ইনিংসের সূচনাটা দুর্দান্ত করেছিল বাংলাদেশের দুই ওপেনার। ওপেনিং জুটিতেই উঠলো ৯৫ রান। দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকারের ব্যাটিং দেখে মনে হচ্ছিলো এ উইকেটে ব্যাটিং যেন হাতের মোয়া। মারবেন আর রান করবেন; কিন্তু টেস্ট ক্রিকেটে যে অতিরিক্ত আগ্রাসী ব্যাটিং দুর্দশাই এনে দেয় তা ভুলে গিয়েছেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। ফলে ১৯৮ রান তুলতেই ৫ উইকেট হারিয়ে বসে সফরকারীরা। দিনের শেষ প্রান্তে এসে খামখেয়ালি ব্যাটিং করে ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনেন ব্যাটসম্যানরা। মাত্র ৬ রানের ব্যবধানে বাংলাদেশ হারায় ৩টি উইকেট।১ উইকেটে ১৩০ থেকে দুই উইকেটে ১৯২। এরপর ৫ উইকেটে ১৯৮ রান। ইমরুল-সাব্বিরের ৬২ রানের জুটি যেন বাংলাদেশকে বড় স্কোরের স্বপ্ন দেখাতে শুরু করে দিয়েছিল। এ সময় এসেই ভুলটা করে বসেন ইমরুল কায়েস। লক্ষ্মণ সান্দাকানের ঘূর্ণি বুঝতে না পেরে উইকেট বিলিয়ে দিলেন। এরপর নাইটওয়াচম্যান হিসেবে মাঠে নামা তাইজুল ইসলাম এলবিডব্লিউর শিকার হলেন। এরপর আউট হলেন ওয়ানডে স্টাইলে ব্যাটিং করতে থাকা সাব্বির রহমমানও। দলের ড্যাসিং ওপেনার সৌম্য সরকারই ছিলেন এদিন ব্যতিক্রম। ১২১ বলে ৬১ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। এছাড়া দলের বাকি ব্যাটসম্যানরা নেমেছিলেন উইকেট বিলিয়ে দেওয়ার প্রতিযোগিতায়। শুরুটা করেন তামিম ইকবাল। হাফসেঞ্চুরি থেকে ১ রান দূরে থাকতে হেরাথের বল লেগে ঘুরাতে গিয়ে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন তামিম। যদিও প্রথমে আম্পায়ার আউট দেননি। তবে রিভিউতে সিদ্ধান্ত লঙ্কানদের পক্ষেই যায়।তামিমের বিদায়ের পর উইকেটে নামেন ইমরুল কায়েস। কিছুটা ধীর গতিত ব্যাটিং করলেও তিনিও বিলিয়ে আসেন নিজের উইকেট। তবে তার আগে সান্দাকানের রঙ ওয়ান (গুগলি) বুঝতে না পেরে বোল্ড হয়ে যান সৌম্য। সৌম্যর বিদায়ের কিছুক্ষণ পরই অবশ্য ফিরতে পারতেন ইমরুল। ডিপ স্কোয়ার লেগে তার হাওয়ায় ভাসানো সহজ ক্যাচ ফেলে দেন দিনেশ চান্দিমাল। তবে এর পাঁচ ওভার পড়েই সান্দাকানের রঙ ওয়ান বল লেগে ঘুরাতে গিয়ে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন ইমরুল। ৭৮ বলে ৩৪ রান করেন তিনি।ইমরুলের বিদায়ের পর নাইটওয়াচম্যান হিসেবে ব্যাটিংয়ে নেমেছিলেন তাইজুল ইসলাম। তবে টিকতে পারেননি এক বলও। প্রথম বলেই এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন তিনিও। এবারও প্রথমে আউট দেননি আম্পায়ার। ভাগ্য লঙ্কানদের পক্ষেই ছিল। রিভিউতে আরও একবার সাফল্য পায় দলটি।দুই বলে দুই উইকেট হারিয়েও থামেনি টাইগারদের আগ্রাসী ব্যাটিং। উল্টো আরও বেশি আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন তারা। ফলে দলের রান আর ৬ যোগ করতে না করতেই হারাতে হয় সাব্বিরকে। তার আগ্রাসী ব্যাটিং দেখেই লেগ গালিতে ফিল্ডার নিয়ে শর্ট বল করতে থাকেন সুরঙ্গা লাকমল। সুতরাং, চতুর্থ বলেই পান সফলতা। লেগ গালিতেই ধনঞ্জয় ডি সিলভার হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে আসেন এ ড্যাসিং ব্যাটসম্যান। আউট হওয়ার আগে ৫৪ বলে ৫টি চারে খেলেন ৪২ রানের ইনিংস।সাব্বিরের বিদায়ের পর আরও এক কাঠি বেশি সরেস ছিলেন সাকিব আল হাসান। তাকে দেখে মনে হচ্ছিল ‘পিপিলিকার পাখা গজায় মরিবার তরে’। সাব্বির-তামিমরা ব্যাটিং করেছিলেন ওয়ানডে মেজাজে। আর সাকিব ব্যাটিং করেন টি-টোয়েন্টি মেজাজে। প্রথম তিন বলেই ২টি চারে করেন ১১ রান। দিন শেষ হওয়ার আগে ৮ বলে করেন ১৮ রান। তবে এর মাঝে পেয়েছেন সহজ একটি জীবন। সান্দাকানের বলে বাউন্ডারি লাইনে সহজ ক্যাচ ছেড়ে দেন উপুল থারাঙ্গা। নতুবা বাংলাদেশের উইকেট ৫ এর জায়গায় থাকতো ৬।আরটি/আইএইচএস/জেআইএম
Advertisement