খেলাধুলা

চান্দিমালকে দেখেও শেখে না সাকিব-তামিমরা!

‘আচ্ছা বলতে পারো তোমাদের ব্যাটসম্যানরা এমন কেন? টেস্টে কেউ এমন বেপরোয়া ব্যাট চালায়? তোমাদের সামনে তো চান্দিমালের আদর্শ টেস্ট ইনিংস ছিল। লম্বা সময় কিভাবে উইকেটে কাটাতে হয়, দলের বিপদে কিভাবে উইকেট আগলে দাঁতে দাঁত কামড়ে পড়ে থাকতে হয় তা তো চান্দিমাল দেখিয়ে গেলো। কই তা দেখেও শিখলো না তোমাদের ব্যাটসম্যানরা? এক লঙ্কান সাংবাদিক বন্ধুর প্রশ্ন। আজ দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে প্রেস কনফারেন্সে যাবার পথে ওই সাংবাদিকের প্রশ্নটা তাৎক্ষণিকভাবে কাঁটার মত বিধলো; কিন্তু ওই লঙ্কান সাংবাদিকের কথাই যেন প্রতিধ্বনিত হলো প্রেস কনফারেন্সে। দ্বিতীয় দিন শেষ বিকেলে সৌম্য, ইমরুল, সাব্বির ও সাকিবের বলগাহীন-দায়িত্তহীন ব্যাটিং নিয়ে ঠিক অনেক কথা হলো। টাইগারদের ব্যাটিং কোচ থিলান সামারাবিরা ও লঙ্কান সেঞ্চুরিয়ান দিনেশ চান্দিমালও বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের অতিমাত্রায় শটস খেলা দেখে খানিক বিস্ময় প্রকাশ করলেন, তখন আর সে লঙ্কান সাংবাদিক বন্ধুর কথা গায়ে জ্বালা ধরালো না। বরং মনে হলো, ভদ্রলোক তো মিথ্যে বলেননি। সত্যিই তো, বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা কি সত্যিকার ‘টেস্ট ব্যাটিং’ করেন? টেস্ট যে পাঁচদিনের খেলা। এখানে ধৈর্য্য-সংযম, মনোযোগ-মনোসংযোগ এবং পরিবেশ-পরিস্থিতি বুঝে বলের মেধা ও গুনাগুণ বিচার করে খেলাই আসল কথা। সে উপলব্ধি কি তাদের আছে?বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের এই উচ্চভিলাষী ও অতিমাত্রায় আক্রমনাত্মক-চটকদার শট খেলতে গিয়ে অকাতরে উইকেট দিয়ে দলের বিপর্যয় ডেকে আনার পর আরও একটা প্রশ্ন জাগে- ‘মানুষ না কি ঠেকে শেখে। দেখেও শেখে। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা কি ঠেকে কিংবা দেখেও শেখেন না?’ সত্যিই যদি তারা ভুল থেকে শিক্ষা নিতেন, তাহলে নিশ্চয়ই একই ভুল বারবার হতো না। আর দেখেইবা শিখলেন কোথায়? তাদের চোখের সামনে চান্দিমাল কী দায়িত্বশীল ব্যাটিংটাই না করলেন। কিভাবে বিপদে একদিক আগলে রাখতে হয়। উইকেট অক্ষত রাখতে কি কৌশল অবলম্বন দরকার, অ্যাপ্রোচ এবং অ্যাপ্লিকেশনটাই বা কেমন হওয়া উচিৎ- চান্দিমাল চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন। চান্দিমাল কি শটস খেলদে পারেন না। খুব পারেন। শতরানের পর যখন দেখলেন, অধিনায়ক হেরাথ আউট, সঙ্গী দুজন ব্যাটিং পারে না। তখন ঠিক অ্যাপ্রোচ পাল্টে খোলস ছেড়ে বেড়িয়ে এসে সাকিব, মিরাজ সবাইকে হাত খুলে মারলেন। কিন্তু বাংলাদেশের প্রথম সারির ব্যাটসম্যানরা চান্দিমালের পথে হাঁটলেন না। হাঁটার চেষ্টাও করলেন না। পাঁচ দিনের ক্রিকেটে অনেক বড় ব্যাটসম্যানও পড়ন্ত বিকেলে নিজের স্বভাবজাত খেলা বাদ দিয়ে সতর্ক-সাবধানি হয়ে ওঠেন।  জানেন, এখন মনগড়া কিছু করতে যাবার অর্থ মরন ডেকে আনা; কিন্তু বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদেও অভিধানে হয়ত সতর্ক ও সাবধান হয়ে খেলার বিষয়টা নেই। তাই তো পড়ন্ত বিকেলে ইমরুল কায়েস, সাব্বির রহমান রুম্মন আর সাকিব আল হাসানদেও ইচ্ছেমত ফ্রি স্ট্রোক খেলার মহড়া। আর তাতেই একটা সুন্দর ও উজ্জ্বল দিনের খারাপ-অনুজ্জ্বল সমাপ্তি। .এআরবি/আইএইচএস/জেআইএম

Advertisement