মতামত

উন্নয়নের ভোগান্তি

উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে লোকজনের খুশি হওয়ার কথা। কিন্তু কিছু উন্নয়ন প্রকল্প এত ধীর গতিতে হচ্ছে যে তাতে জনভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে। এতে যার পর নাই মানুষজন বিরক্ত। এ অবস্থায় প্রশ্ন উঠেছে সারাবছর ধরেই যদি উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চলে তাহলে লোকজন এর সুফল পাবে কখন?

Advertisement

চলতি বছর রাজধানীতে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ চলছে। পানি নিষ্কাশনের জন্য ড্রেনেজ নির্মাণ, ফুটপাতের উন্নয়ন কাজ, স্যুয়ারেজ লাইন, সড়ক সংস্কার, ওয়াসা, ডেসা ও তিতাসের সংযোগ লাইন স্থাপনসহ বিভিন্ন কারণে নগরীর সড়কগুলোতে খোঁড়াখুঁড়ি চলছে। যে কারণে সড়কের খোঁড়া মাটি পানির সঙ্গে মিশে দুর্ভোগের সৃষ্টি হচ্ছে।

অন্যদিকে ফ্লাইওভার, মেট্রোরেলসহ আরও বিভিন্ন সংস্থার উন্নয়ন কাজ চলছে। সড়কগুলো কেটে ফেলায় ভোগান্তির মাত্রা কয়েকগুণ বেড়েছে। বৃষ্টির কারণে নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডের অলিগলিতে পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এসব সড়ক দিয়ে পথচারীদের চলাচলে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। উঁচু-নিচু সড়ক দিয়ে যানবাহনের চাকার সঙ্গে কাদা-মাটির ছিটা পথচারীদের জামাকাপড় ও আশপাশের দোকানগুলোতে গিয়ে পড়ছে।

উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চললে তাতে সাময়িক ভোগান্তি হবে এটাই স্বাভাবিক। মানুষজন এটা মেনেও নেয়। কিন্তু এটা যখন বছরের পর বছর ধরে চলে  তখনই তা সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে যায়। মগবাজার ফ্লাইওভারের কাজ চলছে দীর্ঘদিন। কয়েকবার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে প্রকল্পের। এতে প্রকল্পের ব্যয়ও বেড়েছে। তাছাড়া ফ্লাইওভারের নিচেই নির্মাণ সরঞ্জামাদি স্তূপ করে রাখায় সীমাহীন দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে লোকজনকে। এছাড়া ওয়াসা, ডেসা ও তিতাসের উন্নয়ন কাজের সাথে কোনো সমন্বয় না থাকায় সারাবছর ধরেই চলছে খোঁড়াখুঁড়ি। এক সংস্থার কাজ শেষ হয় তো আরেক সংস্থা শুরু করে। এভাবে শুধু জনভোগান্তিই হয় না রাষ্ট্রীয় কোষাগারের অর্থের শ্রাদ্ধও হয়।

Advertisement

এমনিতেই বাস-অযোগ্য তালিকায় বার বার উঠে আসছে রাজধানী ঢাকার নাম। তারওপর সারাবছর ধরে উন্নয়ন কাজের নামে খোঁড়াখুঁড়ি চলতে থাকায় পরিস্থিতিকে তা আরও নাজুক করে তুলছে। রোদ থাকলে ধুলা আর একটু বৃষ্টি হলেই কাদা। দেখা দেয় জলাবদ্ধতাও। বর্ষা মৌসুম এলে পরিস্থিতি যে কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে সেটি বলাই বাহুল্য। যানজট, ধুলো দূষণে নগরবাসী এমনিতেই অতিষ্ঠ। এখন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কারণে তাদের ভোগান্তি যেন চরমে না পৌঁছে সেটি নিশ্চিত করতে হবে যে কোনো মূল্যে।

এইচআর/জেআইএম