আগামী শিক্ষাবর্ষের জন্য ৩৬ কোটি ২১ লাখ ৮২ হাজার বিনামূল্যের পাঠ্যবই ছাপানো হবে। ইতোমধ্যে এই বই ছাপার জন্য সব ধরনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)।
Advertisement
এছাড়া আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকেই প্রথমবারের মতো নবম শ্রেণির সাধারণ বিজ্ঞান, পর্দাথ, রসায়ন ও জীববিজ্ঞান এই চারটি বই সম্পূর্ণ রঙিন করে ছাপানো হবে। শিক্ষাবিদ ড. জাফর ইকবালেল পরামর্শে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে এনসিটিবি সূত্রে জানা গেছে।
এনসিটিবির সূত্র জানায়, ২০১৮ শিক্ষাবর্ষের প্রাক-প্রাথমিক, প্রাক-প্রাথমিকের পাঁচটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ভাষার বই, প্রাথমিক (বাংলা ও ইংরেজি ভার্সন), মাধ্যমিক (বাংলা ও ইংরেজি ভার্সন), ইবতেদায়ি ও দাখিল, কারিগরি, দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য ব্রেইল বই, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষক নির্দেশিকা ছাপানো হবে।
আগামী শিক্ষাবর্ষে চার কোটি ২১ লাখ শিক্ষার্থীর মাঝে বই বিতরণ করা হবে। এর মধ্যে প্রাথমিক (বাংলা ও ইংরেজি ভার্সন) স্তরের দুই কোটি এক লাখ ৬৮ হাজার ৩৬৬ জন শিক্ষার্থীর জন্য ৩৩টি বিষয়ের ১০ কোটি ২২ লাখ ২৭ হাজার ১১টি বই ছাপানো হবে।
Advertisement
এছাড়া মাধ্যমিক (বাংলা ও ইংরেজি ভার্সন) স্তরের এক কোটি ২৭ লাখ ৪৫ হাজার ৯৩ জন শিক্ষার্থীর ১১৪টি বিষয়ের জন্য ১৭ কোটি ৮৯ লাখ ২৩ হাজার ৭৩৩টি বই ছাপানো হবে। ইবতেদায়ি ও দাখিল ৫৪ লাখ ৩ হাজার ৪৬৯ জন শিক্ষার্থীর ১২৪টি বিষয়ের জন্য ৫ কোটি ৭৮ লাখ ৫৮ হাজার ৮২৯টি বই ছাপানো হবে।
এনসিটিবির সদস্য (পাঠ্যপুস্তক) মিয়া ইনামুল হক রতন সিদ্দিকী বলেন, মাধ্যমিক পর্যায়ে সাধারণ বিজ্ঞান, পদার্থ, রসায়ন ও জীববিজ্ঞান এই চারটি বইয়ের ভেতরে সব পাতা রঙিন করে ছাপা হবে। এই চারটি বইয়ের টেন্ডার পরবর্তীতে দেয়া হবে। কারণ রঙিন হওয়ার কারণে খরচ বেশি হবে। সেজন্য আপাতত এই চারটি বইয়ের টেন্ডার দেয়া হচ্ছে না। হিসাব করে তা পরবর্তীতে দেয়া হবে।
এনসিটিবির কর্মকর্তারা জানান, শিক্ষাবিদ ড. জাফর ইকবাল বিজ্ঞানের এই চারটি বই রঙিন করে ছাপানোর পরামর্শ দিয়েছেন। কারণ হিসেবে তারা জানান, বিজ্ঞান বইয়ে বিভিন্ন ধরনের চিত্র দেখে পড়তে হয় শিক্ষার্থীদের। সাদা-কালো পেপারে ছাপার কারণে অনেক সময় তা বুঝতে সমস্যা হয় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের। এজন্য এই চারটি বই রঙিন করে ছাপানোর পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। তার পরামর্শ গ্রহণ করে এনসিটিবি আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে বই চারটি রঙিন করে ছাপানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এ ব্যাপারে এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র সাহা বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ের পুরোপুরি হিসাব আমরা পেয়েছি। তবে মাধ্যমিক, কারিগরি পর্যায়ে বইয়ের চাহিদার সমন্বিত হিসাব আমরা পায়নি। সেজন্য আমরা নিজেরাই হিসাব করে আগামী শিক্ষাবর্ষের জন্য ৩৬ কোটি ২১ লাখের বেশি বই ছাপানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা সেইভাবে টেন্ডার আহ্বানসহ অন্যান্য প্রক্রিয়া শুরু করেছি। বিজ্ঞানের চারটি বইয়ের টেন্ডার আপাতত বন্ধ রেখেছি। বইগুলো যেহেতু রঙিন হবে, তাই তার হিসাব করে পরে টেন্ডার দিতে হবে।
Advertisement
এনসিটিবির অপর সূত্র জানায়, অন্যান্য বছর প্রকৃত সংখ্যা দিয়েই টেন্ডার আহ্বান করা হলেও এবার পাঁচ ভাগ বই হ্রাস বা বৃদ্ধি পেতে পারে এমন শর্ত দিয়ে টেন্ডার আহ্বান করা হচ্ছে। কারণ মাঠ পর্যায় থেকে প্রকৃত সংখ্যার তথ্য দেয়া হয়নি। এছাড়া কারিগরি ও ব্রেইল শিক্ষার্থীর জন্য কত বই লাগবে তার চাহিদা ২০ মার্চ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
এমএইচএম/জেডএ/এসআর/জেআইএম