বিশেষ প্রতিবেদন

আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু আ. লীগের

দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আবারও নৌকায় ভোট চাইলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। লক্ষ্মীপুর জেলা স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার আওয়ামী লীগের এক জনসভায় তিনি বলেন, ‘আপনাদের দোয়া চাই, ভালোবাসা চাই। আগামী নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন। নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন তো?’তিনি আরও বলেন, ‘নৌকা হচ্ছে বিপদের প্রতীক। নৌকায় ভোট দিয়েছিলেন বলে সবই পেয়েছেন। আগামীতেও ভোট দেবেন। কারণ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে দেশের মানুষ সুখে-শান্তিতে থাকে।’ এর আগে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি বগুড়ার আদমদীঘির সান্তাহার স্টেডিয়ামে উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘আপনারা যদি সরকারের চলমান উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে চান তাহলে ২০১৯ সালের নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিকে নির্বাচিত করুন। তাহলে আমরা পুনরায় আপনাদের সেবা করার সুযোগ পাব। দেশও উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাবে।’রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জেলা সফরের মধ্য দিয়ে মূলত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি ও প্রচারণা শুরু হয়ে গেল। দলের সভানেত্রী হিসেবে জেলা সফরের মধ্য দিয়ে সরাসরি তিনি জনগণের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতে চাচ্ছেন। একই সঙ্গে সরকারের নেয়া বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড মানুষের কাছে উপস্থাপন করে পুনরায় ক্ষমতায় আসার ইচ্ছা পোষণ করছেন। এছাড়া তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে সম্পর্কটা পুনরায় ঝালাই করে নিচ্ছেন এই জেলা সফরের মধ্য দিয়ে। দলীয় সূত্রে জানা যায়, ২৬ ফেব্রুয়ারি বগুড়া সফরের মধ্য দিয়ে জেলা সফর শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার লক্ষ্মীপুর সফর করেন তিনি। এরপর ২১ মার্চ মাগুরায়, ২৮ মার্চ ফরিদপুর, ১৫ এপ্রিল ঠাকুরগাঁও, ২৩ এপ্রিল বরগুনা এবং ২৯ এপ্রিল চুয়াডাঙ্গা সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী। জেলা সফরকালে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের উদ্বোধন, জঙ্গি-সন্ত্রাসবাদ সম্পর্কে জনগণকে সচেতন এবং তা প্রতিরোধে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করা, তৃণমূল নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করা এবং আগামী নির্বাচনের জন্য নৌকায় ভোট চাইবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ নেতারা জানিয়েছেন, দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জেলা সফরের কারণে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত হচ্ছেন। পাশাপাশি সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সম্পর্কে জনগণ আরও ভালোভাবে জানতে পারছেন। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সফরে সরকারের জনসম্পৃক্ততাও বৃদ্ধি পাচ্ছে।  তারা আরও জানান, প্রধানমন্ত্রী এক বছরে ৬৪টি জেলা সফর করবেন। প্রতি মাসে ছয়টি করে জেলা সফরের পরিকল্পনা রয়েছে নেত্রীর। এসব সফরের মধ্য দিয়ে মূলত আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে।  আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরুল্লাহ এ প্রসঙ্গে জাগো নিউজকে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী দেশের প্রতিটি জেলা সফর করবেন। ইতোমধ্যে অনেকগুলো জেলা সফর করেছেন। প্রত্যেক মাসে প্রায় পাঁচটি করে জেলা কাভার করবেন তিনি। তাহলে ১২ মাসে সবগুলো জেলা কাভার হয়ে যাবে। এটি নির্বাচনের প্রস্তুতিও বলতে পারেন।’তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী কোন জেলা সফরে গেলে প্রত্যেক উপজেলা থেকে নেতাকর্মীরা আসেন। নেত্রীর মুখ থেকে সরাসরি উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সম্পর্কে ভালোভাবে ধারণা পান। নেত্রী তাদের ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা দেন। ফলে তৃণমূল নেতাকর্মীরাও চাঙা হন। নেত্রীর এ সফর আমাদের ও দলের জন্য অনেক বড় অর্জন।’ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুর রহমান বলেন, ‘বিগত আট বছরের উন্নয়ন, দেশের অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির কথা মানুষের সামনে তুলে ধরা এবং মানুষকে বলা- এই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব স্বয়ং নেত্রীই নিয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির পথে যারা বাধা এবং জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠপোষক, জঙ্গির সঙ্গী, জামায়াত-যুদ্ধাপরাধীদের সখী তাদের দেশবিরোধী কর্মকাণ্ড সম্পর্কে জনগণকে সজাগ-সচেতন করছেন।’ ‘তিনি (প্রধানমন্ত্রী) আগামী নির্বাচনে উন্নয়ন-অগ্রগতি-সমৃদ্ধির ধারাকে সমুন্নত রাখতে নৌকা মার্কায় ভোট দিতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছেন। এটি আমাদের নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশও বলতে পারেন’ যোগ করেন আব্দুর রহমান।    এইউএ/এমএআর/আরআইপি

Advertisement