শততম টেস্ট শুরুর ২৪ ঘণ্টা আগে পি সারা স্টেডিয়ামে জনাকীর্ণ সংবাদ সন্মেলনে মুশফিক জানিয়ে দিলেন, বিকেএসপিতে পড়া অবস্থায় অভিষেক টেস্ট দেখেই ভবিষ্যতে টেস্ট ক্রিকেটার হবার স্বপ্ন জেগেছিল মনে। তাই তো মুখে এমন কথা, ২০০০ সালে বাংলাদেশ যখন টেস্ট স্ট্যাটাস পায়, আমি তখন বিকেএসপিতে পড়ি। ক্লাস সেভেনে। সেখানে বসেই টিভিতে খেলা দেখেছিলাম। এগুলো কিছু মনে আছে। বিশ্বাসটা ওখান থেকে জন্ম নিয়েছিলো। মনে হয়েছিলো বাংলাদেশের হয়ে কোনদিন টেস্ট খেলতে পারলে ভালো হবে। স্বপ্নটা তখন থেকেই।’ স্বপ্ন আজ স্বার্থক। ২০০০ সালে টেস্ট অভিষেক টিভিতে দেখা মুশফিকের নেতৃত্বে ১৭ বছর পর ১০০ নম্বর টেস্ট খেলতে নামবে বাংলাদেশ। অপেক্ষার প্রহর গুণে আগামীকাল সকালে পি সারা স্টেডিয়ামে রঙ্গনা হেরাথের সঙ্গে টস করতে নামবেন টাইগার অধিনায়ক।কেমন লাগছে? শততম টেস্টের অনভূতি কেমন? মুশফিকের মুখ থেকেই শোনা যাক `এটা অনেক বড় একটা দিন। বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য ঐতিহাসিক মুহূর্ত। অধিনায়ক হিসেবে এই ম্যাচ খেলতে পারলে এটা আমার জন্য বিরাট ব্যাপার হবে।’ শুরুর পর থেকে ৯৯ টেস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশের পারফরমেন্স ও উন্নতি কেমন? সন্তোষজনক? মুশফিকের তা মনে হয় না। তাই তো মুখে এমন কথা, ‘গত ১৭ বছরে বাংলাদেশ ক্রিকেট যতদূর এগিয়ে যাওয়ার কথা ছিল, ততটুকু হয়তো পারেনি। আমাদের আগে যারা খেলেছেন, তাদের মতো অর্জন করতে পারিনি।’ তবে মুশফিকের ধারণা, বাংলাদেশ টেস্টেও ভালো করার পথ খুঁজে পেয়েছে। তারপরের কথায় মিললো তারই আশ্বাস। ‘আমার মনে হয়, গত দুই আড়াই বছর ধরে আমরা যেভাবে ক্রিকেট খেলছি, সেভাবে খেলতে পারলে আমরা বহুদূর যেতে পারবো। এ বছর আমাদের অনেক টেস্ট থাকলেও অন্যান্য সময় অনেক দিন পরপর, ছয় মাস আট মাস বা এক বছর পরপর আমাদের টেস্ট খেলতে হয়। এটা যে কোনো দলের জন্য কঠিন হয়ে যায়। এ বছর পুরোটা ভালোভাবে খেলতে পারলে ভবিষ্যতে আমরা দল হিসেবে আরো ভালো পারফর্ম করতে পারবো।’ শততম টেস্ট-সবার দৃষ্টি এ ম্যাচের দিকে। সারা বছর সে অর্থে ক্রিকেটের খুঁটিনাটি খোঁজ খবর রাখেন না, এমন মানুষও শততম টেস্ট নিয়ে খানিক উৎসাহী। দেশে সাজ সাজ রব। একটা উৎসবমুখর পরিবেশ। বোর্ড কর্তাদের একটা বড় অংশ চলে এসেছেন এ ম্যাচ দেখতে। মিডিয়া কাভারেজও অন্য আট দশটা টেস্টের তুলনায় বেশি। এই যে ভক্ত-সমর্থক ও শুভানুধ্যায়ীদের রাজ্যের উৎসাহ-আগ্রহ আর উদ্দীপনা । এটা আবার বাড়তি চাপ হয়ে দেখা দিবে না তো? মুশফিক তা মনে করেন না। মনের গহীনে সযত্নে একটা অন্য রকম স্বপ্ন আছে তার। এ স্বপ্ন গলের দুঃস্বপ্ন কাটিয়ে ওঠার, এ স্বপ্ন পাঁচদিন ধারাবাহিকভাবে ভালো খেলার। মানে শততম টেস্ট জয়ের আকঙ্খাও প্রবল। তাই তো চাপের কথা অস্বীকার করে ভালো করার প্রত্যয় ‘না, সে রকম না। প্রত্যাশার চাপ থাকে সব সময়ই। প্রতিটি টেস্টে প্রত্যাশাও থাকে। আল্লাহর রহমতে বাংলাদেশ এখন এমন একটা জায়গায় এসেছে যে, টেস্ট বা ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি যাই হোক, সবাই আশা করে যে বাংলাদেশ যে কোনো ম্যাচ জিততে পারে। তো এটাই একটা বড় অর্জন। সেই প্রত্যাশা থেকেই খেলোয়াড়রা অনুপ্রাণিত হয় এবং মাঠে গিয়ে পারফর্ম করতে মুখিয়ে থাকে। হয়তো গলে শেষ টেস্টে ফল ভালো হয়নি। তবে অবশ্যই আমাদের চেষ্টা থাকবে ভাল কিছু করার। আমরা যেন পাঁচদিন ধারাবাহিকভাবে ভালো খেলতে পারি, শততম টেস্টে যাতে জয় নিয়ে ফিরতে পারি। সেটাই থাকবে প্রধান লক্ষ্য।’ এআরবি/এমআর/আরআইপি
Advertisement