দেশজুড়ে

জলকেলিতে স্নিগ্ধ রাখাইন

কক্সবাজারের রাখাইন সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহি জলকেলি উৎসবের শুরুতে জলে জলে স্নিগ্ধ হয়েছেন সকল বয়সের মানুষ। তাদের স্নিগ্ধতার এ উৎসব ঘিরে ভিড় করেছিল সকল সম্প্রদায়ের মানুষ। একে অপরকে পানি নিক্ষেপ করে এ উৎসব পালন করার পাশাপাশি চলে তাদের নিজেদের তৈরী একটি বিশেষ পানি ও নানা খাবার খাওয়া। শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া এ উৎসব চলবে আগামী রোববার পর্যন্ত। আদিবাসি সম্প্রদায়ের নেতা মংথা রাখাইন জানান, রাখাইন বর্ষ পঞ্জিকা অনুসারে ১৩৭৬ মগীসন বা রাখাইন বর্ষ শেষ হয়েছে ১৬ এপ্রিল। ১৭ এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে রাখাইনদের নববর্ষ ১৩৭৭ সাল। রাখাইনদের ভাষায় `সাংগ্রেং পোওয়ে` বা বর্ষবরণ উৎসব শুরু হয়েছে ১৩ এপ্রিল থেকে। শেষ তিন দিন হচ্ছে এ জলকেলি উৎসব।তিনি জানান, বর্ষবরণ ও বর্ষ বিদায় নিয়ে মূলত অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে ১৩ এপ্রিল থেকে। ১৩ এপ্রিল থেকে ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত নানা অনুষ্ঠান চলে। আর চূড়ান্ত বা মুল আকর্ষণ হচ্ছে জলকেলি। যা শেষ ৩ দিন পালন করা হয়।শুক্রবার সকালে রাখাইন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, তারা এলাকাভিত্তিক শোভযাত্রা বের করেছে। এক ঘন্টা বাদক বিশেষ ঘন্টা বাজিয়ে কিয়াং সহ প্যান্ডেল পরিদর্শন, তরুণরা মাটির তৈরী কলসী ও পেছনে বয়স্ক নারী-পুরুষ ‘কল্প তরু’ বহনসহ নানা কর্মসূচী পালন করে এ শোভযাত্রা শেষ করা হয়। তারপর শুরু হয় ঐতিহ্যবাহি জলকেলি। রাখাইন সম্প্রদায়ের ভাষায় যার নাম ‘সাংগ্রেং পোয়ে’।ওখানে গিয়ে দেখা যায়, এলাকা ভিত্তিক প্যান্ডেলে পানি ভর্তি ড্রাম নিয়ে অপেক্ষা করছেন তরুণীরা। শোভযাত্রা নিয়ে গান ও নেচে প্যান্ডেলে গিয়ে তরুণরা ভিড় করেন। প্রথমে তরুণরা তার পছন্দের তরুণীকে লক্ষ্য করে ইশারা ইঙ্গিতে কথা বলেন। তারপর কাছাকাছি এসে একে-অপরের মাথায় পানি ঢেলে দেন। তারপর একে অপরকে লক্ষ্য করে নিক্ষেপ করতে থাকতে পানি।রাখাইন তরুণী লাবন্য রাখাইন জাগো নিউজকে জানান, জলের শুভ্রতা নিয়ে স্নিগ্ধ হওয়ার অন্য রকম প্রয়াস এটি। কোন ধর্মীয় রীতি নয়, সামাজিক রীতি মতেই রাখাইন নববর্ষ বরণের অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে কক্সবাজারের রাখাইনরা একে-অপরকে পানি নিক্ষেপ করার খেলায় মেতে উঠে। রাখাইন সম্প্রদায়ের `সাংগ্রেং পোয়ে` বা `জলকেলি` উৎসব হিসেবে পরিচিত এ অনুষ্ঠানকে ঘিরে কক্সবাজারের রাখাইন পল্লীতে চলছে ভিন্ন আবহ। রাখাইন সম্প্রদায়ের মানুষের পাশাপাশি স্থানীয় লোকজন, পর্যটক ও বিদেশিদের পদভারে মুখরিত হয়েছে পল্লী। এছাড়া বিদেশি পর্যটকদের রাখাইনদের সাথে নাচ-গানে মাতোয়ারার দৃশ্য দেখে বিমোহিত হয়েছেন সকলেই। এমজেড/পিআর

Advertisement