ঝালকাঠির সুগন্ধা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন থামছেই না। প্রায় সারাবছর ধরে বেপরোয়াভাবে বালু উত্তোলনের ফলে সুগন্ধা তীরবর্তী ঝালকাঠি-নলছিটি এলাকার একাধিক গ্রামে নদী ভাঙন ক্রমশই বাড়ছে।
Advertisement
তবে সুগন্ধার বালু উত্তোলন ও এর প্রভাব নিয়ে কোনো মাথাব্যথা ও উদ্যোগ নেই প্রশাসনের। ভাঙন প্রতিরোধে কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় বর্তমানে হুমকির মুখে ঝালকাঠি শহর রক্ষা বাঁধসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম।
ঝালকাঠি জেলা প্রশাসনের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, জেলায় কোনো অবৈধ বালুমহল নেই। অথচ প্রকাশ্যেই বালু ব্যবসায়ীরা সুগন্ধার বুক থেকে অব্যাহতভাবে বালু উত্তোলন করছেন।
অভিযোগ রয়েছে, সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ড্রেজার ও শ্যালো মেশিনের সাহায্যে নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে। কিন্তু জেলা প্রশাসন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও পানি উন্নয়ন বিভাগ এ ক্ষেত্রে নির্বিকার ভূমিকা পালন করছে।
Advertisement
অপরিকল্পিতভাবে এ বালু উত্তোলন করায় ঝালকাঠি শহর রক্ষা বাঁধ, নলছিটির বাড়ৈ বাড়ি ইট ভাটাসহ কয়েকটি গ্রাম, ঝালকাঠির তৈল ডিপো এলাকা, পুরাতন কলেজ এলাকা, ভাবানীপুর, কিস্তাকাঠি, তোতা ফকিরের মাজার এলাকা, নাপ্তের হাট, দিয়াকুল গ্রাম ভয়াবহ নদী ভাঙনে হুমকির মুখে পড়েছে। ইতোমধ্যে এসব এলাকার কয়েকশ’ একর আবাদি জমি ও বসতি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বালু উত্তোলনকারী ড্রেজারের একাধিক কর্মচারী জাগো নিউজকে জানান, সুগন্ধা নদী থেকে দিনরাত ৪/৫টি ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের কাজ চলে। এতে দৈনিক গড়ে একশ’ জাহাজ বালু উত্তোলন করা হয়। জেলার ক্ষমতাসীন দলের এক নেতা ও জেলা প্রশাসন, থানা, গোয়েন্দা বিভাগ এবং সাংবাদিকদের নামে ড্রেজার মালিকদের কাছ থেকে ড্রেজার প্রতি প্রতিদিন দুই হাজার টাকা করে নেয়া হয় বলেও তারা জানান।
শহর রক্ষাবাধ সংলগ্ন লঞ্চঘাট এলাকার বাসিন্দা ও স্থানীয় কাউন্সিলর রফিকুল ইসলাম একাধিকবার অবৈধ ড্রেজার মালিকদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাননি বলে অভিযোগ করেন। ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক বরাবরে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ, ডেজার আটক এবং মালিকদের আইনের আওতায় আনতে তিনি আবেদন করেছেন বলে জানান।
এ বিষয়ে ঝালকাঠির জেলা প্রশাসক মো. মিজানুল হক চৌধুরী বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Advertisement
এসআর/আরআইপি