ধাওয়া করে এতদূর আসার পর কে হারতে চায়! মানসম্মানের বিষয়ও তো আছে। একদিকে বাংলাদেশ জাতীয় দল অন্যদিকে শ্রীলঙ্কান বোর্ড প্রেসিডেন্ট একাদশ।

Advertisement

কিন্তু না, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ পারলেন না। শেষ ‍২ বলে প্রয়োজন ছিল ৮ রান। শেষ ওভারের পঞ্চম বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে মাহমুদউল্লাহ সম্ভাবনা জাগিয়ে তুলেছিলেন। শেষ বলেও বাউন্ডারি প্রয়োজন ছিল। পারলেন না, নিতে পারলেন মাত্র ১ রান। তাতেই নির্ধারিত হয়ে গেল প্রস্তুতি ম্যাচের ভাগ্য। ২ রানে হেরে গেল বাংলাদেশ। 

বোলার থিসারা পেরেরার শেষ ওভারের পঞ্চম বলটি থার্ডম্যান অঞ্চল দিয়ে চার হাঁকালেন মাহমুদউল্লাহ। জয়ের একেবারে দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ। ২ বলে ৮ রান দরকার। কিন্তু এলো ওই চার। শেষ বলে প্রয়োজন আরও একটি বাউন্ডারি; কিন্তু স্ট্রাইকে থাকা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ সে বল থেকে এক রানের বেশি নিতে পারলেন না।

লংঅন আর মিড উইকেটের মাঝামাঝি যে শটটি খেললেন, তাতে এলো মোটে একটি সিঙ্গেল। তাতেই দুই রানে হারের আক্ষেপ থেকে গেল টিম বাংলাদেশের। তারপরও সাব্বির, মোসাদ্দেক, মাহমুদউল্লাহ এবং অধিনায়ক মাশরাফির বীরোচিত ব্যাটিংয়ের জন্য প্রস্তুতি ম্যাচটি অনুপ্রেরণার প্রতীক হয়েই থাকল।

Advertisement

কলম্বোয় প্রচণ্ড গরমের মাঝে ৩৫৪ রানের বিশাল স্কোরের পিছু ধাওয়া করতে নেমে ৩৫২ রানই যে অনেক বেশি! প্রস্তুতি ম্যাচে বাংলাদেশের প্রস্তুতি যাচাই করা প্রয়োজন ছিল। ব্যাটিং উইকেটে বোলাররা তেমন কিছু দেখাতে না পারলেও ব্যাটসম্যানরা দেখালেন তাদের ঝলক। সাব্বির রহমান সর্বোচ্চ ৭২, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের অপরাজিত ৭১, মাশরাফি ৩৫ বলে ৫৮ এবং মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের ব্যাট থেকে এসেছে ৫৩ রান। এছাড়া সৌম্য সরকার করেছেন ৪৭।

জয়ের জন্য প্রয়োজন ৩৩৫ রান! স্কোর দেখেই শুরুতে চক্ষুচড়কগাছ হওয়ার কথা যে কারও; তার ওপর ইনিংসের প্রথম বলে বিনুরা ফার্নান্দোর বলে উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসলেন ইমরুল কায়েস; তবে কলম্বো ক্রিকেট ক্লাব মাঠের উইকেটে যে পুরোপুরি রানের ঝর্নাধারা প্রবাহিত হয়, তা বাংলাদেশের ব্যাটিং দেখেই বোঝা গেল। যদিও শেষ পর্যন্ত মাত্র ২ রানে হারতে হলো বাংলাদেশকে।

নিশ্চিত জয়ের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়েছিল বাংলাদেশ। দুর্ভাগ্য খেলা শেষ হওয়ার ৯ বল আগেই মাশরাফি আউট হয়ে গিয়েছিলেন। মধুশাঙ্কার বলে থিসারা পেরেরার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান তিনি। ৩৫ বলে খেলা ৫৮ রানের ইনিংসটি সাজিয়েছিলেন ৪টি করে বাউন্ডারি এবং ছক্কা দিয়ে।

৩৫৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে প্রথম বলেই ইমরুল কায়েসকে হারিয়ে কিছুটা ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। তবে দ্বিতীয় উইকেটে সৌম্য আর সাব্বির মিলে ১১৬ রানের জুটি গড়ে বাংলাদেশকে ভালো সূচনা এনে দেন। যদিও ৪৭ রান করে সৌম্য আউট হলে অসাধারণ জুটিটা ভেঙে যায়। মুশফিককে সঙ্গে নিয়ে সাব্বির জুটি বাঁধেন। কিন্তু সেটা খুব বেশি দূর এগোয়নি। দলীয় ১২৪ রানের মাথায় ফিরে যান সাব্বির, ৬৩ বলে ৭২ রান করে। তার ইনিংসে ছিল ১১টি বাউন্ডারি এবং ১টি ছক্কার মার।

Advertisement

২৩ বলে ২০ রান করে আউট হয়ে যান মুশফিকুর রহীম। এরপর মোসাদ্দেক আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ মিলে ৬৬ রানের জুটি গড়েন। এরই মধ্যে ৫০ বলে ৫৩ রান করেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। তিনি আউট হলে উইকেটে নামেন শুভাগত হোম। মাত্র ২ রান করে ফিরে যান শুভাগত। এরপর মাঠে আসেন সানজামুল ইসলাম। ৮ বল খেলে তিনি করেন মাত্র ৫ রান।

এরপর মাশরাফি মাঠে নেমে জুটি বাঁধেন মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে। ১০১ রানের জুটি গড়েন এ দুজন। এরই মধ্যে ঝড়ো ব্যাট করে ২৮ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করে ফেলেন মাশরাফি। শেষ পর্যন্ত ৩৫ বলে ৫৮ রান করে আউট হন তিনি। মাশরাফি আউট হওয়ার পরই মূলত বাংলাদেশ হেরে যায়। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ৬৮ বলে ৭১ রানে অপরাজিত থাকলেও সেটা পরাজয় ঠেকাতে পারেনি।আইএইচএস